‘‌বাংলার বকেয়া নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে’‌, ম্যারাথন বৈঠক শেষে মন্তব্য রাজ্যপালের

রাত পোহালেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধরনায় বসবেন। তার আগেই কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আদায় নিয়ে রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক হল। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সব বিষয়ে কথা হয়েছে বলে জানালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আবার সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে বলে জানান পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল। নয়াদিল্লি থেকে একটি ভিডিয়ো বার্তায় তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘আইন আইনের পথে চলবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’‌ অর্থাৎ শেখ শাহজাহানের দলবলের হাতে ইডি অফিসারদের প্রহৃত হওয়ার ঘটনা নিয়ে তিনি রিপোর্ট দিয়েছেন বলেই সূত্রের খবর।

এদিকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস একদিন আগেই বঙ্গভবনে থাকা নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেছিলেন। এবার অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের আগে বাংলায় নিজের পূর্বসূরি তথা অধুনা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গেও দেখা করেন। আর বললেন, ‘‌সর্বস্তরে আলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে যা করার শীঘ্রই তা আপনারা দেখতে পাবেন। ইডিকে নিজের কাজ করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইডি কাজ করেছে। আগামী দিনেও করে চলবে। গোটা ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ প্রয়োজন।’‌ অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকারকে হস্তক্ষেপের আর্জি জানান যাতে দ্রুত গ্রেফতার করা যায় শাহজাহানকে। এর পর প্রধানমন্ত্রীর দফতরে যান রাজ্যপাল। সেখানে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা এবং রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট দেন বলে সূত্রের খবর।

অন্যদিকে অমিত–আনন্দ বৈঠকে কী বিষয় আর উঠে এসেছে সেটা এখনই বিস্তারিত বলতে নারাজ রাজ্যপাল। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সবরকমের পদক্ষেপ করা হয়েছে বলেই বিবৃতি দিয়ে দাবি করলেন রাজ্যপাল। তাঁর কথায়, ‘‌বাংলার বকেয়া নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বাংলার কাছে এই বিষয়ে কিছু জানতে চাওয়া হয়। দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। বাংলার মানুষ যাতে বঞ্চিত না হন, সেটা প্রধানমন্ত্রী দেখছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীার সঙ্গে কথা হয়েছে।’‌ একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বাংলার প্রতি বঞ্চনার অভিযোগে নয়াদিল্লিতে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফিরে এসে রাজভবনের বাইরেও ধরনায় বসেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এবার দিয়েছেন চরম সময়সীমা।

আরও পড়ুন:‌ দুটি বন্দর ব্যবহার করার অনুমতি দিল শেখ হাসিনা সরকার, ভারত–বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু চালু হচ্ছে

তারপরই রাজ্যপাল এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। শুক্রবার ধরনায় বসবেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর নয়াদিল্লি সফর রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সংসদে এই বকেয়া টাকার দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন নরেন্দ্র মোদী তাঁকে সিএজি রিপোর্ট দেখতে বলেন। যদিও সেই রিপোর্টে কোনও দুর্নীতির কথা বাংলা সম্পর্কে লেখা নেই বলে দাবি সুদীপের। আর তারপরই রাজ্যপালের ভিডিয়ো বার্তায় তিনি বলেন, ‘‌স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আমার মধ্যে কী কথা হয়েছে সেটা প্রকাশ্যে বলা সম্ভব নয়। তবে রাজ্যের যা প্রাপ্য আছে সেটা অবশ্যই রাজ্য পাবে। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের মানদণ্ড পূরণ করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষের কাছে ন্যায়বিচার পৌঁছে দেওয়া হবে। আমি মানুষের উদ্বেগের কথা বুঝি। আমিও নিজে বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি। কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি দেখছে।’‌