‘আমার ব্যক্তিগত কাজ ছিল’‌, প্রধানমন্ত্রীর সভায় এলেন না কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু

সামনে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে বাংলায় সফরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইতিমধ্যেই তিনটি জনসভা করে ফেলছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আরামবাগ কৃষ্ণনগর এবং বারাসত। এখানে কৃষ্ণনগর এবং বারাসত দুটোই মতুয়া অধ্যুষিত এলাকা। কিন্তু কোনও সভাতেই মতুয়াদের নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা নিয়ে বা আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হওয়া নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি নরেন্দ্র মোদী। তার উপর মতুয়াদের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ এনেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ তথা মতুয়াদের ঘরের মেয়ে মমতাবালা ঠাকুর। এই আবহে প্রধানমন্ত্রীর মতুয়াদের বিষয়ে চুপ করে থাকা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। যেখানে মতুয়া ভোট একটা ফ্যাক্টর।

এদিকে বারাসতের সভায় নারীশক্তি সমাবেশের মঞ্চে মতুয়া শব্দটাও উচ্চারণ করেননি প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির নেতারা বলেছিলেন, সিএএ কার্যকর হয়ে গিয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে এই রাজ্যে তা হয়ে যাবে। কেউ ঠেকাতে পারবে না। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সভাতে মতুয়াদের উপস্থিতি ছিল নগণ্য। এমনকী প্রধানমন্ত্রীর সভায় যোগ না দিয়ে ব্যক্তিগত কাজের কারণ দেখিয়ে অনুপস্থিত ছিলেন বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিমন্ত্রী। তাই নরেন্দ্র মোদীর সভায় শান্তনু ঠাকুরের অনুপস্থিতি গুঞ্জন তৈরি করেছে। তবে শান্তনু ঠাকুরের ভাই, গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর মোদীর সভায় এসেছিলেন। যদিও মতুয়াদের বিরাট সংখ্যা বিশেষ চোখে পড়েনি। মতুয়াদের কাঁসর, ডঙ্কা, নিশান নিয়ে সভায় আসা ভিড় দেখা যায়নি প্রধানমন্ত্রীর এই সভাতে।

আরও পড়ুন:‌ সরকারি কর্মীকে ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্টের জন্য শাস্তি দেওয়া যাবে না: মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট

অন্যদিকে রাজ্যের মতুয়া অধ্যুষিত কেন্দ্রগুলির মধ্যে রয়েছে— রানাঘাট, বনগাঁ এবং কৃষ্ণনগর। নির্বাচনের নির্ঘণ্টের প্রাক্কালে দু’দফায় তিনটি রাজনৈতিক সভা সেখানেই করলেন প্রধানমন্ত্রী। অথচ একটি সভাতেও মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে কিছু বললেন না। তাই এই উপেক্ষায় ক্ষোভ বেড়েছে মতুয়াদের মধ্যে বলে খবর। লোকসভা নির্বাচনে বাংলার ৪২টি আসনই জেতার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে এমন আচরণে বড় প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আবার সূত্রের খবর, নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগেই ঘোষণা করে দেওয়া হবে সিএএ’‌র কথা। তাই কিছু বলেননি মোদী। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে মতুয়াদের নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার বিষয়টি সামনে নিয়ে এসে বনগাঁ, রানাঘাট কেন্দ্রে বাজিমাত করেছিল বিজেপি। পাঁচ বছর কেটে গেলেও সিএএ কার্যকর করা হয়নি। আর বিজেপির প্রতি মোহভঙ্গ হয়ে দূরত্ব বাড়িয়েছে মতুয়ারা। সেই আঁচ টের পেয়েছেন শান্তনুও।

তাহলে কোথাও কি তাল কাটল?‌ এখন রাজ্য–রাজনীতিতে এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও এই বিষয়ে শান্তনু ঠাকুর বলেছেন, ‘আমার ব্যক্তিগত কাজ ছিল। তার জন্যই বারাসতের সভায় যেতে পারিনি। প্রধানমন্ত্রী যা ভাল মনে করেছেন, তাই বলেছেন। এই নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। সময় হলে নিশ্চয়ই বলবেন।’ পাল্টা রাজ্যসভার সংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর বলেন, ‘আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করা নিয়ে কিছু বলেননি প্রধানমন্ত্রী। এভাবে অপমান করেছেন মতুয়াদের। ক্ষুব্ধ মতুয়ারা বিজেপির থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। যার জবাব মতুয়ারা ভোটে দেবেন।’