গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নান করে ফেরার পথে বিপত্তি, নামতে হল উপকূলরক্ষী বাহিনীকে

ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী এবার উদ্ধার করল গঙ্গাসাগরের পুণ্যার্থীদের। মকর সংক্রান্তিতে গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নান সেরে ফিরছিলেন তাঁরা। প্রচণ্ড শীতে সাগরে ডুব দিয়ে ফিরছিলেন তাঁরা। কিন্তু মাঝপথে নেমে আসা বিপর্যয়। জলপথেই বিপর্যয়ে পড়েন বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থী। গঙ্গাসাগর থেকে ফেরার পথে পুণ্যার্থীরা সাগরের কচুবেড়িয়া থেকে কাকদ্বীপের লট নম্বর আটের ঘাটে যাচ্ছিল। তখনই কচুবেড়িয়াতে আসার পথে মুড়িগঙ্গা নদীর চরে আটকে যায় ভেসেল। চরেই আটকে থাকেন তাঁরা। আর আতঙ্কিত হয়ে পড়েন পুণ্যার্থীরা। কারণ প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকে। তখন হলদিয়া থেকে হোভারক্রাফটের মাধ্যমে পুণ্যার্থীদের উদ্ধার করে উপকূলরক্ষী বাহিনী।

এদিকে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী উদ্ধার করলেও আসে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। তাঁরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছন। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সদস্যরা হাত বাড়িয়ে সাহায্য করেন। আর উপকূলরক্ষী বাহিনীর হোভারক্র‌্যাফ্ট ও স্পিড বোর্ড দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। মোট ১৮২ জন পুণ্যার্থী যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। তবে আজ ৪০০ জন পুণ্যার্থী সাগর থেকে আসছিল। এই উদ্ধার কাজ করতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যায়।

অন্যদিকে প্রশাসন সূত্রে খবর, নামখানা–কাকদ্বীপে এই ঘটনা থেকে উদ্ধার হয় বহু পুণ্যার্থী। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আলোড়ন পড়ে যায়। কেন এমন ঘটনা ঘটল?‌ উপকূলরক্ষী বাহিনী সূত্রে খবর, খুব ঠাণ্ডা এবং কুয়াশার ঘনত্ব বৃদ্ধির জেরে দিকভ্রষ্ট হয়ে যায় পুণ্যার্থীদের ভেসেলটি। তখনই মুড়িগঙ্গা নদীতে দাঁড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তাতে বিপদ থেকে বাঁচতে পারেনি। কারণ তারপরই ভাটা চলে আসায় চরে আটকে যায় ভেসেল। যদিও গঙ্গাসাগর মেলার আগে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে পাঁচ ধরনের ফগ লাইটের ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে প্রাকৃতিক পরিস্থিতি কখন পাল্টে যাবে তা বোঝার উপায় কারও থাকে না। তবে ফগ লাইট কেন কাজ আসল না?‌ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

আরও পড়ুন:‌ রেলের ছাপাখানা বন্ধ করে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু, হাওড়ায় বন্ধের নির্দেশ জারি

তবে কুয়াশার সঙ্গে ভাটার জন্য আজ, মঙ্গলবার ভোর থেকে মুড়িগঙ্গা নদীতে কাকদ্বীপের লট নম্বর আট থেকে সাগরের কচুবেড়িয়ার মধ্যে ভেসেল চলাচল বারবার ব্যহত হয়েছে। কুয়াশা কাটলে ভেসেল চলাচল স্বাভাবিক হয়। তার মধ্যেই ঘটে গিয়েছে বিপত্তি। জানা গিয়েছে, ভেসেল থেকে প্রায় ২০০ জন পুণ্যার্থীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে কাকদ্বীপের লট নম্বর আটের ঘাটে। একাধিক পুন্যার্থী মিলিত কণ্ঠে বলেন, ‘‌প্রথমে বেশ ভালই চলছিল ভেসেলটি। পরে দাঁড়িয়ে ছিল। অনেকেই তখন ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছেন এবং কেউ কেউ তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিলেন। তাই প্রথমে বিষয়টি বোঝা যায়নি। পরে বুঝতে পারি ভেসেল দিকভ্রষ্ট হয়েছে। আর চরে আটকে গিয়েছে। ঠান্ডায় ওইভাবেই থাকতে হয়।’‌