সরকারি কর্মীকে ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্টের জন্য শাস্তি দেওয়া যাবে না: মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট

মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট এবার একটা বড় রায় দিয়েছে। যা কিনা লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। প্রাইভেট হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কোনও কিছু সরকারি পদাধিকারি বা কর্মী পোস্ট করলে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না। এই রায়ই দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট। অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের বাইরে অনেক সরকারি কর্মী–অফিসারদের যোগ থাকে বেসরকারি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। সেখানে তাঁরা নানা বিষয় পোস্ট করে থাকেন। সেটা রাজনৈতিকও হতে পারে। আবার সেটা অরাজনৈতিকও হতে পারে। কিন্তু তার জন্য কোনও সরকারি কর্মী বা অফিসারকে কড়া শাস্তি দেওয়া যাবে না। কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না।

এদিকে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট সূত্রে খবর, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি বিবেক রুশিয়া তাঁর পর্যবেক্ষণে এমনটাই জানিয়েছেন। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘‌কোনও বার্তা, সেটা টেকস্ট, ছবি বা ভিডিয়ো বেসরকারি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠানো হলে তাকে কখনই বলা যাবে না পাবলিক করা হয়েছে।’‌ এই পর্যবেক্ষণে খুশি সরকারি কর্মীরা। কারণ তাঁদের সরকারি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়াও বহু বেসরকারি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ থাকে। সেখানে খোলামেলা আলোচনা হয়। নানা ছবি, টেকস্ট বা ভিডিয়ো শেয়ার করা হয়। তার জন্য একজন সরকারি কর্মী বা অফিসারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা যেতে পারে না। এমনটাই বোঝানো হয়েছে পর্যবেক্ষণে।

আরও পড়ুন:‌ আজ শহরের বুকে মমতা–অভিষেকের মিছিল, ‘‌জনগর্জন’‌ সভার আগে মিলবে বড় বার্তা

অন্যদিকে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট এই পর্যবেক্ষণ শোনানোর পিছনে রয়েছে একটি ঘটনা। সেটি হল, আইডি মাকরানি নামে এক সরকারি কর্মী আদালতে তাঁর সাসপেনশন এবং চার্জশিট নিয়ে আবেদন করেন। তিনি আলিরাজপুর জেলার বাসিন্দা। তাঁকে সাসপেন্ড করা হয় এবং চার্জশিট দেওয়া হয় যেহেতু তিনি ‘‌আপত্তিকর রাজনৈতিক’‌ বার্তা দেন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। কিন্তু আদালত জানিয়ে দেয়, এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বার্তা দেওয়া কোনও নিয়ম বহির্ভূত কাজ নয়। এই পর্যবেক্ষণের পরই সরকারি কর্মীরা উল্লসিত হয়ে ওঠেন। কারণ প্রত্যেকেরই ব্যক্তিগত এবং বেসরকারি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ রয়েছে।

এই বিষয়ে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক রুশিয়া বলেন, ‘‌এটা একটা ব্যক্তিগত এবং বেসরকারি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। যেখানে কোনও সরকারি অফিসের কাজ হয় না।’‌ রাজ্য সরকার এই বিষয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি বা স্ট্যাটুটারি জারি করতে পারে না সরকারি কর্মীদের ক্ষেত্রে। ব্যক্তিগত বা বেসরকারি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ থাকলে কোনও কড়া পদক্ষেপ বা শাস্তি দেওয়া যায় না। আইডি মাকরানি আলিরাজপুর জেলা পঞ্চায়েত অফিসের কর্মী। তাঁর ফোন থেকে একটি মেসেজ ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পৌঁছে যায়। তাঁর জন্য তাঁকে সোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। যার জবাবে তিনি জানান, তাঁর ছোট্ট মেয়ে ফোন ঘাঁটতে গিয়ে এটা ঘটেছে। এটা ইচ্ছাকৃত ঘটেনি। কিন্তু এই কথায় চিড়ে ভেজেনি। তাই তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। যার রায় দিল মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট।