Pregnancy test: মহিলা বন্দিদের বাধ্যতামূলক ‘গর্ভবস্থা পরীক্ষা’-র আবেদন, সরাসরি ‘না’ বলল হাইকোর্ট

বাংলার সমস্ত মহিলা বন্দিদের জন্য বাধ্যতামূলক ‘গর্ভবস্থা পরীক্ষা’ দাবি করে একটি জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত দ্ব্যর্থহীনভাবে ‘না’ বলে স্পষ্ট করে দিয়েছে, বিচারধীন হলেও কারও গোপনীয়তায় ‘অপ্রয়োজনীয় অনুপ্রবেশের’ অনুমতি আদালত দিতে পারে না।

মামলার শুনানিতে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ‘ব্যাপারটা এমন, রাস্তায় ইভটিজাররা রয়েছে তাই সব মহিলাদের কারাগারের মধ্যে রাখতে হবে।’ শুনানির সময় হাইকোর্ট জোর দিয়ে বলে, ‘বিচারপ্রক্রিয়ায় কোনও গৌণ নির্যাতন হওয়া উচিত না।’ কয়েদিদেরও মর্যাদার অধিকার রয়েছে।

‘আদালত বন্ধু’ তাপস ভঞ্জ গত ৮ ফেব্রুয়ারি জানান, আদালতে থাকাকালীন মহিলা বন্দিরা গর্ভবতী হচ্ছেন। তিনি কারাগারে ১৯৬টি শিশুর জন্মের কথা উল্লেখ করেন। তিনি রাজ্যের সংশোধনাগারগুলিতে পুরুষ কর্মচারীদের মহিলাদের এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করারও দাবি জানিয়েছিলেন। ৯ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট এই অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব দেয়। রাজ্য কারাগার দফতর এবং রাজ্য মহিলা কমিশনের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটির তদন্তে জানা গিয়েছে আরও ১৮১ জন মহিলা বন্দী তাদের সন্তানদের সঙ্গে থাকেন। দেখা যায় যে তাঁরা জেলে যাওয়ার আগে বা প্যারোলে থাকার সময় গর্ভধারণ করেছিল।

আরও পডুন। পকেট পার্ক করে দূষণ মোকাবিলায় নামছে বিধাননগর পুরসভা, বায়ুদূষণ রুখবে বিশেষ যন্ত্র

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি, একজন আদালত বন্ধু সুপ্রিম কোর্টকে বলেন, গত চার বছরে বাংলার কারাগারে ৬২টি শিশুর জন্ম হয়েছে। যে সব মহিলা বন্দিরা প্রসব করছেন তাঁদের অধিকাংশই আদালতে আনার সময় গর্ভবতী ছিলেন। কিন্তু তার পরবর্তীকালে এই জনস্বার্থ মামলায় আদালত তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে।

শুনানিতে বিচারপতি বাগচি বলেন, ‘এজন মহিলা বিচারাধীন বন্দি হিসাবে কারাগারে আসছে। তাঁর গোপনীতায় অনুপ্রবেশের মাত্রা তাঁর বিচারাধীন বিষয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। আমরা তাঁর গোপনীয়তায় অপ্রয়োজনীয় অনুপ্রবেশের প্রস্তাব দিতে পারি না কারণ তিনি একজন সন্দেহভাজন এবং তাঁকে বিচারাধীন হিসাবে আনা হয়েছে।’

বেঞ্চ বলে,’কারাগারকে বন্দীদের উপর অত্যাধিক নজরদারির বিষয়’ করা উচিত নয়। আমরা অত্যাধিক বিধি নিষেধে না যাওয়ার পক্ষেই মত দেব। আসুন আমরা আইনকে আনুপাতিক ভাবে অনুসরণ করি। যদি এতে ভাল ফল হয় তবে আমরা সেই পথ অনুসরণ করব।’

রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত, আদালতকে কারাগারে গর্ভধারণের বিষয়ে মন্তব্য বন্ধ করার অনুরোধ করেন। তাঁর যুক্তি ছিল, এর ফলে কারাগারে জন্ম নেওয়া শিশু ও তার পরিবারের উপর প্রভাব পড়বে। জবাবে আদালত বলে, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে আদালতের আধিকারিকরা এমন মন্তব্য না করার জন্য দায়বদ্ধ থাকবেন যা বিচার বিভাগের গরিমা ও মর্যাদাকে অবনমিত করবে।