শেষ দুই মিনিটে পিছিয়ে পড়লো বাংলাদেশ

ফিফা র‍্যাংকিংয়ে ৮৬ ধাপ এগিয়ে থাকা ফিলিস্তিনের বিপক্ষে চোখে চোখ রেখে লড়াই করলো বাংলাদেশ। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ নির্ভর খেলা হলো। কিন্তু বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বিরতিতে যাওয়ার দুই মিনিট আগে দুই গোল হজম করে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। 

কুয়েত সিটির জাবেদ আল আহমাদ স্টেডিয়ামে প্রবাসীরা এসেছিলেন লাল-সবুজ দলকে সমর্থন করতে। তাদের সমর্থন নিয়ে বাংলাদেশ শুরুটা খারাপ করেনি। প্রতি আক্রমণ নির্ভর খেলে একের পর এক সুযোগ তৈরি করে গোল করতে পারেনি। আবার ফিলিস্তিনও পারেনি সহজ সুযোগ কাজে লাগিয়ে আগে গোল করতে।

ম্যাচ শুরুর বাংলাদেশ সুযোগ পায়। ৭ মিনিটে রাকিব হোসেন ডান দিক দিয়ে গতিতে এক ডিফেন্ডারকে হারিয়ে বক্সে ঢুকে কাটব্যাক করলেও তা রিসিভ করার মতো কেউ জায়গা মতো ছিলেন না। বল পেলে হয়তো গোলের হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।

১১ মিনিটে ফিলিস্তিন গোলের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। বিশ্বনাথের মাথা ছুঁইয়ে আসা বল পেয়ে ওদেহ দাবাঘ বক্সে ঢুকে গোলকিপারকে একা পেয়ে ক্রস বারের ওপর দিয়ে মেরে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন।

১৪ মিনিটে রাকিব হোসেন এক ডিফেন্ডারকে ডজ দিয়ে বক্সে ঢুকে ডান পায়ে শট নিলেও তা পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। ৫ মিনিট পর ফিলিস্তিন আক্রমণে। মধ্যমাঠ থেকে থ্রু পেয়ে দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে ফাস্ট টাচে বল রিসিভ করে বক্সে ঢুকে গোলকিপারকে একা পেয়ে ক্রস বারের ওপর দিয়ে মেরে সমর্থকদের হতাশ করেন। ২৩ মিনিটে বাংলাদেশ সুযোগ পেয়েছিল।  ফরোয়ার্ডরা প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে আতংক সৃষ্টি করলেও গোলকিপারের পরীক্ষা নিতে পারেননি।

চার মিনিট পর বাংলাদেশ ভালো সুযোগ নষ্ট করে। ফয়সাল আহমেদ ফাহিম বা প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে দারুণ নিচু ক্রস ফেলেছিলেন, অন্য প্রান্তে সোহেল রানা ফাঁকায় ক্রস বারের ওপর দিয়ে মেরে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন।

এরপর ফিলিস্তিন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে থাকে। ৩২ মিনিটে ফিলিস্তিনের ওদেহ দাবাঘ বক্সে ঢুকে গোলকিপারকে একা পেয়ে লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। বল জালে প্রবেশের আগেই মিতুল মারমা বা দিকে পা বাড়িয়ে প্রতিহত করে দলকে ম্যাচে বাঁচিয়ে রাখেন।

বিরতিতে যাওয়ার আগে ডিফেন্ডারদের ব্যর্থতায় দুই মিনিটে দুই গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ৪৩ মিনিটে বাংলাদেশের হতাশাজনক ডিফেন্ডিংয়ে ফিলিস্তিন এগিয়ে যায়। ওদে দাবাঘ গোল করে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেন। মুসাব বাত্তাহর শট গোলকিপার মিতুল মারমা ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে পারেননি, সামনে থাকা দাবাঘ আর ভুল করেননি। সহজেই জাল কাঁপান। তবে তার পেছনে ডিফেন্ডার সাদ উদ্দিন থাকলেও কিছুই করতে পারেননি। শুধু তাই নয় এর আগে অফসাইডের আবেদন করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের এগিয়ে যেতে সুযোগ করে দেন!

যোগ করা সময়ে বাংলাদেশ আবারও পিছিয়ে পড়ে। কর্নার থেকে  সোহেল রানার পায়ে বল প্রতিহত হয়ে সামনে পড়লে তা থেকে শিহাব কামবার সহজেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। শিহাবকে পাহাড়া দেওয়ার কেউ প্রয়োজনবোধ করেননি!

এর আগে স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা একাদশে আরেক তরুণ মিতুল মারমাকে রাখেন। আগের মতোই আজও ৪-৪-২ ফর্মেশনে খেলেছে বাংলাদেশ। মিতুল মারমা ছাড়াও সেরা একাদশে ফিরেছেন তপু বর্মণ। সেন্টার ব্যাক পজিশনে তার সঙ্গে দেখা যাবে বিশ্বনাথ ঘোষকে। লেফটব্যাকে ইসা ফয়সাল এবং রাইট ব্যাকে সাদ উদ্দিন।

ডিফেন্সিভ মিডে থাকছেন মোহাম্মদ হৃদয়, তার সামনে মোহাম্মদ সোহেল রানা ও মজিবর রহমান জনি এবং জামাল ভূঁইয়া। আর আক্রমণভাগে রাকিব হোসেনের সঙ্গে জুটি বেধেছেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম।

পরিসংখ্যান বলছে, ফিলিস্তিনের বিপক্ষে বাংলাদেশের আগের রেকর্ড মোটেও ভালো নয়। ৬বার মুখোমুখিতে একবার মাত্র ড্র করতে পেরেছে। বাকি পাঁচবার হেরেছে বাংলাদেশ। ড্র হয়েছে তাও ২০০৬ সালে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে; বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে।

বাংলাদেশের একাদশ:

গোলকিপার: মিতুল মারমা

রক্ষণ: তপু বর্মণ, বিশ্বনাথ ঘোষ, সাদ উদ্দিন ও ইসা ফয়সাল।

মধ্যমাঠ: মোহাম্মদ হৃদয়, মজিবর রহমান জনি, মোহাম্মদ সোহেল রানা ও জামাল ভুঁইয়া।

আক্রমণ: রাকিব হোসেন ও ফয়সাল আহমেদ ফাহিম।