Climate Change: ডিসেম্বরেও রীতিমতো গরম! কোথায় পালাল হাড় হিম করা শীত? HT বাংলাকে জানালেন পরিবেশবিদ

পেরিয়ে গেলো বড়দিনও, কিন্তু কোথায় শীত? গরম জামাকাপড় না পড়েও দিব্বি চলছে। কোথায় সেই হাড় হিম করা সকাল! লেপ-কম্বলও বের হয়নি ট্রাঙ্ক বা আলমারি থেকে। বাইরের কাজ সেরে হাঁপিয়ে এসে ঘরে ফিরেই ফ্যানও চালাচ্ছেন অনেকে। রাতে বিছানার পাশে লেপ যেমন কী তেমন পড়ে রয়েছে। এ যেন এক অন্য ডিসেম্বর। শহর জুড়ে শীতের নাম মাত্র নেই। কলকাতার সঙ্গে যেন আড়িভাব খেলায় মজেছে মরশুম। শীত এলেও ঠান্ডা পড়েছে কই?  ডিসেম্বর প্রায় শেষ হতে চললেও ঠান্ডা পড়ছে না কেন? এ বিষয়ে কী বলছেন পরিবেশবিদরা? কেনই বা জাঁকিয়ে শীত পড়েনি এখনও পর্যন্ত। এ প্রসঙ্গে বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন পরিবেশবিদ নব দত্ত।

নব দত্ত

(Hindustan Times)

১) অন্যন্য বছরের তুলনায় এই বছর শীত নেই বললেই চলে? এর কারণ কী কী হতে পারে?

নব দত্তঃ আমরা সবাই জানি যে ক্লাইমেট চেঞ্জ হচ্ছে। বায়ুদূষণ বাড়ছে। গাড়ির দূষণ, নির্মাণ সংক্রান্ত দূষণ এবং ওয়েস্ট বার্নিংয়ের দূষণ ভীষণ ভাবে বাড়ছে। আইন আনলেও এই সমস্ত দূষণ কোনও ভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না। এর প্রভাব মারাত্মক ভাবে পরিবেশে পড়ছে। আমাদের সমাজে এখনও দূষণ নিয়ে সেইরকম কোনও ভাবনা চিন্তা নেই।

শহরাঞ্চলে যদিওবা দূষণ নিয়ে সামান্য ভাবলেও সামগ্রিক ভাবে দূষণের প্রভাব নিয়ে কেউই সেইভাবে চিন্তিত নয়। তাই অনবরত দূষণের প্রভাব প্রকৃতির উপরে পড়ছে। দিনে দিনে আরও বেশি গাছ কাটা চলবে আরও আধুনিক বাড়ি তৈরি হবে এবং প্রকৃতির উপরে এর প্রভাব আরও বেশি মাত্রায় পড়বে।

২) শীত যে পড়ছে না এর ফলে পরিবেশের কী কী ক্ষতি হতে পারে?

নব দত্তঃ সব থেকে বেশি প্রাণীদের ক্ষতি হতে পারে। প্রজনন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। ক্লাইমেট চেঞ্জের ফলে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। জীবজগতের উপরে প্রভাব পড়বে। নিশ্বাসের অসুখ বাড়বে। এবং যতো বেশি স্বাস্থ্যসমস্যা বাড়বে ততো বেশি চিকিৎসা খরচও বাড়বে। লিভার বা ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়বে।

উষ্ণতা বাড়লে জলাশয় শুকিয়ে যাচ্ছে যার ফলে মাছ মরে যাচ্ছে । এর কারণে মৎসজীবীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। কৃষিপণ্য কমে যাচ্ছে। কৃষির উৎপাদন বিপুল হারে কমে যাচ্ছে। বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড কমে যাচ্ছে । এবং এটি শুধু মানুষ নয় সমস্ত প্রাণী গ্রহণ করছেন তাই সবারই স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

খাদ্যশৃঙ্খলও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যে সমস্ত খাবার শীতে পাওয়া যায়। তা পাওয়া যাচ্ছে না। যেমন জানুয়ারি মাস প্রায় চলেই এলো কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাজারে নতুন গুড় আসেনি। তাই খাবারের উপরেও এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।

৩) পরিবেশ দূষণ রোধ করতে সাধারণ মানুষেরও কিছু ভূমিকা থাকে? এক্ষেত্রে আবহাওয়া ঠিক রাখতে ও দূষণ রোধ করতে আমাদের কী কী বিধি নিষেধ মেনে চলা উচিত?

নব দত্তঃ আমরা নিজেরাই নিজেদের প্রচুর পরিমাণে ক্ষতি করেছি। আইন অনুযায়ী আমরা দুটো বালতিতে একটাতে শুকনো ওয়েস্ট এবং ভিজে ওয়েস্ট আলাদা করতে পারি। এ ছাড়া মেডিক্যাল ওয়েস্টের জন্য আলাদা জায়গা করতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় ওয়েস্ট বার্নিং মারাত্মক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। এটি একটি অপরাধ। তাই ওয়েস্ট বার্নিং করার জন্য প্রচেষ্টা করতে হবে। বাড়িতে এয়ার পিউরিফায়ার লাগিয়ে বাইরের বায়ুদূষণ রোধ করা চলবে না। চাইলে বায়ু দূষণ রোধ করার জন্য কিছুটা সময় গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে বা গাড়ির বিকল্প হিসাবে সাইকেল ব্যবহার করতে হবে। সর্বপরি দূষণ রোধ কারও একার পক্ষে সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সরকারকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।