Abhishek Banerjee: অমৃতা সিনহার বেঞ্চ থেকে মামলা সরাতে চাইছেন কেন? অভিষেককে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের

বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ থেকে কেন মমলা সরানোর আবেদন করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেতার আইনজীবীর কাছে জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার মেডিক্যালে ভর্তি দুর্নীতি মামলার শুনানিতে ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই প্রশ্ন করে। ১৯ ফেব্রুয়ারি অভিষেকের আবেদন নিয়ে আদালত সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

এদিন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় অভিষেকের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনাদের আপত্তি তো বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে। তাহলে বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ থেকে মামলা সরানোর আবেদন করছেন কেন?’

আরও পড়ুন: আলু চাষে বিমার প্রিমিয়ামের টাকা দেবে রাজ্য সরকার, বাজেটে সন্তোষ প্রকাশ চাষিদের

বলে রাখি, গত বছর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দিষ্ট একটি সংবাদমাধ্যমকে নিজের বাসভবনে বসে সাক্ষাৎকার দেন। সেই সাক্ষাৎকারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারাধীন নানা বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেন তিনি। এর পরই সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আবেদন করেন অভিষেক। সেই মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে প্রাথমিক সংক্রান্ত ২টি মামলা সরানোর নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তবে সেই মামলাগুলি কোন বেঞ্চে শুনানি হবে তা ঠিক করার অধিকার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বলে জানায় সর্বোচ্চ আদালত। এর পর বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে মামলাগুলি পাঠান কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। এর মধ্যে বিচারপতি সিনহার আইনজীবী স্বামীর বিরুদ্ধে একটি হুমকি দেওয়ার মামলায় তদন্ত শুরু করে রাজ্য পুলিশের সিআইডি। একাধিকবার ভবানী ভবনে তলব করা হয় তাঁকে। জমা দিতে বলা হয় মোবাইল ফোন। এরই মধ্যে রূদ্ধদ্বার শুনানি করে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা করেন।

এরই মধ্যে গত মাসে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিচারপতি সৌমেন সেনের বেনজির সংঘাত বাঁধে। মেডিক্যাল নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলে মৌখিক আবেদনের ভিত্তিতে সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি সেন। 

বিচারপতি সেনের এই নির্দেশকে বেআইনি বলে ঘোষণা করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় রায়ে লেখেন, বিচারপতি সৌমেন সেন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধির মতো আচরণ করছেন। বড়দিনের ছুটির আগে আদালতের শেষ কাজের দিন বিচারপতি অমৃতা সিনহাকে হাইকোর্টে নিজের চেম্বারে ডেকে পাঠিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তিনি বিচারপতি সিনহাকে বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ আছে। সেটা খেয়াল রাখতে হবে। তাঁর বিরুদ্ধে আপনার বেঞ্চে যে ২টি মামলার শুনানি চলছে সেগুলি খারিজ করে দিতে হবে। এছাড়া বিচারপতি সিনহার এজলাসের লাইভ স্ট্রিমিং বন্ধ করতে হবে। 

আরও পড়ুন: MNREGA দুর্নীতির দায় পঞ্চায়েত প্রধান ও BDOর, বিস্ফোরক দাবি অভিযুক্তের আইনজীবীর

দুই বিচারপতির এই বেনজির সংঘাতে হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। সেই বেঞ্চের কাছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মামলায় যুক্ত হওয়ার আবেদন করে জানান, তাঁর নাম বার বার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আদালতের ভিতরে ও বাইরে টেনে আনছেন। তাই তিনি এব্যাপারে নিজের বক্তব্য রাখতে চান। তবে মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে সরানোর কোনও নির্দেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। বিষয়টি ফের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ওপর ছাড়ে তারা। 

এর পর হাইকোর্টে বিচারপতিদের বিচার্য বিষয় পরিবর্তন করেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত মামলা বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চে স্থানান্তরিত করেন তিনি। এর পর অভিষেককে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, অমৃতা সিনহার বেঞ্চ থেকে কেন মামলা সরাতে চান তিনি?