সমস্যা শুনে ফুটবলে সহযোগিতার আশ্বাস পাপনের

যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন শুরুতে বসেছিলেন সাত ফেডারেশন ও এক মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে। আজ বুধবার সকালে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সঙ্গে তিনি আলোচনা করেছেন। প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে আলোচনা শেষে ফুটবলে নানান সমস্যা ও সম্ভাবনা শুনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আশ্বাস মিলেছে নতুন ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছ থেকে। 

পাপনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী নিজেদের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে বলেছেন, ‘নতুন মন্ত্রী আমাদের ক্রীড়াঙ্গনের মানুষ। আমাদের সঙ্গে সুন্দর আলোচনা হয়েছে। তিনি আমাদের সমস্যাগুলো শুনেছেন। এই মুহূর্তে মূল সমস্যা বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ, এটা যত দ্রুত শেষ করা যায়। এখানে প্রিমিয়ার লিগসহ অনেক খেলা হয়ে থাকে। অনেক দিন হলো সেখানে খেলা হচ্ছে না। এছাড়া শুধু ফুটবলের জন্য আলাদা স্টেডিয়াম চেয়েছি। যেসব জেলায় খেলাগুলো হয়, সেখানে ডিএফএ যেন মাঠ পায়। লিগ যেন চালাতে পারে। মন্ত্রী মহোদয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।’

সারা বছর ফুটবল চালাতে অনেক টাকা ব্যয় হয়। ফিফা ও এএফসি বড় অংশ দিলেও বাকিটা স্পন্সরের মাধ্যমে আসে। ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে অর্থনৈতিক বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে। সালাম মুর্শেদী বলেছেন, ‘ফিফা থেকে যে টাকা পাই, তা খাতওয়ারি খরচ হয়। স্পন্সরের সীমাবদ্ধতা আছে। মন্ত্রণালয় থেকে সাপোর্ট চেয়েছি। দেশের বাইরে খেলতে যেতে হয়। ক্যাম্প খরচসহ অন্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

আসছে অক্টোবরে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে হচ্ছে না। বিকল্প ভেন্যু হিসেবে আর্মি স্টেডিয়াম কিংবা বসুন্ধরা কিংস রয়েছে। বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি বলেছেন, ‘সাফের খেলায় যেন স্বাগতিক হতে পারি, তিনি (ক্রীড়ামন্ত্রী) সহযোগিতা করবেন। চারটা মাঠ হালনাগাদ করে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি সমস্যাগুলো জানতে পেরেছেন। বুঝতে পেরেছেন। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী। আমাদের চ্যালেঞ্জ বা সংকট যা আছে তা মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে করতে পারবো।’

ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে আর্থিক সহায়তাও চাওয়া হয়েছে বলে বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি জানালেন, ‘এখন যে টুর্নামেন্ট বা লিগ হচ্ছে,  দেশে বা বিদেশে। কেমন খরচ হয়ে থাকে বা হবে, তার একটা খসড়া তাকে দিয়েছি। পরবর্তীতে তিনি ব্যবস্থা করবেন। স্পন্সর যেন পাই সেজন্য সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। সিড মানি যেন দেওয়া হয়। ফিক্সড ডিপোজিট করে যেন চলা যায় তাও বলেছি আমরা।’

বাফুফে গত অর্থ বছরে সরকারের কাছে ৫০০ কোটি টাকা চেয়েছিল। অর্থ মন্ত্রণালয়ে বাফুফের সেই প্রকল্পতে সাড়া দেয়নি। পুনরায় এই প্রকল্প আজ উত্থাপন হয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে বাফুফে সহসভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ বলেছেন, ‘এটার বিভিন্ন অংশ আলোচনায় এসেছে, ডেভলপমেন্টসহ বাইরের খেলাগুলো নিয়ে। ভেন্যু ডেভেলপমেন্টের বিষয়ও ছিল। জেলা, বিভাগকে সাহায্য করা, ক্লাবগুলোকে সাহায্য করাসহ অনেকগুলো পয়েন্ট দিয়েছি। ওটার বিভিন্ন বিষয় আলাদা করে উপস্থাপনা করা হয়েছে।  ছেলে ও নারী ফুটবলের দিকও আলাদা করে তুলে ধরা হয়েছে।’

বর্তমানে ফুটবল যেভাবে আছে, সামনের দিকে কোথায় থাকতে চায়, তা আলোচনায় উঠে এসেছে। এর জন্য বাস্তবসম্মত লক্ষ্যও নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। কাজী নাবিল বলেছেন, ‘উনি (ক্রীড়ামন্ত্রী) বলেছেন টার্গেটটা বাস্তবসম্মত হতে হবে। বর্তমানে এখন কোথায় আছি, পরবর্তী ধাপ কোন জায়গায়? এখন আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অবস্থায় আছি। পরবর্তীতে এশিয়ান পর্যায়ে হওয়া উচিত। বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা করে এগিয়ে যেতে হবে। তারপর আবার সবকিছু নিয়ে তার সঙ্গে বসবো।’