Cyber crime: ‘আপনার সন্তান বাইরে পড়তে গিয়ে ড্রাগ নিয়ে ধরা পড়ছে’, ফোন করছে সাইবার প্রতারকরা

প্রযুক্তি যতই উন্নত হচ্ছে সাইবার প্রতারণার ধরণও বদলাচ্ছে প্রতারকরা। বিভিন্ন পদ্ধতিতে সাইবার প্রতারণার অভিযোগ সামনে এসেছে। কখনও ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে, কখনও বা টিকিট বুকিংয়ের নামে আবার প্যান কার্ড আপডেট করার নামে সাইবার প্রতারণার শিকার হচ্ছেন বহু মানুষ। যার ফলে প্রচুর টাকা খোয়াছেন অনেকেই।আর এবার একেবারে নতুন পদ্ধতিতে সাইবার প্রতারণার অভিযোগ সামনে আসছে। মূলত ভিনরাজ্যে পড়াশোনা করা পড়ুয়াদের অভিভাবকদের টার্গেট করছে সাইবার প্রতারকরা। আর তারপরেই তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা টাকা। এক্ষেত্রে অভিভাবকের সতর্ক করছে পুলিশ। 

আরও পড়ুনঃ ‘সরকারি নার্সিং কোর্সে ভরতি করিয়ে দেব’, ১.৮ লাখ টাকা গায়েব কলেজ পড়ুয়ার থেকে

কীভাবে হচ্ছে প্রতারণা?

জানা গিয়েছে, ভিন রাজ্যের পড়াশোনা করা পড়ুয়াদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করছে প্রতারকরা। এরপর সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ার অভিভাবকের নম্বরে ফোন করছে। সেক্ষেত্রে  প্রতারকরা জানাচ্ছে, তাদের সন্তানরা অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। পুলিশের উচ্চপদস্থ অফিসারের পোশাক পরে ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে অভিভাবকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে তারা। এরফলে স্বাভাবিকভাবেই ঘাবড়ে যাচ্ছেন অভিভাবকরা। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মোটা টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকরা।

ইতিমধ্যেই পশ্চিম বর্ধমান জেলায় বেশ কয়েকটি ঘটনা সামনে এসেছে। সেক্ষেত্রে এই পদ্ধতিতে প্রতারণা করার চেষ্টা করা হয়েছে। জানা যায়, গত বুধবার দুর্গাপুরের বিধাননগরের এক ব্যবসায়ীকে অপরিচিত নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিয়ো কল করা হয়। ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তি পুলিশের পোশাক পরেছিলেন। দেখে ব্যবসায়ীর মনে হয়েছিল, তিনি হয়ত পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক। তিনি ব্যবসায়ীর মেয়ের নাম উল্লেখ করে জানান যে তার মেয়ে ড্রাগ বিক্রি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছে। এরপর একজনের কান্নার আওয়াজ শুনতে পান ওই ব্যবসায়ী,যা তার মেয়ের মতোই। 

জানা গিয়েছে, ওই ব্যবসায়ী মেয়ে ভুবনেশ্বরের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। এমন অভিযোগ শুনেই ওই ব্যবসায়ী তড়িঘড়ি মেয়ের নম্বরে ফোন করেন। কিন্তু, মেয়ের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে শুয়ে রয়েছেন। তখন তিনি বুঝতে পারেন যে এটা প্রতারকদের ফোন ছিল। এর পরে প্রতারকরা আরও ২ বার ফোন করে।  কিন্তু, ব্যবসায়ী আর ফোন ধরেননি। এরপর তিনি মেয়ের কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। কলেজ কর্তৃপক্ষও বিষয়টি পুলিশকে জানানোর আশ্বাস দিয়েছে।

শুধু তাই নয় রূপনারায়ণপুরের এক বাসিন্দার সঙ্গেও এমন ঘটনা ঘটেছে। তার ছেলেও ভিন রাজ্যের পড়ুয়া। সেক্ষেত্রে তার ছেলে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে বলে একই পদ্ধতিতে ফোন করে প্রতারকরা। কিন্তু, সেই সময় ওই ব্যক্তির ছেলে বাড়িতেই ছিলেন। এ বিষয়ে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এটা হল প্রতারণার নয়া নতুন কৌশল। এর পিছনে কোনও চক্র থাকতে পারে। কারা এর সঙ্গে জড়িত তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে গলার স্বর নকল করার জন্য এআই পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে মনে করছে পুলিশ।