‘‌আমি বাইরে দল নিয়ে কোনও অভিযোগ করব না’‌, ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন সায়নী

এবার যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ। আর তারপর থেকেই এই কেন্দ্রে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন প্রচার করতে। সায়নী ঘোষ রাস্তাঘাটে, বাড়িতে, দোকান–বাজারে—সর্বত্র যাতায়াত করছেন। আবার তাঁর জন্য তৃণমূল ভবনে অপেক্ষারত মানুষজনকে কেন ঠাণ্ডা পানীয় দেওয়া হয়নি সেদিকেও খেয়াল রেখে আওয়াজ তোলেন। আর যাতে এমন না ঘটে সেটাও বোঝালেন। আসলে গরম পড়েছে। মানুষজন সায়নীকে দেখতে এবং তাঁর সঙ্গে কথা বলার জন্য আসছেন পার্টি অফিসে। তাঁরা তৃষ্ণার্থ থাকছেন। তাই এই কথা স্মরণ করিয়ে দেন যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী।

এদিকে দিনরাত এখানে পড়ে আছেন সায়নী। নির্বাচনের প্রচার থেকে স্ট্র‌্যাটেজি সব কিছু নিয়ে কাজ করে চলেছেন। নিজেরও গলা শুকিয়ে যাওয়ায় জল পান করে সায়নী বললেন, ‘‌ঘাড়ে চুল এলে অসুবিধে হয়। তাই মাথায় উঁচু করে বেঁধে রাখি। এখন মাথায় শুধু একটাই নাম যাদবপুর। মা যদি আমার কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারত। মা চাইতেন মেয়ে সাংসদ হোক। তবে যাদবপুর হয় নেতা তৈরি করবে, না হয় ছুড়ে ফেলবে। তবে আমি মনে করি লোকসভায় উপস্থিতি খুব জরুরি। আমি ওরকম মানুষ নই যে প্রচুর শুটিং করেছি, সিনেমা করেছি বলে রাজনীতিতে সময় দিইনি।’‌ এটা কি কারও প্রতি খোঁচা সায়নীর?‌ উঠছে প্রশ্ন।

আরও পড়ুন:‌ সুকান্তের আর্জি মান্যতা পেল না সুপ্রিম কোর্টে, সন্দেশখালি নিয়ে খেলেন জোর ধাক্কা‌

অন্যদিকে এই কেন্দ্রে আগে সাংসদ ছিলেন অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। তিনি নিজেই এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাননি। তাই টিকিট দেওয়া হয়েছে সায়নী ঘোষকে। কিন্তু তাঁর মন্তব্যে কার দিকে ইঙ্গিত রয়েছে?‌ এই প্রশ্ন উঠতেই সায়নীর জবাব, ‘‌মিমি পদত্যাগ করে বলল ‘কাজ করতে পারছি না’। ওর স্পষ্টবাদিতাকে আমি সাধুবাদ জানাই। মিমির সমস্যা হয়েছিল দলের মানুষের সঙ্গেই। বাইরে থেকে দলের সমস্যার সমাধান করা যায় না। সমস্যা সব দলেই আছে। মিমির সমস্যা হয়েছে সেটা মিমি বলেছে। আমি বাইরে দল নিয়ে কোনও অভিযোগ করব না। কারণ কেউ গুছিয়ে দিয়ে যাবে না।’‌ লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রাক্তনের বিরুদ্ধে বর্তমানে এমন খোঁচা রাজ্য–রাজনীতিতে চর্চার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এছাড়া সায়নী ঘোষ খুব পরিণত। তাই প্রচার গুছিয়েই করছেন। মোমো তৈরি করতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। আবার গান গাইতেও দেখা গেল। এভাবেই মানুষের মাঝে গিয়ে প্রচার করছেন নিজস্ব আঙ্গিকে। মন্দিরে যাচ্ছেন প্রার্থনা করছেন। আসানসোলে হেরে গিয়ে আরও ভালভাবে নিজেকে তৈরি করেছেন সায়নী। তাই তাঁর কথায়, ‘আসানসোলে হেরে যাওয়ার পরে মমতাদি আমাকে বলেছিলেন, আমি তোমায় চিনে নিয়েছি। অভিষেক বলেছিল, বড় সাংগঠনিক দায়িত্ব দেবে। আমার এই সিদ্ধান্তে টলিপাড়ারও সবাই খুশি হয়েছে। রাজের জন্যই আমি আজ এখানে। রাজনীতিতে আসার পিছনে রাজ আছে।’‌ কথা বলেই প্রচারে বেরিয়ে পড়লেন সায়নী।