Mizo CM on Manipur Violence: ‘রাষ্ট্রপতি শাসন আশা করছি’, শাহের সামনেই মণিপুর নিয়ে বিস্ফোরক মিজো মুখ্যমন্ত্রী

মণিপুরে নতুন করে হিংসা দেখা দিয়েছে বিগত কয়েকদিনে। এর আগে বছরের প্রথম দিনই মণিপুরের থৌবালে এক সংঘর্ষে ৪ জনের মৃত্যু হয়। আবার গত ১৭ জানুয়ারি মোরে অঞ্চলে বন্দুকবাজদের হামলায় প্রাণ হারান এক পুলিশ কমান্ডো। এই আবহে এবার অমিত শাহের সামনেই কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, মণিপুরে হিংসা ছড়াতেই প্রতিবেশী রাজ্য মিজোরামে গিয়ে থাকতে শুরু করেছেন বহু কুকি সম্প্রদায়ভুক্ত মণিপুরবাসী। এই গোটা পরিস্থিতি নিয়ে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হবে বলে আশা করছি। সেই রাজ্যে দীর্ঘ সময় ধরেই এই হিংসা চলছে। পরিস্থিতি বদলাচ্ছে না। বরং কখনও কখনও তা আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে।’ (আরও পড়ুন: ‘ঐতিহাসিক ইস্যু…’, LAC-তে সংঘর্ষের খবর সামনে আসতেই পুরনো রেকর্ড বাজাল চিন)

গত ডিসেম্বরেই মিজোরামে বিপুল জয় পেয়েছিল জোরাম পিপলস পার্টি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন লালডুহোমা। এহেন লালডুহোমা অমিত শাহের সামনে উত্তরপূর্ব কাউন্সিলের ৭১তম প্লেনারি সেশনেই মণিপুর নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন। মেঘালয়ের শিলঙে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে লালডুহোমা আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার, মণিপুর সরকার এবং আদিবাসী নেতাদের মধ্যে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। একটা সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসা দরকার। এই গোটা পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের।’ এদিকে কুকি শরণার্থীদের নিয়ে লালডুহোমা বলেন, ‘ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী, যে কেউ যে কোনও জায়গায় থাকতে পারেন। আপাতত কুকি শরণার্থীরা মিজোরামে আছেন। মণিপুরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত আমরা তাদের আশ্রয় দেব। তবে সেখানকার সমস্যা মেটানো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব।’

উল্লেখ্য, গত ২০২৩ সালের ৩ মে থেকে জাতিগত হিংসার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। অভিযোগ উঠেছে কুকি ‘জঙ্গিরা’ অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই আবহে কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে সেই রাজ্যে।

প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হল মেইতেই জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছিল যে তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধ জানিয়েছিল স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসীরা। এই আবহে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়। এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই আবহে গত এপ্রিল মাসে এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। এদিকে এই জেলা থেকে কুকি আদিবাসী বনাম মেইতেইদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও। আর এখনও পর্যন্ত সেই হিংসা প্রাণ হারিয়েছেন কয়েকশো সাধারণ মানুষ।