অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে চাকরিহারারা, খারিজের আর্জি

নবম–দশম চাকরিহারাদের এবার নতুন আবেদন জমা পড়ল কলকাতা হাইকোর্টে। এই আবেদন নিয়ে এবার জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাই তিনি বিচারপতি থাকাকালীন তাঁর দেওয়া নির্দেশ খারিজের আর্জি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন চাকরিহারারা। নবম–দশম, গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি’‌র চাকরিহারাদের নতুন আবেদন কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে জমা পড়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা আছে।

এদিকে এই বিষয়টি নিয়ে মামলাকারীদের দাবি, বিচারপতি পদে থাকার সময় সরাসরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে রায় দিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি কখনই বিষয়টি নিয়ে নিরপেক্ষ বিচার করেননি। রাজনীতিতে যোগদানের আগে শুধু নিজের ভাবমূর্তি গড়ে তোলার জন্য এমন রায় দিয়েছেন। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে বিচারপতি থাকাকালীন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যে নির্দেশগুলি দিয়েছিলেন সেগুলির কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। এমনটাই দাবি করেছেন মামলাকারীরা। তাই সেই নির্দেশগুলি খারিজ করার দাবি তুলেছেন চাকরিহারাদের বড় অংশ। বিচারপতি থাকাকালীন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নানা নির্দেশ হইচই ফেলে দিয়েছিল। তার মধ্যে চাকরি বরখাস্তের নির্দেশও ছিল।

আরও পড়ুন:‌ ‘আমার ব্যক্তিগত কাজ ছিল’‌, প্রধানমন্ত্রীর সভায় এলেন না কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু

অন্যদিকে মঙ্গলবার বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। সে কথা তিনি নিজেই বলেছেন। তাই তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই চাকরি দুর্নীতি মামলায় তাঁর একাধিক নির্দেশ ঘিরে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই সরব হয়েছিলেন। এবার নতুন আবেদন করলেন চাকরিহারাদের বড় অংশ। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে পর পর গুরুত্বপূর্ণ রায় দেওয়া বিচারপতি চাকরিপ্রার্থীদের কাছে ‘ভগবান’ হয়ে উঠেছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে সেই ব্যক্তি বিচারপতির পদ ছেড়ে রাজনীতিতে যোগদান করলেন। তাই তাঁর রায় নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।

এছাড়া তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাজ্যের বিরুদ্ধে একের পর এক রায় দিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এখন তিনি প্রাক্তন বিচারপতি। একদা চাকরিপ্রার্থীদের ‘ভগবান’ হয়ে ওঠা প্রাক্তন বিচারপতিকে বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘সুবিধাবাদী’ বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার একই দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে আর্জি জানিয়েছেন চাকরিহারারা। এই বিষয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‌ওনার কথায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে উনি যখন বিচারপতির আসনে বসে রায় দিয়েছেন, তখন বিজেপির সঙ্গে ওনার যোগাযোগ ছিল। সত্যিটা বলেছেন বলে ওনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’‌