মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করলেন লালু–অখিলেশ, কংগ্রেস–তৃণমূলের জোট নিয়ে কথা

বাংলায় কংগ্রেস–তৃণমূলের মধ্যে জোট কি হবে?‌ এই প্রশ্ন এখন ভেসে উঠেছে রাজ্য– রাজনীতির অলিন্দে। কারণ এবার এই জোট যাতে হয় তার জন্য মধ্যস্থতা করতে এগিয়ে আসছেন আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদব এবং সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। বিজেপি বিরোধী জোট অন্যান্য রাজ্যে হয়ে গেলেও বাংলায় কিছুতেই হচ্ছে না। কারণ এখানের কংগ্রেস নেতারা বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে গালিগালাজ করেই চলেছেন। তার উপর বামেদের সঙ্গে জোট করে লড়বেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। আর বাংলায় ৪২টি আসনেই তৃণমূল কংগ্রেস একা লড়াই করবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং জোট বিশ বাঁও জলে বলে মনে করা হচ্ছিল।

এবার এই পরিস্থিতি পাল্টাতে লালুপ্রসাদ যাদব ও অখিলেশ যাদব উভয়ই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ার বিষয়ে টেলিফোন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে সূত্রের খবর। কংগ্রেসের নতুন করে পাঁচটি আসনের দাবির কথাও তাঁরা তৃণমূল সুপ্রিমোকে জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। এখন ১১টি রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের জোট হলে বিজেপির বাড়তি চাপ তৈরি হবে। কংগ্রেসকে অনেকটা জায়গা ছেড়েছিল তৃণমূল। কিন্তু কংগ্রেস উলটে অপমান করেছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। এই নিয়ে বিস্তারিত লালু– অখিলেশকে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে সূত্রের খবর।

আরও পড়ুন:‌ একশো দিনের কাজের টাকা ছাড়ল রাজ্য সরকার, জিটিএ–সহ সব জেলা পাবে রাত পোহালেই

এদিকে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জোট গঠনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি আন্তরিক রয়েছেন আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ ও উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ। নীতীশ কুমার এখন জোট ছেড়ে এনডিএ জোটে ফিরেছেন। বিহারে কংগ্রেস, আরজেডি এবং বামপন্থী দলগুলির মধ্যে আসন সমঝোতা হয়ে যাবে। কিন্তু বাংলায় তা না হলে ভুল বার্তা যাবে ইন্ডিয়া জোট নিয়ে। ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশে ১৭টি আসন কংগ্রেসকে ও একটি আসন তৃণমূল কংগ্রেসকে ছেড়ে দিয়েছে সমাজবাদী পার্টি। তাই এখন তাঁরা চান বাংলায় জোট হোক কংগ্রেস–তৃণমূলের। তাই তাঁরা জোট ইন্ডিয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধরে রাখতে চেষ্টা করছেন।

অন্যদিকে তবে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও আশাবাদী জোট হবে তৃণমূলের সঙ্গে। তবে বাংলায় কংগ্রেস যে বাড়তি আসন চায় তা দিতে নারাজ তৃণমূল। কংগ্রেস দু’টির বেশি আসন জেতার অবস্থায় নেই বলে মনে করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বহরমপুর আর মালদা দক্ষিণ আসন দুটি দিতে রাজি তৃণমূল। কিন্তু আরও তিনটি চাইছে কংগ্রেস। যা দিতে রাজি নয় তৃণমূল। তাই একক লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস। এই আবহে এমন ফোন বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তবে এসবের পরও কংগ্রেস–তৃণমূল জোট হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই। কারণ ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে বহরমপুর লোকসভাতেই তৃতীয় শক্তি কংগ্রেস। তাই এখন কংগ্রেস একটিও লোকসভা আসনের দাবি করার জায়গায় নেই। তৃণমূল কংগ্রেস ৪২টি আসন লড়াই করতে চাইছে।