Idris Ali passed away: বিতর্কিত মন্তব্য, দলের সমালোচনা, মমতার ধমক, তবুও অপরিহার্য ছিলেন প্রয়াত ইদ্রিস আলি

শরীরে বাসা বেঁধেছিল ক্যান্সার। কোভিডের পর থেকেই নানারকম শরীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। ভাল করে চলা ফেরা করতে পারতেন না। চলতি বাজেট অধিবেশনে তিনি আসতে পারেননি। ভর্তি ছিলেন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার রাতে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রাক্তন সাংসদ তথা বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক ইদ্রিস আলি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। প্রবীণ নেতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে তৃণমূলে। শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধায়কের মৃত্যুতে শুক্রবার বাজেট অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছে।

রাজনৈতিক জীবন

মুর্শিদাবাদদের  ভগবানগোলার বিধায়ক ইদ্রিসের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় কংগ্রেস থেকে। বারবারই তিনি সোমেন মিত্রের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। দলও ছাড়েন সোমেন মিত্রের হাত ধরে। যোগ দেন তৃণমূলে। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জলঙ্গী আসনে তাঁকে প্রার্থী করে তৃণমূল। সেবার তিনি জিততে পারেননি। 

২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করা হয় বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে। বিপুল ভোটে  জয়ী হয় ইদ্রিস আলি। ২০১৯ সালে আর তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়নি। উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছিল। সেই উপর্নিবাচনে জিতে বিধানসভা যান তিনি। ২০২১ সালে ভগবানগোলায় প্রার্থী করা হয় তাঁকে। জিতে যান ইদ্রিস।

পড়ুন: নতুন পদ তৈরি করে রাজ্য পুলিশে আরও চাকরি! নিয়োগ করা হবে ৫২৯ সাব-ইনস্পেক্টরকে

দক্ষ আইনজীবী 

রাজনৈতিক জীবন ছাড়াও পেশাগত তিনি ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী। সুনামের সঙ্গে তিনি সেখানে কাজ করেছেন। সংবাদ শিরোনামে আসা বেশ কিছু মামলাও লড়েছেন তিনি। তাঁর পারিবারিক বেকারির ব্যবস্থা ছিল। সেই ব্যবসাও চালিয়েছে সমান তালে। তিনি আবার পাউরুটি প্রস্তুত কারকদের ইউনিয়ন করতেন। ‘অল ইন্ডিয়া মাইনরিটি ফোরাম’-এর রাজ্য সভাপতি ছিলেন ইদ্রিস আলি।

বিতর্কিত মন্তব্য, মমতার ধমক

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিতর্ক তাঁর নিত্য সঙ্গী ছিল। তা সে বিডিও-র চেয়ারে বসে দলীয় সভা করা হোক বা তবে দলের কাজকর্ম নিয়ে খুল্লমখুল্লা মন্তব্য করা, এ সবই ছিল বর্ণয়ম চরিত্রে বৈশিষ্ট্য। 

বিরোধী দলের বিরুদ্ধে কুকথা বলা জন্য তিনি মমতা কাছে ধমকও খেয়েছেন। এক কংগ্রেস নেতার মমতাকে নিয়ে মন্তব্যের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বই লিখে যদি কেউ অপপ্রচার করার চেষ্টা করে, তার বা তাদের হাত-পা কেটে নেওয়া হবে! জিভ কেটে নেওয়া হবে।’ আবার বিরোধীদের সমালোচনা করতে গিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘অসভ্য বর্বর বিজেপি, জামা-খোলা কংগ্রেস অধীর চৌধুরী, দুধে-সোনা বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষেরা আবার যদি মিথ্যা ভাবে বই প্রচার করে, তাদের মুখটা পাল্টে দেওয়া হবে।’ তাঁকে সাবধান করে দিয়ে মমতা বলেন, ‘তুমি মুখ খারাপ করবে না! তোমার জন্য দলের নাম খারাপ হচ্ছে!’ 

সাগরদিঘি উপনির্বাচনের আগে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন ইদ্রিস। লালগোলার বিধায়ক আখরুজ্জামানের সঙ্গে ট্রেনে সফর করার সময় সেই অসন্তোষের কথা তাঁর কাছে প্রকাশও করেন। কিছুদিন পরে দলনেত্রী তাঁর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন,’ তুমি ভেবো না ভগবানগোলা থেকে ট্রেনে চেপে তুমি কী বলছ, সেটা কালীঘাটে পৌঁছয় না!’

তবে এত সব বিতর্কের মাঝেও তিনি শীর্ষ নেতৃত্বের সুনজরেই ছিলেন বরাবর। দলে তাঁর গুরুত্ব কমেনি ছিঁটে ফোটাও।