‘‌আবাসনে বসবাসকারী প্রত্যেকেরই ছাদের অধিকার সমান’‌, বড় ঘোষণা করলেন মেয়র

আবাসনের ছাদের অধিকার কার?‌ এই প্রশ্ন এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে কলকাতা শহরে। কারণ কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘‌কোনও আবাসনে বসবাসকারী প্রত্যেকেরই ছাদের অধিকার সমান।’‌ এই কথা মেয়র বলেছেন উত্তর কলকাতার পাইকপাড়ার বাসিন্দা এক ব্যক্তি ফোন করার প্রেক্ষিতে। এই বিষয়ে কলকাতা পুরসভার এক অফিসার জানান, ফ্ল্যাটের কর ছাড়াও যাঁদের কাছে ছাদের একাংশের নিজস্ব মালিকানা আছে, তাঁদের থেকে অতিরিক্ত কর আদায় করা হয়েছে। তবে এটা তখনই সম্ভব যখন ফ্ল্যাটের দলিলে এটা লেখা আছে যে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে ওই আবাসনের ছাদ বা ছাদের একটি অংশের মালিকানা আছে।

এদিকে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, আবাসনের ছাদ ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না। দক্ষিণ কলকাতাতেও এমন অভিযোগ রয়েছে। এক প্রবীণ নাগরিককে আবাসনের ছাদ ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। কলকাতার এক বাসিন্দা ২০০৭ সালে কসবায় একটি ফ্ল্যাট কেনেন। তাঁর দলিলে ছাদের একচেটিয়া অধিকারের কথা উল্লেখ করা ছিল। কলকাতা পুরসভা আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দাদের চেয়ে তাঁর থেকে অতিরিক্ত কর আদায় করে। কারণ ছাদের একটা অংশ তাঁর ব্যক্তিগত মালিকানায় ছিল। তবে ২০০৯ সালের আইনে বলা হয়েছে, ‘‌যে কোনও আবাসনের সর্বোচ্চ তলায় প্রত্যেকটি ছাদে একটি সাধারণ প্রবেশাধিকার থাকবে। আর তার কোনও উপবিভাগ করা হবে না।’‌

অন্যদিকে পাইকপাড়ার রাজা মণীন্দ্র রোডের বাসিন্দা মেয়রকে ফোন করে জানান, সেল ডিড অনুযায়ী ছাদের উপর তাঁর অধিকার আছে। আর সেটা উল্লেখ করা রয়েছে। কিন্তু তারপরও তাঁকে সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এই কথা শুনে ফিরহাদ হাকিম ওই ব্যক্তিকে থানায় অভিযোগ করতে বলেন। আর তাঁর পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ওই ফোন কলের পর মেয়র পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়রকে ছাদের অধিকার সবার জন্য বলে এখন থেকে বিল্ডিং পারমিটে উল্লেখ করার নির্দেশ দেন। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‌অনুগ্রহ করে বিল্ডিং পারমিটে এই কথাটি উল্লেখ করুন যে ছাদের অধিকার সবার এবং প্রত্যেকেরই সেগুলি ব্যবহার করতে পারা উচিত।’‌

আরও পড়ুন:‌ নয়া সেতুর মাধ্যমে জুড়ে গেল দমদম রোড, মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করতেই যান চলাচল শুরু

এছাড়া শহরের বুকে এমন অভিযোগ বারবার উঠেছে। এমনকী আইন আদালতে গেলে সময় কেটে যাচ্ছে। কিন্তু অধিকার মিলছে না। এই সমস্ত অভিযোগ মেয়রের কানে পৌঁছেছে। তারপরই গোটা বিষয়টি নিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‌কোনও একটি ফ্ল্যাটের মালিককে একটি টেরেসের মালিকানা দেওয়া হলে অগ্নিকাণ্ড বা জরুরি পরিস্থিতিতে মানুষকে উদ্ধার করার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে। ২০১০ সালে পার্ক স্ট্রিটের স্টিফেন কোর্টে আগুন লাগে। ছাদে যাওয়ার সিঁড়িতে বেশ কয়েকজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ছাদের প্রবেশ পথ তালাবদ্ধ থাকায় তাঁরা ছাদে উঠতে পারেননি।’‌