প্রায় নিস্তেজ হয়ে গিয়েছিল শরীর! মাঝ আকাশে বিমানে সহযাত্রীর প্রাণ বাঁচালেন চিকিৎসক, নেটপাড়ায় প্রশংসার বন্যা

বিমানটি যাচ্ছিল কোচি থেকে মুম্বইয়ের দিকে। ঘটনা ১৪ জানুয়ারি রাতের। সেই রাতে বিমানে সওয়ার ছিলেন ড. সি এ ফিলিপ। আর তাঁর চেষ্টাতেই মাঝ আকাশে বিমানে অসুস্থ হয়ে পড়া তাঁর সহযাত্রী প্রাণ ফিরে পান। ওই অসুস্থ হয়ে পড়া সহযাত্রীর ছিল উচ্চ রক্তচাপ ও শরীরে তখন তাঁর কম অক্সিজেন সরবরাহ হচ্ছিল।

সারা দিনের কাজ সেরে ফিলিপ সেদিন ঠিকই করে নিয়েছিলেন যে, বিমানে উঠেই তিনি ঘুমিয়ে নেবেন। সেই মতো বিমানে সওয়ার হয়ে হালকা তন্দ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েম ফিলিপ। তাঁর পাশেই বসেছিলেন ওই যাত্রী। যাত্রীটির শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। ফিলিপ সেই ঘটনার কথা স্মরণ করে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখেন, ‘আমি দেখছি বিমান সেবিকা নেবুলাইজার প্লাগ ইন করার চেষ্টা করছেন, যাতে আপৎকালে তাঁর শ্বাস প্রশ্বাস চলতে থাকে। আমি তখন মেশিনটি যাতে কার্যকর হয়, তার জন্য সাহায্য করি। উনি (অসুস্থ ব্যক্তি) ভাঙা ভাঙা কথায় বলতে চেষ্টা করছিলেন যে তিনি সুস্থ বোধ করছেন না।’ সদ্য এক্স হ্যান্ডেলে ফিলিপ এই অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন। যা ভাইরাল হতে থাকে। এরপর সেদিন কী ঘটেছিল, তাও লেখেন ফিলিপ। এদিকে, ওই যাত্রীর কাছে ছল নেবুলাইজেশন কিট। তবে ফিলিপ বলছেন, যাঁর অ্যাস্থমা নেই, তিনি যে কেন নেবুলাইজেশন কিট নিয়েছেন, তা ফিলিপ বুঝতে পারছিলেন না। এদিকে, সেই অবস্থার মাঝেই যাত্রী চিকিৎসককে জানান যে তাঁর কিডনির অবস্থা ভালো নেই।

গোটা ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বর্ণনা করার সময় ফিলিপ লেখেন,’ আমি স্টেথোস্কোপ চেয়েছিলাম এবং দেখতে পেলাম যে তার বাম পাশের ফুসফুসের শব্দ সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। এটি জলে ভরা ছিল।’ এরপর ফিলিপ লিখছেন, ‘ আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে তিনি ডায়ালাইসিস করছেন কিনা এবং তিনি সপ্তাহে তিন দিন এটিতে ছিলেন এবং পরেরটি পরের দিনের জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছিল।’ এরপর ওই চিকিৎসক লেখেন, ‘ গতকাল রাতে তাঁর ওষুধ শেষ হয়েছে। আমি তাঁর শেষ প্রেসক্রিপশন দেখতে তার আনলক করা ফোন ইমেজ মাধ্যমে স্ক্রল করছিলাম। বেশিরভাগই ছিল উচ্চ রক্তচাপের জন্য। আমি তার রক্তচাপ পরীক্ষা করে দেখতে পেলাম যে এটি ২৮০/১৬০ এবং তাঁর হাইপারটেনশন বাড়ছিল আর ফুসফুসের অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। তাঁকে জরুরি চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য আমাদের অবতরণ করার জন্য ১ ঘন্টা সময় ছিল। ততক্ষণ আমাদের তাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।’

ফিলিপ বলছেন এরপর ওই রোগীকে frusemide ইংজেকশন দেন তিনি। ফিলিপ লিখছেন, ‘ তাকে বলছিলাম যে ব্যথা হচ্ছে, কিন্তু আমার কাছে অন্য কোন উপায় ছিল না। কারণ তিনি লড়ে যাচ্ছেন এবং ফ্লাইটটি কিছুটা কাঁপছিল বলে একটিও শিরা খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন ছিল।’ ফিলিপ বলছেন এর জেরেই ওই ব্যক্তির পশ্চাদদ্বারে ওই ইংজেকশন দিতে তিনি বাধ্য হন। এবং শেষমেশ সেই রোগী ফিরে পান প্রাণ! শেষে আকাসা ও রোগীর পরিবার ফিলিপকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এই উদ্যোগের জন্য।