স্বামীর সঙ্গে থাকলেও আলাদা করে ভরণপোষণ পাবেন স্ত্রী, জানাল আদালত

শ্বশুর বাড়িতে থাকলেও স্ত্রীকে দিতে হবে ভরণপোষণ। এমনই রায় দিল বম্বে হাইকোর্ট। হাইকোর্ট জানিয়েছে যে, ‘ স্বামীর বাড়িতে থাকলেও স্ত্রী ভরণপোষণ থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। কারণ সন্তানের খাবার, ওষুধ, জামাকাপড় এবং পড়াশোনার খরচ বাবদও স্ত্রীয়ের কিছু অর্থের প্রয়োজন হয়।’

১৯৫৫ সালের হিন্দু বিবাহ আইনের ২৪ নম্বর ধারায় পারিবারিক আদালতের দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন ভরণপোষণকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এক ব্যক্তির দায়ের করা পিটিশনের শুনানি করেন বিচারপতি নীলা গোখলের সিঙ্গল জাজ বেঞ্চ।

এই দম্পতি ২০১২ সালে হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী বিয়ে করেছিলেন এবং তাদের ১০ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে বৈবাহিক কলহের কারণে তারা ২০২১ সালের নভেম্বরে আলাদা হয়ে যান।

স্বামী বলেছিলেন যে তাঁর স্ত্রী কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন এবং প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তিনি তাকে একসঙ্গে থাকার জন্য রাজি করাতে পারেননি। তাই তিনি হিন্দু বিবাহ আইনের ১৩(১)(আইএ) ধারায় বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন।

জানা যায়, ওই ব্যক্তির ইএমআই ছিল ৬০,০০০ টাকা এবং তিনি ৬,৫০০ টাকা ভাড়া দিতেন এবং  ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে মাসে  প্রায় ১০ হাজার টাকা উপার্জন করতেন তার স্ত্রী।

স্ত্রীর পক্ষে আইনজীবী বিনয় কেট যুক্তি দিয়েছিলেন যে স্বামীর মোট বেতন ১,২৩,০৮৫ টাকা।

হলফনামায় কোট উল্লেখ করেছেন যে স্বামী হলফনামায় স্বীকার করেছেন যে ছেলের স্কুল ফি বাবদ বছরে ১,০৫,০০০ টাকা, স্কুল বাস, বই এবং স্টেশনারি খরচ বাবদ ৫২,২০০ টাকা, প্রাইভেট টিউশনের জন্য ৫,০০০ টাকা এবং সন্তানের অন্যান্য খরচ বাবদ ৪০,০০০ টাকা দিতেন। তাই তিনি ৫ লক্ষ টাকা করে ভরণপোষণ দিতেই পারবেন।

উচ্চ আদালত স্ত্রীর যুক্তির সঙ্গে একমত হয় এবং জানায় যে স্ত্রীয়ের এই ভরণপোষণ দেওয়া স্বামীর কাছে কখনই অসহনীয় বা সমস্যার নয়। কারণ তাঁর উপযুক্ত আয় রয়েছে।

কোর্ট জানায়,’ দুই পক্ষের অবস্থা বিবেচনা করে দেখাযায় যে স্ত্রী ও নাবালক পুত্রের চাহিদাগুলো কোনও মতেই অপর্যাপ্ত নয়। এবং ভরণপোষণের আবেদন যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত। তাই স্ত্রী-পুত্রের চাহিদা মেটাতে ব্যক্তিটির কোনও সমস্যা হওয়ারই কথা নয়।’ 

এ ছাড়াও কোর্ট জানায়, ‘ স্ত্রী যদি স্বামীর বাড়িতেও থাকে তাও তাকে স্ত্রী ও পুত্রের অন্যান্য খরচের জন্য ন্যায্য মূল্যের ভরণপোষণ অবশ্যই দিতে হবে।