Saraswati Puja 2024: সরস্বতী পুজোয় দধিকর্মা আবশ্যিক কেন? রয়েছে বৈজ্ঞানিক কারণও

সরস্বতী পুজো, বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত। এই দিনটি বসন্ত উৎসবের সূচনা করে। এই উৎসব মাঘ মাসের শেষে অনুষ্ঠিত হয়, যা সাধারণত জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির শুরুর মধ্যে পড়ে। কথিত আছে এই দিনে ব্রহ্মা মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছিলেন। বসন্তের আগমনে আসে বসন্ত পঞ্চমীর উৎসব। বেশিরভাগ পূর্ব ভারতে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারে, এটি সরস্বতী পূজা হিসাবে পালিত হয়। একই সময়ে, রাজস্থানে, এই উৎসবের সময় জুঁইয়ের মালা পরানো হয়, যেখানে উত্তর ভারতে, বিশেষ করে পাঞ্জাবে, বসন্ত পঞ্চমী ঘুড়ি উৎসব হিসাবে পালিত হয়। আর বাঙালিরা এই পঞ্চমীতে দধিকর্মা খেয়ে সরস্বতী পুজো সম্পন্ন করেন। এই নিয়মের পিছনেও হয়েছেন মস্ত বড় দুই কারণ, ধর্মীয় এবং বৈজ্ঞানিক।

  • ধর্মীয় কারণ

শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে, শ্রীপঞ্চমীর দিন সকালে সরস্বতী পুজোর পরের দিন দধিকর্মা খাওয়া হয়। অর্থাৎ শীতলষষ্ঠীতে এই বিশেষ মিষ্টি খাওয়া হয়। শীতলষষ্ঠীর পুজোয় দেবীকে দধিকরম্ব বা দধিকর্মা ভোগ হিসাবে দেওয়া হয়। চিঁড়ে ও দই মিশিয়ে বানানো এই ভোগ দারুণ সুস্বাদু। বাচ্চা থেকে বুড়ো সকলেই খেতে ভালোবাসেন। দেবীর বিসর্জনের পুজোর পর দধিকর্মা খেয়েই পুজো সমাপ্ত করা হয়। এরপর সন্ধ্যায় যথারীতি প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।

ছোটবেলার স্মৃতি মাখা সরস্বতী পুজোর দধিকর্মা। পঞ্চমী শেষ করে ষষ্ঠীর সকালে দধিকর্মা অমৃতের সমান। যেকোনও পুজোর বিসর্জনের আগেই দধিকর্মা বানানো হলেও সরস্বতী পুজোয় এর গুরুত্ব আলাদা। দেবীর আরাধনা শেষে খই-দই-বাতাসা-সন্দেশ সহযোগে দধিকর্মা না থাকলে পুজো থেকে যায় অসম্পূর্ণ। সুগার থাকুক কিংবা অন্যান্য রোগভোগ, সবকিছুই উপেক্ষা করে অল্প হলেও দধিকর্মা খাওয়াই যায়। এর পিছনে অবশ্য রয়েছে এক বিশেষ বৈজ্ঞানিক কারণও।

  • বৈজ্ঞানিক কারণ

শাস্ত্রমতে, দেবীর আরাধনায় দধিকর্মা যতটা প্রয়োজনীয়, বৈজ্ঞানিক মতেও কিন্তু এর গুণ অপরিসীম। সরস্বতী পুজোর দিন সকাল থেকে অনেকেই উপোস করে দেবীর আরাধনা করেন। ছোটরা বিদ্যার আশায় খালি পেটে অঞ্জলি দিয়ে থাকে। অঞ্জলি দেওয়ার পর ফল মিষ্টি খেয়ে নেয় খালি পেটেই, এরপর পুজোর দিনের বিশেষ খিচুড়ি ভোগ তো আছেই। এছাড়াও নানান ভারি খাবার খাওয়া হয়ে যায় এদিন। পুরোহিতরাও উপোস করে দেবীর পুজো করেন। বাড়ির মেয়ে বউরাও রয়েছেন এই তালিকায়। এককথায়, পুজোর দিন পুরোপুরিভাবে অনিয়মই হয়ে যায়।

আর অনিয়মের বিপক্ষে গিয়ে শরীরকে সুস্থ করার কাজ করে দধিকর্মা। পুজোর পরের দিন বমি, ফুড পয়জেনের মতো সমস্যা এড়াতে দধিকোর্মা খাওয়া খুব ভালো। পেট ঠাণ্ডা করা থেকে শুরু করে ঠান্ডা লাগা, জ্বর সর্দি কাশির সমস্যা, এমনকি পক্সের মতো গুরুতর অসুস্থতা এড়াতে দধিকর্মার জুড়ি মেলা সত্যিই ভার। আর শুধুমাত্র এই কারণেই যেকোনো পুজোর পরের দিন দধিকর্মা খাওয়ার নিয়ম রাখা হয়েছে।