বামমনস্ক প্রার্থীকে বিচারপতি পদে নিয়োগে আপত্তি কেন্দ্রের, ধোপে টিকল না সুপ্রিম কোর্টে

বিচারপতি পদের একজন প্রার্থীকে শুধুমাত্র তাঁর রাজনৈতিক অতীতের কারণে বঞ্চিত করা যাবে না। এক প্রার্থীকে কেরল হাইকোর্টের বিচারপতি পদে নিয়োগ নিয়ে কেন্দ্রের আপত্তি খারিজ করে এমনটাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম। কেরল হাইকোর্টের আইনজীবী মনোজ পুলাম্বি মাধবনকে বিচারপতি পদের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম। কিন্তু, তিনি সিপিএম মনস্ক। এমন অভিযোগ তুলে তাঁকে বিচারপতি করার ক্ষেত্রে আপত্তি তুলেছিল কেন্দ্রীয় সরকার।

আরও পড়ুনঃ লোকসভা ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিয়ে চরমে জল্পনা, শুক্রে SC শুনানি

জানা গিয়েছে, কেরল হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগের জন্য সম্প্রতি হাইকোর্টের কলেজিয়াম থেকে বেশ কয়েকজন আইনজীবীর নাম সুপারিশ করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের কাছে। পরে ১২ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম ৬ জন আইনজীবীর নাম গ্রহণ করে। এঁরা হলেন- এমএ আবদুল হাখিম, ভিএম শ্যাম কুমার, হরিসঙ্কর ভি মেনন, এস মনু, এস ইশ্বরন সুব্রামনি, এবং মনোজ পুলাম্বি মাধবন। 

নিয়ম অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের তরফে সেই নামের প্রস্তাব পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের কাছে। তবে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক মনোজ পুলাম্বি মাধবনের রাজনৈতিক অতীতের কারণে তাঁকে নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। কলেজিয়ামের কাছে একটি বিবৃতিতে কেন্দ্র জানায়, মাধবন একজন সিপিএম মনস্ক। কেরালায় এলডিএফ সরকারের আমলে সরকারি প্লিডার হিসাবেও কাজ করেছিলেন।

এরপরেই কলেজিয়ামের রেজোলিউশনে বলা হয়েছে, ‘প্রার্থীর রাজনৈতিক পটভূমি থাকাটা সব ক্ষেত্রেই যথেষ্ট কারণ নাও হতে পারে। প্রার্থীকে সিপিএম মনস্ক বলে যে কথা জানানো হচ্ছে তা অস্পষ্ট এবং ভিত্তিহীন কারণ।’

এছাড়াও সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম বলেছে, এলডিএফ সরকার তাঁকে ২০১০ এবং ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি প্লিডার হিসাবে নিযুক্ত করেছিল। এটা কোনওভাবেই আপত্তি জানানোর বৈধ কারণ হতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে, একজন সরকারি প্লিডার হিসাবে থাকার ফলে তিনি বিভিন্ন আইনে দক্ষ। শীর্ষ আদালত আরও জানায়, সাম্প্রতিক অতীতেও একজন আইনজীবীকে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি আগে একটি রাজনৈতিক দলের একজন পদাধিকারী ছিলেন। এপ্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট নাম না করে বিচারপতি ভিক্টোরিয়া গৌরির নিয়োগের উদাহরণ উল্লেখ করে। এছাড়াও একটি পৃথক রেজোলিউশনে সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম সুপারিশ করে, বম্বে হাইকোর্টের ১১জন অতিরিক্ত বিচারপতিকে স্থায়ী বিচারপতি পদে উন্নীত করা হবে এবং এলাহাবাদ হাইকোর্টের ৫ জন অতিরিক্ত বিচারপতিকে স্থায়ী করা হবে।