আলু চাষে বিমার প্রিমিয়ামের টাকা দেবে রাজ্য সরকার, বাজেটে সন্তোষ প্রকাশ চাষিদের

এবার আলু চাষে বিমার প্রিমিয়ামের টাকা দেবে রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার রাজ্য বাজেটে এই কথাই ঘোষণা করেছেন অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। হুগলির আলু চাষিরা এই খবর শুনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে বিমা বাবদ প্রকৃত ক্ষতিপূরণ কতটা মিলবে সেটা নিয়ে সংশয় রয়েছে তাঁদের। বাংলার শস্য বিমা যোজনায় এই প্রিমিয়ামের টাকা দেওয়া হবে বলে বাজাটে উল্লেখ করা হয়েছে। তার ফলে ২০ লাখ আলু চাষি উপকৃত হবেন। এই বিমা খাতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

এদিকে আগে এমন উদ্যোগ রাজ্যে দেখা যায়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চাষি, তাঁতি, কারিগর সর্বস্তরের মানুষের জন্য প্রকল্প ও সুরক্ষা নিয়ে এসেছেন। এবার আলু চাষিদের বিমার প্রিমিয়ামের দায়িত্বও নিল রাজ্য সরকার। হুগলির মূল ফসল আলু। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সেই ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হলে বিপর্যস্ত হন চাষিরা। নানা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি বা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়া ওই চাষিরা বিমার ক্ষতিপূরণের দিকে তাকিয়ে থাকেন। অনেক সময়েই যে ক্ষতিপূরণ মেলে তা ক্ষতিগ্রস্ত বহু চাষি পান না বলে অভিযোগ। তাছাড়া ক্ষতির অঙ্কের সঙ্গে সামঞ্জস্য থাকে না বলে অভিযোগ। কৃষকদের চাষের ক্ষেত্রে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে উৎসাহ দিতে আগামী দু’‌বছরে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে দু’‌হাজার ফার্ম মেশিনারি হাব এবং কাস্টম হিয়ারিং সেন্টার গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে এই বাজেটে চাষিরা অত্যন্ত খুশি হয়েছেন। বেশ কিছু চাষি বলেন, ‘‌এতদিন আলু চাষের ক্ষেত্রে ঋণের উপর শতকরা ৪ টাকা ৮৫ পয়সা হারে প্রিমিয়াম দিতে হচ্ছিল। তার জন্য অনেকেরই ক্ষোভ ছিল। অবশেষে লোকসভা নির্বাচনের মুখে তা সরকারি স্তরেই মেটানো হবে বলা হয়েছে। আগে কখনও রাজ্য বাজেটে আলু চাষের বিমার জন্য টাকা বরাদ্দ হতো না। সে দিক দিয়ে এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই।’‌ এই বাজেটে খুশি রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‌কৃষকদের দ্রুত বীজ ও ঋণ পেতে সাহায্য করা হবে। কৃষিপণ্যের দ্রুত ও অবাধ বিপণনের জন্য আমরা আগামী ৩ বছরের জন্য ১২০০ ফার্মারস প্রোডিউসার অর্গানাইজেশন গঠনের প্রস্তাব করছি। এই খাতে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করছি।’‌ যা নিয়ে খুশি চাষিরা।

আরও পড়ুন:‌ বিপুল পরিমাণ কর আদায় করতে পেরেছে রাজ্য, পরিবহণ দফতরের রাজস্ব আয় বেড়েছে

এছাড়া চাষিদের একাংশের অভিযোগ, এখন ফসলের ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ণ উপগ্রহ চিত্রের সাহায্য নেওয়া হয়। তাতে অনেক সময়ই যথাযথ ক্ষতিপূরণ মেলে না। আর কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, ‘‌এবারে আলুর জন্য স্পেশাল বাজেট বরাদ্দ হয়েছে। চাষিদের আর বিমার প্রিমিয়ামের টাকা দিতে হবে না। রাজ্য সরকার দেবে।’‌ চাষিরা জানান, এই বাজেটে সত্যিই গ্রামবাংলার আলু চাষিরা বিরাট উপকৃত হবেন। অনেকটা বোঝা কমল।