Rajasthan Royals ipl 2024 team strength weakness x factor gamechanger stats analyzed by Sambaran Banerjee abpp

জয়পুর: ২০০৯ সালে শেষবার আইপিএল (IPL 2024) চ্য়াম্পিয়ন হয়েছিল দলটা। এরপর থেকে এখনও পর্যন্ত ট্রফির স্বাদ পায়নি তারা। এই মুহূর্তে আইপিএলে যে কটা দল রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে তরুণ অধিনায়ক দু জন হলেন শুভমন গিল (Subhman Gill) ও রাজস্থান রয়্যালসের (Rajasthan Royals) সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson)। এবারের নিলামে অনেক নতুন বিদেশি দলে নিয়েছে রাজস্থান। রভমন পাওয়েল, নান্দ্রে বার্গার রয়েছে তার মধ্যে। প্রথম জন টি-টোয়েন্টি ফর্ম্য়াটে সফল। দ্বিতীয় জন কতটা ম্য়াচ খেলার সুযোগ পাবে তা জানি না। তবে সাঙ্গাকার ও টিম ম্য়ানেজমেন্ট হয়ত বুঝে শুনেই দলটাকে চালনা করবে। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়া এই শিবিরে খুব একটা প্রভাব ফেলবে বলে আমার অন্তত মনে হয় না। তার কারণ এই দলে বোল্ট, অশ্বিন, চাহালের মত বোলার রয়েছে। নভদীপ সাইনি, আবেশ খানরা রয়েছে। ওরা ঠিক সামলে দেবে বোলিং ডিপার্টমেন্টটা। আর ব্যাটিংয়ে তো জয়সওয়াল, বাটলার, স্যামসন রয়েইছেন।

শক্তি

প্রথমেই বলব যশস্বী জয়ওয়াল। কেরিয়ার সবে সবে শুরু হয়েছে। টেস্ট সিরিজে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত পারফরম্য়ান্স করেছে। সাতশোর ওপর রান এক সিরিজে করেছে। এট কিন্তু কম কৃতিত্বের নয়। লাল বলই শুধু নয়। সাদা বলের ফর্ম্য়াটেও জাতীয় দলের জার্সিতে ধারাবাহিকভাবে ভাল পারফর্ম করেছে। দুই ফর্ম্য়াটেই ও দুর্দান্ত ব্যাটার। বড় বড় শট খেলতে পারে। বাটলার ও সঞ্জু স্যামন ২ জনেই টি-টোয়েন্টিতে সফল। আমরা বাটলারের প্রচুর ইনিংস দেখেছি যেখানে পাওয়ার প্লে-তেই ম্য়াচের রাশ ও রাজস্থানের দিকে নিয়ে চলে এসেছে। এছাড়া গত কয়েক বছরে ওর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জয়সওয়াল। টেস্ট ক্রিকেটে এত ছক্কা হাঁকানো একটা প্লেয়ার টি-টোয়েন্টি ফর্ম্য়াটে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তার আন্দাজ করাই যায়। টেকনিকটা দুর্দান্ত। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বলটা দেখে, এরপর শট নেয়। স্য়ামসন দেশের জার্সিতে ততটা সফল না হলেও রাজস্থান কিন্তু বিশ্বাস রেখেছে ছেলেটার ওপর। তিন নম্বর পজিশনে নেমে অ্যাঙ্করের রোল প্লে করবে ও। বড় শট যেমন খেলতে পারে, তেমনই প্রয়োজনে ক্রিজে থিতু হয়ে ইনিংসটি লম্বা করতে পারে। মিডল অর্ডারে হেটমায়ারের মত ব্যাটার রয়েছে। রাজস্থান ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে অনেক দিন ধরে খেলছে। কিন্তু এবার আরও এক বিধ্বংসী ব্যাটার রভমন পাওয়েলকে নিয়েছে রাজস্থান। দু জনের মধ্যে কেউ একজন খেলতে পারে।

