‘‌সিপিএমের মতো ঐতিহাসিক ভুল করবে না তৃণমূল কংগ্রেস’‌, বড় ইঙ্গিত দিলেন কুণাল

দেশের ক্ষমতা কি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর হাতে আসবে?‌ জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে এখন এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে এমনটা যদি ঘটে তাহলে তৃণমূল কংগ্রেস ঐতিহাসিক ভুল করবে না সিপিএমের মতো। সিপিএমের সিদ্ধান্তের জন্যই প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি। তাই তাঁর মুখে একদা শোনা গিয়েছিল, ‘‌ঐতিহাসিক ভুল’‌ কথাটি। তা নিয়ে তৎকালিন সময়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল লাল পার্টির অন্দরে। তবে এমন সুযোগ এলে তৃণমূল কংগ্রেস পিছপা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।

আজ, সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করেন কুণাল ঘোষ। সেখানে দেশের ক্ষমতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে আসতে পারে বলে দাবি করা হয়। আর এই বিষয়টি নিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘জ্যোতি বসুর পার্টির মতো ঐতিহাসিক ভুল তৃণমূল কংগ্রেস করবে না। যদি তার মাঝখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে দিল্লিতে কোনও গুরুদায়িত্ব চলে আসে, তাহলে রাজ্যের দায়িত্ব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নেবেন।’ সাংবাদিক বৈঠক বসে জোর গলায় জানালেন কুণাল ঘোষ। রবিবার দিনই কুণাল দাবি করেন, ২০৩৬ সাল পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর মুখ্যমন্ত্রী হবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০৩৬ সাল পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী থাকলে জ্যোতি বসুর রেকর্ড ভেঙে দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সিপিএমের মতো ঐতিহাসিক ভুল কোনওভাবেই করবে না তৃণমূল কংগ্রেস।

এদিকে বাংলায় ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারের জমানায় বড় সময় জুড়ে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতি বসু। তাঁকে নিয়ে নানা বিতর্ক থাকলেও ক্ষুরধার বুদ্ধি নিয়ে কোনও দ্বিমত কারও নেই। আর তার জেরেই ১৯৯৬ সালে জ্যোতি বসু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনই তাঁকে প্রধানমন্ত্রী করার বিষয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছিল। বিষয়টি অনেকদূর এগিয়েও ছিল। বাংলার মানুষ আশা করতে শুরু করেছিলেন বাঙালি প্রধানমন্ত্রীর। যদিও শেষে সেটা হয়নি। তখন এই সিদ্ধান্তে সায় দেয়নি সিপিএম শীর্ষ নেতৃত্ব বলেই খবর। প্রথম বাঙালি প্রধানমন্ত্রী পাওয়ার স্বপ্ন হাতছাড়া হয় তখনই। কিন্তু কুণাল ঘোষ স্পষ্ট জানান, সেদিনের ‘ঐতিহাসিক ভুলের’ পথে হাঁটবে না তৃণমূল কংগ্রেস।

আরও পড়ুন:‌ দেশের চার রাজ্যের ১৯টি জায়গায় লাগাতার তল্লাশি চালাল এনআইএ, গ্রেফতার ৮ জঙ্গি

অন্যদিকে ইতিমধ্যেই বাঙালিরা ভাবতে শুরু করেছেন বাঙালি মহিলা প্রধানমন্ত্রী পেলে মন্দ হয় না। যিনি জননেত্রীও বটে। এই বিষয়ে কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘‌তৃণমূল কংগ্রেস জ্যোতি বসুর পার্টির মতো ঐতিহাসিক ভুল করবে না। যদি এই দেশকে পরিচালনা করার চ্যালেঞ্জ সামনে আসে, যদি দেশবাসী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী চান, তখন তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। ১৯৯৬ সালে যদি সিপিএম পলিটব্যুরো পালিয়ে না যেত, যদি জ্যোতি বসুকে পরম আক্ষেপ নিয়ে ঐতিহাসিক ভুল বলতে না হতো, তাহলে ১৯৯৬ সালেই জ্যোতি বসু প্রধানমন্ত্রী হতেন এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী হতেন।’‌