চিনকে ঠেকাতে বড় প্রকল্পে কাজ কেন্দ্রের, সেবক–রংপো রেল পথ তৈরিতে জোর

এই বছরেই চিন সীমান্ত এলাকা সিকিমকে রেলপথে জুড়ে ফেলার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। কারণ চিন বরাবর ভারতের ভূখণ্ড দখল করতে আগ্রাসী ভূমিকা নিয়েছে। তাই পাল্টা চাপ বাড়াতে এই কৌশল নেওয়া হয়েছে। এই কাজ আগেই করার কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে তা থমকে গিয়েছিল। করোনাভাইরাস, শ্রমিক সমস্যা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য কাজ বারবার ব্যাহত হয়েছে। এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। তাই এখন আর দেরি করা হবে না। দ্রুত এই কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তবে আগামী ২০২৪ সালেন ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সেটা শেষ হবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান রেলের অফিসাররা।

এদিকে প্রায়ই চিনের পক্ষ থেকে বলতে শোনা যায়, অরুণাচল প্রদেশ নাকি ওদের। আবার কখনও বলে থাকে প্যাংগং লেক নাকি চিনের। তারপর সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ার নজির রয়েছে একাধিকবার। দু’‌পক্ষের মারামারি পর্যন্ত হয়েছে দুই দেশের সীমান্তে। এইসব চিনের ‘চোখরাঙানি’ দেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেবক–রংপো রেল প্রকল্পের কাজে দ্রুততা আনা হবে। এই কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এই কাজ সম্পন্ন হলে সাধারণ সিকিমবাসী রেলপথ ব্যবহার করতে পারবেন। আর ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে এটাই হয়ে উঠবে অন্যতম ‘লাইফ লাইন’। চিনের কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। তাই এখন এই রেল প্রকল্পের খরচ বাড়িয়েও তা করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা খরচ হতে চলেছে।

আরও পড়ুন:‌ ব্রিগেড সমাবেশের ডাক দিল তৃণমূল কংগ্রেস, মার্চ মাসেই বিরাট সভার আহ্বান অভিষেকের

অন্যদিকে এই প্রকল্প যে জায়গা দিয়ে হতে চলেছে সেটা অত্যন্ত দুর্গম এলাকা। চিন ওপারে কড়া নজর রাখে। আর ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। এখানে বারবার কাজ করতে গিয়ে থমকে গিয়েছে নানা কারণে। শ্রমিকের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। তবে এই সব নানা কারণে প্রকল্পের খরচ আগের থেকে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। তাই ২০২৪ সালের মধ্যেই এই কাজ শেষ করতে চায় রেলমন্ত্রক। এই বিষয়ে রেল নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থার কার্যনির্বাহী বাস্তুকার মাহিন্দার সিং বলেন, ‘আমরা চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করব।’

এছাড়া সেবক থেকে রংপো রেলপথেই বিষয়টি থেমে থাকছে না। রংপো থেকে গ্যাংটক এবং গ্যাংটক থেকে নাথু লা পর্যন্ত লাইন পাতার জন্য আরও দু’টি সমীক্ষা ইতিমধ্যেই শুরু করেছে রেল। যদিও সেগুলি কবে শেষ হবে?‌ সেটা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। রেল সূত্রে খবর, শিলিগুড়ি থেকে সিকিমের রাস্তা একটাই। সেটা হল— ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। বর্ষায় বন্ধ হয়ে যায় নানা সময়ে। এবার শীতকালেই সিকিম বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। তাই এই রেলপথ সেনাবাহিনীর সুবিধার্থে কাজে আসবে। এই বিষয়ে উত্তর–পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, ‘আমরা নিয়মিত প্রকল্পের খোঁজ নিচ্ছি। যাতে দ্রুত কাজ শেষ করে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই চালু করা যায়।’‌ এই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় নজরদারি বাড়িয়ে নিয়মিত রিপোর্ট নিচ্ছে রেল। তাহলে কি চলতি বছরের মধ্যে কাজ শেষ হবে? সময় উত্তর দেবে।