Delhi High Court: স্বামীর আর্থিক দূর্বলতা নিয়ে নিয়মিত টিটকিরি মানসিক নিষ্ঠুরতা: দিল্লি হাই কোর্ট

স্বামীর আর্থিক সামর্থ্য নিয়ে স্ত্রীর নিয়মিত কটুক্তি এবং তাঁর আর্থিক নাগালের বাইরে গিয়ে তাঁকে স্বপ্নপূরণের জন্য চাপ দেওয়া মানসিক নিষ্ঠুরতা। এমন হলে স্বামীর বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার রয়েছে। এক বিচ্ছেদ মামলার প্রেক্ষিতে বলল দিল্লি আদালত। 

বিচারপতি সুরেশকুমার কাইত এবং নীনা বনসাল কৃষ্ণের ডিভিশন বেঞ্চ তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, স্বামীর আর্থিক দুর্বলতাকে স্ত্রীর সব সময় মনে করিয়ে দেওয়া উচিত নয়।

আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিবাহিত জীবনে সর্বদা নিজের চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে সাবধানে পদক্ষেপ করতে হবে। স্বামীকে সব সময় তাঁর আর্থিক দূর্বলতার কথা মনে করিয়ে দেওয়া উচিত নয়। তার আর্থিক নাগালের বাইরে গিয়ে তাকে স্বপ্নপরণের জন্য চাপ দেওয়া উচিত নয়। 

পড়ুন। সহবাসের পর বাবা-মায়ের আপত্তিতে বিয়ে না করতে পারলে সেটা ধর্ষণ বলে গণ্য হবে না, জানাল হাইকোর্ট

আদালত আরও বলেছে, এ সব নিয়ে ক্রামগত ঝগড়া-অশান্তি মনের মধ্যে চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং একজন মানুষের মানসিক সুস্থতাকে প্রভাবিত করতে পারে। আদালত আরও বলে, এই মামলায় স্বামী যে সব ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন তা স্ত্রীর (মামলাকারী) পক্ষে অপরিপক্ক মনোভাবের প্রমাণ। স্ত্রীর এই আচারণ স্বামীর মানসিক ভারসাম্যকে ব্যাহত করে। ঘটনাগুলো আপাতভাবে নিরীহ তুচ্ছ মনে হতে পারে। কিন্তু এটি একপক্ষের উপর এমন মানসিক চাপ তৈরি করে যা তাদের বিবাহ টিকিয়ে রাখাই অসম্ভব করে তোলে। আদালত বলেছে,  হিন্দু বিবাহ আইনের ধারা ১৩ (১এ)(২) অনুযায়ী এই ধরনের আচরণ থেকে উভয় পক্ষের কেউ বিবাহ বিচ্ছেদ চাইতে পারে। 

এর আগে পারিবারিক আদালত স্বামী বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর করে। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্ট যান স্ত্রী। সেই মহিলার দায়ের করা মামলার পর্যবেক্ষণে আদালত এই মন্তব্য করেছে। 

আদালতের কাছে স্বামী বলে. স্ত্রী তাঁকে হরিয়ানা থেকে দিল্লি চলে যেতে বাধ্য করে। একটি আলাদা বাড়ি তৈরি করেছিল বাধ্য করেছিল স্ত্রী।  মেয়েটির বাবা-মা থেকে ৮ হাজার টাকা ঋণ নেন স্বামী। তার জন্যও তাঁকে কটূক্তিও সহ্য করতে হয় স্ত্রীর কাছে।

স্বামী আদালতে বলেন, স্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে অন্য মহিলদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার অভিযোগ করেন। তিনি একটি বিলাসবহুল জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখতেন। স্ত্রী স্বামীর ক্ষমতার মধ্যে জীবন চালাতে অস্বীকার করতেন।

স্ত্রী সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। আদালতে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। তিনি স্বামীর প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন এবং বিবাহিত সমস্ত দায়বদ্ধতা তিনি যথাযথ ভাবে পালন করেছেন। 

দুপক্ষের শুনানির শেষে, আদালত পারিবারিক আদালতের রায়ের সঙ্গে একমত হয়। মেনে নেয় স্বামী মানসিক নিষ্ঠুরতার স্বীকার হয়েছিলেন। আদালত মামলাটি খারিজ করে দিয়েছে।