‘‌মটর মালার হার বিক্রি করে কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম’‌, নয়া প্রকল্প ঘোষণা মমতার

আজ, সোমবার ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে যোগ্যশ্রী প্রকল্পের সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পে জয়েন্ট এন্ট্রান্স, নিট পরীক্ষা থেকে শুরু করে নানা প্রবেশিকা পরীক্ষায় বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তাই এই প্রকল্পের নামই যোগ্যশ্রী। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এই প্রকল্প ঘোষণা করে কার্যত মাস্টারস্ট্রোক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার আজ থেকে কলকাতা পুলিশের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল ভাঙড়। সেটারও সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তারপরই জানালেন, প্রত্যেক বছর ১–৭ জানুয়ারি পালন হবে ছাত্র সপ্তাহ।

কেন এমন ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর?‌ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছোট থেকে বড় হয়েছেন অনেক কষ্টের সঙ্গে সংগ্রাম করে। পড়াশোনা করতেও তাঁকে নিরলস সংগ্রাম করে যেতে হয়েছিল। আজ স্মৃতিতে ডুব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌টাকা ছিল না, গলায় মটর মালার হার বিক্রি করে কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। আমার মনে আছে। বাবা মারা গেছেন। আমার গলায় মটর মালার হার ছিল। সেটা বিক্রি করে আমি কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। গরিব হয়ে জন্মানো কি অপরাধ? তাই প্রবেশিক্ষা পরীক্ষা বা প্রশিক্ষণ পেতে যাতে বাংলার ছেলে–মেয়েদের অসুবিধা না হয় তাই এই প্রকল্প চালু করলাম।’‌

আর নতুন কী হচ্ছে?‌ এই প্রকল্পের মাধ্যমে তফসিলি জাতি এবং আদিবাসী পড়ুয়াদের নিখরচায় সরকারি চাকরির প্রবেশিকা থেকে শুরু করে প্রশিক্ষণ মিলবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌তৃণমূল কংগ্রেস সরকার ইংরেজি মাধ্যম স্কুল চালু করেছে। রাজ্যের পড়ুয়াদের ইংরেজিতে পোক্ত করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ১ কোটি ১৫ লক্ষ ছেলেমেয়ে সবুজসাথীর সাইকেল পেয়েছে। ৮৬ লক্ষেরও বেশি মেয়ে কন্যাশ্রী পাচ্ছেন। উৎকর্ষ বাংলা তৈরি করবে রাজ্য সরকার। স্কিলড ট্রেনিং প্রোগ্রামে বাংলা এখন দেশের মধ্যে এক নম্বরে। কলকাতা পুলিশের দশম ডিভিশন হল ভাঙড়।’‌

আরও পড়ুন:‌ শাহজাহানের বাড়িতে আছে স্তূপাকৃত টাকা, প্রমাণ লোপাটে নষ্ট করা হয় মোবাইলও

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ ছাত্র অবস্থাতেই এবার সরকারি কাজে প্রশিক্ষণের সুযোগ মিলবে। ইন্টার্নশিপের সুযোগ দিচ্ছে রাজ্য সরকার। ইন্টার্নশিপ শেষে মিলবে সার্টিফিকেট। প্রশিক্ষণ পর্বে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‌স্টুডেন্ট ইন্টার্নশিপ স্কিম চালু হল। আমি চাই ছাত্র অবস্থা থেকেই ছেলেমেয়েরা প্রশিক্ষণ নিতে পারবে। প্রশিক্ষণে তাঁরা সাফল্য পেলে সার্টিফিকেট পাবে। এক বছরের জন্য ইন্টার্নশিপ দেওয়া হচ্ছে আড়াই হাজার ছাত্রছাত্রীকে। এই বছর থেকে চালু হল। যদি তাঁরা ভাল কাজ করে, যোগ্যতার মাপকাঠি অনুযায়ী চাকরি রিনিউ করাও যেতে পারে। একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে কাজের লোক তুলে আনার চেষ্টা করছি। মাসে ১০ হাজার টাকা রেমুনারেশন পাবে ইন্টার্নশিপের সময়। এতে ছাত্রজীবন থেকে প্রশাসনের কাজ সম্পর্কে ধারণা হয়ে যাবে। এই প্রকল্পের নাম দিলাম যোগ্যশ্রী।’‌