International Mother Language Day 2024: স্কুলে মাতৃভাষা দিবস নিয়ে কিছু বলতে হবে? বা ছোট রচনা লেখার আছে? নমুনা রইল এখানে

২১ ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। মাতৃভাষা যে কোনো দেশের জাতীয় পরিচয় ও সাংস্কৃতিক আত্মমর্যাদার প্রতীক। ২১শে ফেব্রুয়ারিকে মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের রেজোলিউশন প্রথম গৃহীত হয় বাংলাদেশের ভাষা আন্দলনের মাধ্যমে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থার সাধারণ পরিষদ UNESCO ১৯৯৯ সালের নভেম্বরে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদযাপনের জন্য একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং ২০০২ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এটিকে স্বাগত জানায়।

আজও সেই 21শে ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বিভিন্ন স্কুলে কিংবা কলেজে পালিত হচ্ছে মায়ের মুখ থেকে শেখা ভাষা মাতৃভাষা দিবস। এমন পরিস্থিতিতে অনেককেই পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিতে হয়। কিন্তু কী বলবেন এখানে? কী কী বিশেষ তথ্য জানা দরকার? সবটাই জেনে নিন এখান থেকে।

মনে রাখবেন, বক্তৃতার শুরুটাই আসল। শুরুর আগে সংক্ষেপে নিজের পরিচয় দেওয়ার পাশাপাশি অতিথি এবং শ্রোতাদের শুভেচ্ছা জানাতে একেবারেই ভুলবেন। আজ আপনার বক্তৃতার মূল বিষয় হওয়া উচিত মাতৃভাষা দিবসের গুরত্ব। আর মাতৃভাষা দিবসে ভাষণ দিতে হলে সবার আগে মাতৃভাষার ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হবে। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ভারতের ভাষা প্রকৃতির বিষয়েও জানা জরুরি। বিলুপ্তপ্রায় ভাষা সম্পর্কেও জেনে রাখুন। তবেই তা সকলের জন্য একবাক্যে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

  • ফর্মালিটি সম্পূর্ণ করে শুরু করুন এইভাবে

মাতৃভাষা আমাদের পরিচয়, একে হারিয়ে যেতে দেবেন না। মাতৃভাষাকে উন্নীত করার সমস্ত পদক্ষেপ শুধুমাত্র ভাষার বৈচিত্র্যময় বহুভাষিক শিক্ষাকে উত্সাহিত করার জন্য নয় বরং বিশ্বকে সচেতনতা বিকাশ, বোঝাপড়া এবং সংলাপের ভিত্তিতে সংহতি প্রদর্শনের জন্য উৎসাহিত করা।

এরপরেই বলুন ভাষা বিলুপ্তির কথা। প্রতি ১৪ দিনে, একটি ভাষা সারা বিশ্বে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে এবং আমাদের দেশ ভারতেও পরিস্থিতি ভাল নয়। ভারতে মোট ১৯,৫০০টি ভাষা রয়েছে বলা হয়, যার মধ্যে প্রায় ২,৯০০টি বিলুপ্তির পথে।

একথা সত্য যে মাত্র ১০০ বা তার কম মানুষ এই ভাষায় কথা বলে। মাত্র ১২১টি ভাষায় ১০,০০০ জনেরও বেশি মানুষ কথা বলে। আশ্চর্যের বিষয় হল যে ১২১টি ভাষার মধ্যে ৯৯টি ভাষায় ভারতের মাত্র ৩.৩ শতাংশ মানুষ কথা বলে এবং বাকি ২২টি ভারতের ৯৬.৭ শতাংশ মানুষ কথা বলে। আর এই ২২টি ভাষাই ভারতের সংবিধানের অষ্টম তফসিলে সরকারি ভাষার মর্যাদা পেয়েছে।

এই পরিসংখ্যানগুলি আমাদের স্পষ্টভাবে বলে যে আমাদের মাতৃভাষা সম্প্রসারণের জন্য পূর্ণ প্রচেষ্টা চালাতে হবে এবং আমরা যদি তা না করি তবে আমাদের ভাষাও একই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে যা প্রতি ১৪ দিনে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।

  • ছোটখাটো ৩ বক্তৃতার নমুনা

১) প্রিয় বন্ধুরা, মাতৃভাষা দিবস নিজের ভাষাকে উদযাপনের দিন। প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি আমরা সবাই মাতৃভাষা দিবস পালন করি। ভাষা আন্দোলন করে মাতৃভাষাকে যোগ্য সম্মান প্রদানে যাঁরা শহিদ হয়েছেন, তাঁদের সম্মানে গর্বের পালিত হয় এই বিশেষ দিন।

২) পৃথিবীর কোনো দেশেই বিদেশি ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়া হয় না। বিশ্ব দৃষ্টিকোণ থেকে, প্রায় সব উন্নত দেশেই শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশাসনের জন্য যে ভাষা ব্যবহার করা হয় তা স্থানীয় ভাষা এবং আমাদের দেশকেও একইভাবে মাতৃভাষাকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। বিনোবা ভাবে, মহাত্মা গান্ধী, পন্ডিত মদন মোহন মালব্য, ডক্টর এ.পি.জে আবদুল কালামের মতো ভারতের মহাপুরুষ ও শিক্ষাবিদরাও একই কথা বলে গিয়েছেন।

৩) মহাত্মা গান্ধী তাঁর নবজীবন পত্রে লিখে গিয়েছেন- এই বিদেশী ভাষার (ইংরেজি) মাধ্যমটি শিশুদের মনকে দুর্বল করে দিয়েছে, তাদের স্নায়ুর উপর অপ্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি করেছে, তাদের পচনশীল করে তুলেছে এবং মূল কাজ ও চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণরূপে অক্ষম করে তুলেছে।