Hoogly River Ferry Service: অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে গঙ্গায় লঞ্চ পরিষেবা, আশঙ্কায় কর্মীরা

বন্ধ হয়ে যেতে পারত যে কোনও দিন। আশঙ্কা সত্যি করে বন্ধই হয়ে গেল হুগলি জলপথ নিগমের ফেরি পরিষেবা। মঙ্গলবার থেকে হাওড়া ফেরিঘাট বন্ধ রাখার ঘোষণা করল কর্তৃপক্ষ। আপাতত ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পরিষেবা বন্ধ থাকবে বলে জানানো হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্নীতি ও সংস্থার ভিতরে অরাজকতার জন্য এই পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছেন আধিকারিকরা।

মঙ্গলবার সকালে হাওড়া স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে বাবুঘাটের লঞ্চ ধরতে এসে নাকাল হন বহু যাত্রী। বাসে করে অফিসে পৌঁছতে হয় তাদের। ফেরিঘাটের গেটে নোটিশে লেখা ১৯ – ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পরিষেবা বন্ধ থাকবে। যদিও চূড়ান্ত দুর্নীতি ও অব্যবস্থার জন্যই পরিষেবা বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষক বাধ্য হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চায়নি হুগলি জলপথ নিগম কর্তৃপক্ষ।

তবে সংস্থার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সংস্থার ২৬টি ভেসেলের মধ্যে ১৩টির ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই। বাকি ১৩টি দিয়ে পরিষেবা চালু রেখেছিলেন তাঁরা। সেই ১৩টি ভেসেলের মধ্যে ৬টির ফিটনেসের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে চলতি মাসেই। তখন সংস্থার হাতে থাকবে ৭টি ভেসেল। এই ৭টি ভেসেল দিয়ে পরিষেবা চালু রাখা সম্ভব নয়। তাই ভেসেলের ফিটনেস জোগাড় করাকে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিষেবা বন্ধ রেখেছেন তারা।

সংস্থার সূত্র জানাচ্ছেন, ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধ থাকবে বলে জানানো হলেও ওই দিন পর্যন্ত কতগুলি ভেসেলের ফিটনেস জোগাড় করা গেল তার ওপর নির্ভর করছে ২৫ ডিসেম্বর থেকে লঞ্চ চলবে কি না। কর্মীদের একাংশের আশঙ্কা, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে পরিষেবা। সেক্ষেত্রে বকেয়া বেতন পাওয়ার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন তাঁরা।

সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে ভেসেলের সার্ভে সার্টিফিকেট নিতে গেলে সেগুলি মেরামত করতে ড্রাই ডকে নিতে হবে। সেখানে লঞ্চ প্রতি মেরামতির খরচ ১৫ লাখ টাকা দাঁড়াবে। যা এই মুহূর্তে চরম আর্থিক সঙ্কটে ভুগতে থাকা এই সংস্থার পক্ষে খরচ করা সম্ভব নয়। এই অবস্থায় সরকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিলে অথৈ সংস্থাটি অন্ধকারে ডুবে যাবে বলেই মনে করছেন সংস্থায় কর্মরত কর্মচারীরা। যদিও এই বিষয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি রাজনৈতিক দলগুলি।

চলতি মাসেই হুগলি নদী জলপথ পরিবহন সমিতিতে দুর্নীতি ও যাত্রীদের জীবন ঝুঁকি নিয়ে আনফিট ভেসেল ব্যবহার করে পরিষেবা দেওয়ার অভিযোগের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য কমিটি তৈরি করে রাজ্য প্রশাসন। হুগলি নদী জলপথ পরিবহন সমিতির বিরুদ্ধে একাধিক বেনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। যার মধ্যে অন্যতম ছিল কোনো ফিট সার্টিফিকেট ছাড়াই মেয়াদউত্তীর্ণ ভেসেল ব্যবহার করে যাত্রীদের পরিষেবা দেওয়া। যা যাত্রীদের জীবনের কাছে একটি বড় বিপদ বলেই মনে করা হচ্ছে। পাশপাশি এই সংস্থার কর্মীদের বেতন না হলেও সংস্থার পরিচালনার ক্ষেত্রে আকাশ ছোঁয়া দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। একদা লাভজনক সংস্থা হলেও কয়েক দশক ধরেই এই সংস্থা লোকসানে চলছে।