আগুনে পোড়া গন্ধ ভুলে বাহারি ইফতার কিনতে সরব বেইলি রোড

কয়েক দিন আগেই বেইলি রোডে ঘটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। প্রাণ হারায় প্রায় অর্ধশত মানুষ। সেই ক্ষতের দাগ শুকাতে না শুকাতেই এসে গেছে পবিত্র রমজান মাস। আবার ইফতার-সেহরির আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মানুষেরা। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ভুলে গিয়ে মানুষজন ভিড় করেছেন বাহারি ইফতার বিক্রির দোকানগুলোতে।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাজধানীর বেইলি রোডের বিভিন্ন খাবারের দোকান ঘুরে দেখা যায় ইফতার কেনার এই দৃশ্য।

কয়েক দিন আগের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তেমন কোনও প্রভাব ফেলেনি বেইলি রোডের ইফতারের দোকানগুলোতে। সেখানে আগের মতোই চলছে বাহারি খাবারের বেচাকেনা।

বিভিন্ন রকমের কাবাব, চপ, পাকোড়া, দই বড়া, কিমা পরোটা, আলু পরোটা, লুচি, চিকেন রোল, ভেজিটেবল রোল, চিকেন বিরিয়ানি, বিফ বিরিয়ানি, বিফ তেহারি, ফালুদা, হালিম, জিলাপি, বিভিন্ন রকম মিষ্টি ও ফলের জুসসহ রকমারি ইফতার সাজিয়ে বসেছে বেইলি রোডের খাবারের দোকানগুলোতে।

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বেইলি রোডের সেই ভবনটি গ্রিন কোজি ভবনের অপর পাশে ৫০ গজের মধ্যেই অবস্থিত জ্যাগেরি রেস্টুরেন্ট। সেখানে দেখা যায় মানুষের সরব উপস্থিতি। চলছে ইফতার কেনার ধুম। খাবারের পাত্রগুলো খালি হচ্ছে, আবার সেগুলো পূর্ণ করছেন বিক্রেতারা। হালিমের বড় ডেকচিতে শব্দ তুলে ক্রেতা আকর্ষণ করছেন তারা। বিক্রিও হচ্ছে দেদার।

বেইলি রোডের খাবারের দোকানগুলোতে ছিল মানুষের সরব উপস্থিতি এই রেস্টুরেন্টের এক বিক্রেতা বলেন, আমাদের বিক্রি ভালোই হচ্ছে। সবসময় রোজায় যেমন ছিল এখনও তেমনই আছে।

রস-এ দেখা যায় মানুষ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে মিষ্টি কিনতে। ক্রেতার লাইন দোকানের ভেতর থেকে ফুটপাতে গিয়ে পৌঁছেছে।

আগুনে পোড়া গন্ধ ভুলে বাহারি ইফতার কিনতে সরব বেইলি রোড এসময় কথা হয় নূরুল ইসলাম নামে এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, আজকে প্রথম রোজা, বাসার সবার সঙ্গে ইফতার করবো। তাই মিষ্টি, দই আর কিছু ইফতার কিনতে এসেছি।

একই চিত্র দেখা যায় বস সুইটস-এ। এখানেও ক্রেতার দীর্ঘ লাইন। ক্রেতা রণ বলেন, এই দোকানের রেশমি জিলাপিটা খুবই মজার। তাই নিতে চলে এসেছি।

আগুনে পোড়া গন্ধ ভুলে বাহারি ইফতার কিনতে সরব বেইলি রোড ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টারের পার্কিংয়ের জায়গায় ব্যবস্থা করা হয়েছে ক্যাপিটাল ইফতার বাজারের। এখানে জিলাপি, হালিম, নানা রকমের কাবাবসহ প্রায় সব রকমের ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানেও রয়েছে মানুষের সরব উপস্থিতি। 

আগুনে পোড়া গন্ধ ভুলে বাহারি ইফতার কিনতে সরব বেইলি রোড এখানকার বিভিন্ন দোকানের বিক্রেতারা জানান, তাদের বিক্রি ভালোই হচ্ছে প্রথম রোজা অনুযায়ী। সামনে ক্রেতা আরও বাড়বে বলেও তারা জানান।

কফিলাইম জুস ও স্মুদি কর্নারে দেখা যায় কর্মীরা বিভিন্ন ঠান্ডা পানীয়, ফলের জুস বিক্রিতে ব্যস্ত।

ক্রেতার লাইন দোকানের ভেতর থেকে ফুটপাতে গিয়ে পৌঁছেছে বেইলি রোডের শান্তিনগরের দিকের শুরুতে এক রেস্টুরেন্টে বিক্রির ব্যস্ততায় ফুটপাত দিয়ে হাঁটাও কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছিল। মনে হয় মানুষের ইফতার কেনার উৎসব চলছে।

রেস্টুরেন্টগুলোতে বিক্রির ব্যস্ততায় ফুটপাত দিয়ে হাঁটাও কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছিল ইফতার কেনার এই চিত্র ছিল বেইলি রোডজুড়েই। মানুষের ব্যস্ততা আর কেনাকাটায় মুখর ছিল আশপাশের এলাকা। কিন্তু এই বেইলি রোডেই কঙ্কালসার হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে গ্রিন কোজি কটেজ ভবন। যার পোড়া গন্ধ এখনও বাতাসে রয়েছে, মনে হয় ভেসে আসছে মারা যাওয়া সেই অর্ধশত মানুষের আর্তনাদ। ইফতার সামগ্রী কিনতে দুপুর থেকেই রেস্টুরেন্টগুলোতে ভিড় দেখা গেছে

ছবি: নাসিরুল ইসলাম