পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে ১০ বিয়ে, মেম্বারের বাসায় ধরা

বগুড়া, গাইবান্ধা ও পাবনায় পুলিশের এসআই পরিচয়ে নাজমুল হক (২৮) নামের এক যুবক ১০টি বিয়ে করেছেন। বিয়ের পর ওসব নারীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের যৌতুক ও মালামাল হাতিয়ে নিয়েছেন। সর্বশেষ সোমবার (২২ জানুয়ারি) রাতে শিবগঞ্জ উপজেলার ভরিয়া গ্রামে এক ইউপি সদস্যের (মেম্বারের) বাসা ভাড়া নিতে এসে চাঁদা দাবি করে গ্রেফতার হয়েছেন।

নাজমুল হক পাবনার সাথিয়া উপজেলার ধোপাদহ গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মঞ্জু শেখ তার বিরুদ্ধে শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। মঙ্গলবার রাতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক আশিক মাহমুদ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নাজমুল হক পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে ও বিয়ের কথা গোপন রেখে নিজ জেলায় পাঁচটি, শিবগঞ্জের মোকামতলায় চারটি বিয়ে করে মোটা অঙ্কের যৌতুক হাতিয়ে নেন।

সম্প্রতি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে এক এনজিও কর্মকর্তাকে বিয়ে করে চার লাখ টাকার বিভিন্ন মালামাল হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া মোবাইল ফোনে থাকা পুলিশ কর্মকর্তার পোশাক পরা ছবি দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন।

পুলিশ জানায়, নাজমুল গত সোমবার সন্ধ্যার পর শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের ভরিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য মঞ্জু শেখের বাড়িতে যান। নিজেকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার এসআই পরিচয় দিয়ে বাসা ভাড়া নিতে চান। তার কথায় সন্দেহ হলে ইউপি সদস্য মঞ্জু শেখ বাসা ভাড়া দিতে রাজি হননি।

বাসা ভাড়া না দিলে মেম্বারের কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে বসে। কৌশলে মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ফোন দিলে পুলিশ এসে নাজমুলকে গ্রেফতার করে। পরে এ ঘটনায় মঞ্জু শেখ শিবগঞ্জ থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আশিক মাহমুদ বলেন, গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে নাজমুল জানায় সে পুলিশ সদস্য নন। পুলিশ পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন। এই পরিচয়ে ১০টি বিয়ে করেছেন। আসলে বিয়ের নামে যৌতুক হাতিয়ে নিতেন।

শিবগঞ্জে বিয়ে করে এক নারীর কাছ থেকে ৭৫ হাজার, আরেক নারীর কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। একইভাবে অন্য স্ত্রীদের কাছ থেকেও নিয়েছেন।

নিজ জেলা পাবনা ও শিবগঞ্জ ছাড়াও গোবিন্দগঞ্জে ব্যুরো এনজিওর নারী কর্মকর্তাকে পুলিশ পরিচয়ে বিয়ে করেছেন। গত পাঁচ মাসে ওই নারীর কাছে চার লাখ টাকার জিনিসপত্র হাতিয়ে নিয়েছেন। নাজমুলের কাছে পাওয়া মোবাইল ফোনে পুলিশের পোশাক পরা কয়েকটি ছবি পাওয়া গেছে। এসব ছবি দেখিয়ে প্রতারণা করে আসছিল। মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।