Obesity: বাচ্চার ওজন বাড়লে খুশি হবেন না, কঠিন রোগ ডেকে আনতে পারে স্থূলতা! কী বলছেন ডাক্তাররা

ওজন বাড়ছে ছোটদেরও। তাদের স্বাস্থ্যবান ভেবে বাবা মায়েরা খেয়াল রাখছেন না। যার দরুণ পরবর্তীতে অনেক রোগের সম্মুখীন হতে পারে ছোটরা। সারা বিশ্বে অনেক বেশি সংখ্যক শিশুই স্থূলতার কবলে পড়েছে, বেশিরভাগ বসে থাকার জীবনযাত্রা এবং দুর্বল খাদ্যাভ্যাসের কারণে। মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত একটি নতুন বিশ্লেষণ দেখায় যে ১৯৯০ সাল থেকে শিশুদের মধ্যে স্থূলতার হার চারগুণ এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দ্বিগুণ হয়েছে।

নিওনাটোলজি অ্যান্ড পেডিয়াট্রিক্স, মেরেঙ্গো এশিয়া হাসপাতাল, ফরিদাবাদের এইচওডি এবং সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডাঃ সঞ্জীব দত্ত বলেছেন, ছোটবেলায় অতিরিক্ত ওজন বেড়ে গিয়ে একটি গুরুতর চিকিৎসার কারণ হয়ে উঠতে পারে। এই ধরনের শিশুদের তাদের প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায়ও বেশি স্থূল হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বেশি থাকে। স্থূলতা তাদের টাইপ টু-এর মতো অসংখ্য রোগের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। এর দরুণ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এবং উচ্চ কোলেস্টেরল, কার্ডিওভাসকুলার রোগ, বিপাকীয় ব্যাধি, নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD), শ্বাসকষ্ট (অ্যাস্থমা, অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া), জয়েন্টে ব্যথার সম্মুখীন হতে পারে তারা।

তাই পিতামাতাদের অবশ্যই ছোটদের শৈশবকালের স্থূলতাকে মোকাবেলা করতে হবে, কারণ বাচ্চাদের অতিরিক্ত ওজন অবশেষে বয়স বাড়লে জটিলতা নিয়ে আসে। যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, জয়েন্টের সমস্যা, লিভারের রোগের কারণ হতে পারে। মোবাইল, টিভি দেখার জন্য রাত জেগে থাকা, খেলার জন্য বাইরে না যাওয়া এবং শাকসবজি এবং ফল এড়িয়ে যাওয়া, ছোট বাচ্চাদের এবং কিশোর-কিশোরীদের স্থূলতার কারণ হতে পারে।

  • শৈশব স্থূলতার কারণ

সারা দিন ঘরে বসে থাকা, ভুলভাল খাওয়ার অভ্যাস এবং বাইরের যেকোনও কার্যকলাপে অংশ না নেওয়া স্থূলতার পিছনে প্রাথমিক কারণ। ডাক্তাররা বলছেন, ‘আজ বেশিরভাগ শিশুরাই গেম খেলা, ইন্টারনেট ব্রাউজ করা বা টেলিভিশন দেখে যথেষ্ট ঘণ্টা ব্যয় করে। এটি তাদের স্ক্রিন টাইম বাড়িয়েছে, তাদের বাইরে খেলতে যাওয়া বন্ধ করেছে। যার ফলে শারীরিক ব্যায়ামের অভাব হয়, স্থূলতা আসে, বাড়িয়ে তোলে রোগের ঝুঁকি।’

  • কীভাবে শৈশব স্থূলতা প্রতিরোধ করা যায়

শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের স্থূলতা কমাতে, কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত:

সুষম খাদ্য খাওয়া জরুরি: যদিও শিশুরা জাঙ্ক ফুড এবং মিষ্টি খেতে পছন্দ করে, তাই বাবা মায়েদের উচিত তাদের পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো। তাজা ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য এবং চর্বিহীন প্রোটিন শরীরকে ভালভাবে পুষ্ট করতে পারে। স্থূলতার পাশাপাশি নানা রোগের সম্ভাবনাও কমাতে পারে।

স্ক্রিন টাইম কমান: আপনার বাচ্চাদের জন্য কিছু স্বাস্থ্যকর ক্রিয়াকলাপের ব্যবস্থা করুন। তাদের স্ক্রিন টাইম সীমিত করা গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার সন্তানের যেন ভালো ঘুম হয়: ঘুমের অভাব হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণ হতে পারে যার ফলে খিদে বেড়ে যায়। তাই অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের প্রতিদিন যাতে ভালো ঘুম হয় তা নিশ্চিত করা।

প্রসেসড ফুড খাওয়াবেন না: শিশুদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং তাদের অস্বাস্থ্যকর জিনিস খাওয়া থেকে বিরত রাখতে, বাবা-মাকে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া শুরু করতে হবে। ফাস্ট ফুড, চিনিযুক্ত সোডা, ক্যান্ডি এবং যেকোনও প্রসেসড স্ন্যাকস খাওয়া কমিয়ে দেওয়া উচিত।

তাদের কার্যকলাপের ব্যবস্থা করুন: শিশুদের এক জায়গায় সারাক্ষণ বসে থাকার অভ্যাস কমাতে, স্কুল এবং সোস্যাইটির শিশুদের শারীরিক কার্যকলাপে অংশ নেওয়া উচিত। আপনার সন্তানকে বাইরে খেলতে যেতে দিন। তাদের ফিটনেস বাড়াতে ফুটবল এবং ক্রিকেটের মতো যেকোনও স্পোর্টসে নাম লেখান।