অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি? কীভাবে এখন থেকেই সাবধান হবেন

বর্তমানে কমবেশি আমরা সবাই সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলিতে আসক্ত। বিশেষ করে করোনা মহামারীর পর থেকে আমাদের সোশ্যাল মিডিয়াতে আসক্তির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। শিশুদের মধ্যেও বৃদ্ধি পেয়েছে এই সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আমরা যেমন চ্যাট বা পোস্ট করতে পারি, সেরকম প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে পৃথিবীতে ঘটতে থাকা খবর সম্পর্কেও আপ-টু-ডেট থাকতে সাহায্য করে এই সব প্ল্যাটফর্মগুলি।

বর্তমানে এই সোশ্যাল মিডিয়ার রমরমা হাওয়ার প্রধান কারণ হল আমাদের মোবাইল ফোন। ফোনের নেট কানেকশন এবং কিছু ক্লিক-এর মাধ্যমেই কারও সঙ্গে চ্যাট বা পোস্ট করা খুব সহজ। জার্মানির ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার হামবুর্গ-এপেনডর্ফ (ইউকেই) এর তথ্য সূত্র অনুযায়ী জার্মানিতে ছয় শতাংশ অর্থাৎ ৬০০,০০০ জন ছেলে ও মেয়ে সোশ্যাল মিডিয়া এবং গেমিংয়ে আসক্ত৷ এই তথ্য অনুযায়ী জার্মানির দুই মিলিয়নেরও বেশি নাবালক-নাবালিকা অ্যাডাল্ট মিডিয়াগুলিতে অনৈতিক ভাবে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছে।

অন্য একটি তথ্যে উঠে এসেছে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রায় দুই ঘন্টা পঁয়তাল্লিশ মিনিট সময় ব্যয় করে থাকে। অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা ইউনিভার্সিটির ইন্টারেক্টিভ কমিউনিকেশনের সহকারী অধ্যাপক টোবিয়াস ডিয়েনলিন একটি সংবাদপত্রে বলেন, ‘আপনি বিভিন্ন উপায়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে পারেন, কিন্তু দিনের শেষে আপনার জীবনে তার প্রভাব কতটা সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ন। যতক্ষণ না এটি আপনার জীবনে সমস্যা তৈরি না করে, ততক্ষণ আপনি বুঝতে পারবেন না যে, আপনিও আসক্ত হয়ে পড়েছেন এই সোশ্যাল মিডিয়ার জালে’।

বর্তমানে সামাজিক মিডিয়া আসক্তির কোনও সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি নেই। অত্যাধিক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার আমাদের চিন্তা শক্তিকে প্রভাবিত করে, শুধু তাই নয় সোশ্যাল মিডিয়ার শেষ বলে কিছু নেই। আপনি যখন একটি বই পড়েন বা কোনও কাজ করেন সেটি একটি সময় পর শেষ হয়ে যায়, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি কাজ করে নিজস্ব অ্যালগরিদম অনুযায়ী। ফলে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি আপনাকে সেই জিনিস দেখবে যা আপনি পছন্দ করেন। ফলস্বরূপ আপনার স্ক্রল করা আর শেষ হয় না।

সোশ্যাল মিডিয়ার যেমন ভালো দিক বিদ্যমান, সেরকম অত্যধিক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার আমাদের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থাকে খারাপ করতে পারে, যেমন অবসাদ বা খাওয়ার অনিচ্ছা। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার অত্যাধিক ব্যবহার আমাদের শারীরিক ক্ষতি সাধনও করে। সোশ্যাল মিডিয়ার পরিমিত ব্যবহার আমাদের এই সব ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে।