জোকা–তারাতলা মেট্রো‌ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ যাত্রীদের, থমকে যাওয়ার কারণ কী?‌

উদ্বোধন হয়েছিল ঘটা করে। তারপরে বছর ঘুরতে চলল। কিন্তু এগোবার বদলে থমকে গেল জোকা–তারাতলা মেট্রো। তার ফলে এই রুট এখন হয়ে উঠেছে নামকেওয়াস্তে। বেহালা থেকে শুরু হয়ে এই মেট্রোর পরিষেবা জোকা পর্যন্ত যাওয়ার কথা। সেখানে এখন এলাকাতেই সীমাবদ্ধ রইল মেট্রো। ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর হাওড়া–নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সঙ্গেই জোকা থেকে তারাতলার মধ্যে একটি ট্রেন দিয়ে মেট্রো পরিষেবার সূচনা করা হয়েছিল। এমনকী স্বয়ং রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব নিজে সফর করে ওই মেট্রোর উদ্বোধন করেন।

তারপরও কোনও লাভ হল না। এই মেট্রো পরিষেবা বেহালার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার খবর শুনে অনেকেই মনে করে ছিলেন এবার হয়তো ডায়মন্ডহারবার রোডের যানজট এবং অটোর দৌরাত্ম্য থেকে মুক্তি মিলবে। না, সেটা বাস্তবায়িত হল না। মানুষের ভাবনা ভাবনাতেই থেকে গেল। এখন বছর ঘুরতে চলল তবু মেট্রো যাত্রীদের প্রত্যাশা পূর্ণ হল না। দৈনিক যাত্রী সংখ্যাও এক হাজারের নীচে গিয়ে ঠেকছে। যাত্রীদের অভিযোগ, সকালে পরিষেবা মেলে না। আর সন্ধ্যা নামতেই স্টেশনের ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায়। তারাতলা এলাকার বাসিন্দা নির্মল সাহা বলেন, ‘‌মেট্রো একটু এগোলে যাতায়াতের সুবিধা হবে ভেবেছিলাম। কিন্তু কিছুই এগোল না। সেই সরকারি এসি বাসেই বাড়ি ফিরতে হয়। শুধু নামেই রয়েছে জোকা পর্যন্ত মেট্রো।’‌

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে খবর, সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে জোকার দিক থেকে পরিষেবা শুরু হয়। আর বিকেল ৫টায় পরিষেবা শেষ হয়। আবার নানা সরকারি ছুটির দিনে বন্ধ থাকে জোকা–তারাতলা মেট্রো পরিষেবা। সুতরাং মানুষের লাভের লাভ কিছুই হল না। মেট্রো কর্তৃপক্ষ এই গোটা বিষয়টি চেপে গিয়েছে। দুর্গাপুজোর আগে মাঝেরহাট পর্যন্ত আরও দু’কিমি পথে মেট্রো সম্প্রসারণের কথা জানালেও কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সময়ে সে কাজ শেষ করতে পারেননি। এখন তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই বছরের শেষে মাঝেরহাট স্টেশনের কাজ সম্পূর্ণ করবেন। আর তারপর কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটির কাছে পরিদর্শন সেরে অনুমতির আর্জি জানানো হবে।

আরও পড়ুন:‌ রাজ্যের স্কুলশিক্ষা মন্ত্রীকে ৭ কোটি টাকা জরিমানা করল বিশেষ আদালত, কী ঘটল?

অন্যদিকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মাঝেরহাট পর্যন্ত কাজ সম্পূর্ণ করে পরিষেবা সম্প্রসারিত হতে পারে বলে সূত্রের খবর। মাঝেরহাট পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা সম্প্রসারিত হলে যাত্রীরা সেখানে নেমে শিয়ালদা–বজবজ রেলপথ ধরতে পারবেন। আবার চক্ররেল ধরে বিবাদী বাগ, কলকাতা স্টেশন এবং বালিগঞ্জে পৌঁছতে পারবেন। তবে কলকাতা মেট্রো কতটা উদ্যোগ নেয় এখন সেটাই দেখার। কারণ সামনে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা রয়েছে বাংলায়। আবার লোকসভা নির্বাচন রয়েছে। তাই দেখার বিষয় যাত্রীদের উপকার হয় কিনা।