Mamata and Abhishek at TMC meeting: তৃণমূলের বৈঠকের শুরুতে চুপ অভিষেক, মমতা বললেন ‘কিছু তো বল’, দিলেন নয়া দায়িত্বও

রাজ্যে যখন শীত ফিরতে চলেছে, তখন কি তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের ‘শৈত্য’ কাটল? বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলার সাংগঠনিক বৈঠকের পরে তেমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আর তাতে মমতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মত। কীভাবে? সূত্রের খবর, বৈঠকে প্রথম থেকে চুপ করে বসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষের দিকে ভাইপোকে মমতা বলেন যে ‘তুই তো বৈঠকে আছিস। কিছু তো বল।’ মমতার কথা ফেলতে পারেননি অভিষেক। তারপর তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচি নিয়ে মুখ খোলেন। সেইসঙ্গে মমতার নেতৃত্বের প্রতি আস্থা প্রকাশ করে তিনি জানান যে তৃণমূল সুপ্রিমো যা নির্দেশ দেবেন, সেটা মেনেই কাজ করবেন। তারইমধ্যে অভিষেককে নয়া দায়িত্বও সঁপে দেন মমতা। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, বিজেপি সরকারের খামতি, রাজ্যের প্রতি বঞ্চনা এবং রাজ্যের সাফল্য ও অঞ্চল-ভিত্তিক সাফল্যের খতিয়ান নিয়ে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করতে হবে। সেটার দায়িত্বে থাকবেন অভিষেক।

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, লোকসভা ভোটের আগে মমতা-অভিষেকের কথোপকথন তৃণমূলের জন্য বড়সড় স্বস্তি বয়ে আনল। কারণ তৃণমূলের নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে দু’জনের গলায় ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছিল। অভিষেক যেখানে নবীনদের পক্ষে সওয়াল করছেন, সেখানে অভিজ্ঞতার উপর বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন মমতা। আবার বার্ধক্য ভাতা নিয়ে মমতা ও অভিষেকের কথার ছন্দের সুর যেন মিলছিল না। রাজ্য সরকার বার্ধক্য ভাতা দিতে না পারলে ডায়মন্ড হারবারে নিজের পকেট থেকে সেই টাকা দেবেন বলে ঘোষণা করেন অভিষেক। পরদিনই সরকারি মঞ্চ থেকে মমতা আশ্বস্ত করেন যে বার্ধক্য ভাতার বিষয়টি তাঁর মাথায় আছে।

সবমিলিয়ে গত কয়েকদিনে মমতা ও অভিষেকের সুরও যে কিছুটা আলাদা শোনাচ্ছিল, তা বুধবারের বৈঠকে মিলে গিয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত। বিশেষত ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিও। তাঁদের রসায়ন নিয়েও জলঘোলা চলছিল। সূত্রের খবর, বুধবার বৈঠকের সময় মমতার বাঁ-দিকে বসেন সুব্রত। আর তাঁর পাশেই অভিষেক বসেন। তাঁদের কথা বলতেও দেখা গিয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।

আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: কোন্দল থামাতে ব্যর্থ হয়ে দলের মুখপাত্রদের মুখবদলের নির্দেশ দিলেন মমতা

যদিও তৃণমূলের শীর্ষস্তরে এখনই ‘শৈত্য’ কেটে গিয়েছে বলে রায় দিতে রাজি নয় একাংশ। ওই মহলের মতে, অভিষেকের হাতেই দলের সাংগঠনিক কাজকর্মের ভার দিয়েছেন মমতা। আর বুধবার যে বৈঠক হয়েছে, সেটা পুরোপুরি সাংগঠনিক বৈঠক। তাই সেখানে অভিষেক না গেলে পুরো বিষয়টা তৃণমূলের জন্য অস্বস্তিজনক হত। জনমানসেও ভালো বার্তা যেত না। তাই নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে সীমাবদ্ধ থাকবেন বলার পরও পশ্চিম মেদিনীপুরের সাংগঠনিক বৈঠকে অভিষেকের উপস্থিতি নিয়ে শৈত্য বা উষ্ণতার ‘পারদ’ মাপতে যাওয়া খুব একটা সমীচীন হবে না। সেটা বুঝতে আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মত। আর মমতার নির্দেশ মেনে যে তিনি চলবেন, তা বরাবরই বলে এসেছেন অভিষেক।

আরও পড়ুন: ‘‌যোগ্য লোকদের ৬০ বছরে বিদায় দিই না’‌, নবীন–প্রবীণ নিয়ে বার্তা দিলেন মমতা