‘‌কেন্দ্রের ইউসি প্রাপ্তির ৬৫টি চিঠি বিধানসভায় জমা দিলাম’‌, বড় দাবি পঞ্চায়েত মন্ত্রীর

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বরাদ্দের ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে রাজ্য–রাজনীতি। কারণ বিজেপি নেতা–মন্ত্রীরা দাবি করছেন, রাজ্য সরকার কোনও ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট (‌ইউসি)‌ জমা দেয়নি। ক্যাগ রিপোর্ট তুলে সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইউসি জমা না দেওয়ার কথা সংসদে জানিয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অথচ সমস্ত ইউসি কেন্দ্র পেয়েছে তার প্রাপ্তিস্বীকারের চিঠি রয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে। আর তাই কেন্দ্রের তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করলেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। এই সংক্রান্ত নথিও বিধানসভায় জমা দিয়েছেন তিনি।

এদিকে বিধানসভায় এই ইউসি নিয়ে সরব বন বিজেপি বিধায়করা। তার জবাব দিতেই রাজ্যের পাওনা আটকে রাখা এবং কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা বলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক মন্ত্রীরা। তাই পঞ্চায়েতমন্ত্রীর দাবি, ‘কেন্দ্রীয় সরকার যে ইউসি পেয়েছে তার ৬৫টি প্রাপ্তিস্বীকারের চিঠি স্পিকারের কাছে জমা দিয়েছি। বিজেপির বিধায়কেরা সেগুলি দেখে নিতে পারেন। ইউসি দেওয়া হয়নি বলে বিজেপি যা প্রচার করছে সেটা অসত্য। দিনক্ষণ–সহ সেই সার্টিফিকেটের প্রাপ্তিস্বীকারের চিঠিই তার প্রমাণ। ১০০ দিনের কাজের নিশ্চয়তা প্রকল্পের মতো একই ঘটনা ঘটেছে প্রধানমন্ত্রী আবাস প্রকল্পের ক্ষেত্রেও।’‌

অন্যদিকে বিজেপি নেতা থেকে বিধায়করা একই দাবি করে যাচ্ছেন। তার সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছেন দুর্নীতির অভিযোগ। রাজ্য বাজেটকে বলছেন, লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে তা করা হয়েছে। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের দাবি উড়িয়ে বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘এই নিয়ে যা বলার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী লোকসভায় বলেছেন। রাজ্য সরকারের কোনও কাজেই স্বচ্ছতা নেই। ভূরি ভূরি দুর্নীতি হয়েছে এই দুটি কেন্দ্রীয় প্রকল্পে। স্বচ্ছতা থাকলে সরকার সিএজি রিপোর্ট বিধানসভায় আনছে না কেন?’ পাল্টা পঞ্চায়েতমন্ত্রী এই অভিযোগের জবাবে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির সঙ্গে বাংলার তুলনা টেনেছেন। তাঁর কথায়, ‘উত্তরপ্রদেশ ও গুজরাটের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাতিল হওয়া ভুয়ো কার্ডের সংখ্যা বাংলার থেকে অনেক বেশি।’

আরও পড়ুন: ‘‌রেলের কত দুর্নীতি ধরতে পারতাম, ধরিনি কারণ একটাই’‌, বড় অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর

এছাড়া পঞ্চায়েতমন্ত্রী একটি হিসাবও দিয়েছেন বিধানসভায়। তাঁর দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, ২০২১–২২ অর্থবর্ষে উত্তরপ্রদেশে বাতিল হয়েছে ৫ লক্ষ ৯১ হাজার ৭৫ এবং ৪০ হাজার ২৯০টি কার্ড। আর ওই বছরে বাংলায় বাতিল হয়েছে ২৭ হাজার ৭৪১টি। তার পরের অর্থবর্ষে উত্তরপ্রদেশ এবং গুজরাতে বাতিল হয়েছে ২ লক্ষ ২ হাজার ১০৪ আর ১৩ লক্ষ ১হাজার ৮৬টি। তখন বাংলায় বাতিল হয়েছে ১৯ হাজার ৩৭৩টি কার্ড। সুতরাং বাংলায় অনেক কম ভুয়ো কার্ড বাতিল হয়েছে। আর তারপরেও ওই দুই রাজ্য টাকা পেয়েছে। কিন্তু বাংলার ক্ষেত্রে বঞ্চনা করা হয়েছে। যার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই বকেয়া টাকা গরিব মানুষকে দিয়ে দিচ্ছেন।