বোলিং ডিপার্টমেন্টটা অনেক বেশি শক্তিশালী রাজস্থানের। আমার মনে হয় টুর্নামেন্টের যত গুলো দল রয়েছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। যুজবেন্দ্র চাহাল ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মত নাম রয়েছে। দেশের জার্সিতে চাহাল এখন সেভাবে সুযোগ পায় না। কিন্তু এই ফর্ম্যাটে এমনকী আইপিএলেও চাহালের রেকর্ড আমরা জানি। আরসিবিতে যে ফর্মে ছিলে রাজস্থানে এসেও সেই ফর্ম ধরে রেখেছে। চারটি ওভার কিন্তু ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। অশ্বিন যত দিন যাচ্ছে তত বেশি ধার বাড়ছে ওর বোলিংয়ে। ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা তো ওর বলই বুঝতে পারেনি টেস্ট সিরিজে। আমি নিশ্চিত এই চাহাল-অশ্বিন জুটি স্পিনিং ট্র্যাকে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জুটি হতে চলেছে। 

পেস বোলিং বিভাগে বোল্টের গতি ও স্যুইং তো রয়েইছে। ও অটোমেটিক চয়েস পেস বোলিং বিভাগে। অনেকেই আবেশ খানের কথা বলবে, আমি মনে করি 

দুর্বলতা

মাঝের ব্যাটিংটা কোথাও একটু দুর্বল মনে হচ্ছে আমার রাজস্থান শিবিরের। একমাত্র হেটমায়ার ছাড়া ম্য়াচ উইনার সেভাবে নেই। ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা যাঁরা রয়েছে, তাঁরা সেভাবে বিশ্বমঞ্চে সেভাবে পরীক্ষিত নয়। এর আগের মরশুমগুলোতেও দেখেছি যে হেটমায়ারের ওপরই চাপ বেড়ে যায় টপ অর্ডার ব্যর্থ হলেন। রিয়ান পরাগ ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল পারফর্ম করলেও আইপিএলে কতটা সফল হবে, তা নিয়ে আমি সন্দিহান। ওর রেকর্ড কিন্তু এই টুর্নামেন্টে দু একটা ইনিংস ছাড়া কিছু আহামরি নয়। এছাড়া একটা ইস্যু বলতেই হয়, আমি জানি না যে নিলামে টিম ম্য়ানেজমেন্ট কী ভাবনা চিন্তা করে জাম্পাকে নিয়েছিল। তার কারণ চাহাল ও জাম্পা দু জনেই বিশ্বমানের বোলার। কিন্তু তুমি দু জনকে তো আর খেলাতে পারবে না। এছাড়া জাম্পাকে খেলানো মানে একটা বিদেশি কোটার প্লেয়ার কম খেলাতে হবে। আর চাহাল ও জাম্পা দুজনেই একই ঘরানার লেগস্পিনার। সেক্ষেত্রে জাম্পাকে বসানো মানে কিন্তু একজন ম্য়াচ উইনারকে দলের বাইরে রাখা।

গেমচেঞ্জার

এই যশস্বী জয়ওয়াল নামটাই মাথায় ঘুরছে আমার। ও কিন্তু বিশ্বমানের বোলারদের ইতিমধ্যেই খেলেছে। আইপিএলে বাড়তি আত্মবিশ্বাস থাকবে ওর। স্ট্রাইক রেট কুড়ির ফর্ম্য়াটে দারুণ। ভাল ফিল্ডারও ও। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে স্লিপে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছে কয়েকটা। বোলারদের মনোবল শুরুতেই ভেঙে দেয় আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে। বাটলার-জয়সওয়াল জুটিটাই প্লাস পয়েন্ট এই দলের। গোটা ব্যাটিং লাইন আপে ম্য়াচ ঘোরানোর ক্ষমতা রাখে এরাই। 

এক্স ফ্যাক্টর

যুজবেন্দ্র চাহাল। অনেকেই বলতে পারে রবিচন্দ্রন অশ্বিন থাকতে আমি কেন নিলাম চাহালের নাম। তার একমাত্র কারণ আইপিএলে ওর রেকর্ড। ১৮৭ উইকেট নিয়েছে এখনও পর্যন্ত। লেগ স্পিন, গুগলি সবেতেই বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে ওর দারুণ। চার ওভারে শুধু রান কম দেওয়াই নয়। একেবারে উইকেটে টেকিং বোলার। স্যামসন যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে চাহালকে, তবে রাজস্থানের ম্য়াচ জয়ের সম্ভাবনা বাড়বে। 

আইপিএলের মত টুর্নামেন্ট। বিশেষ করে বলতে গেলে টি-টোয়েন্টি ফর্ম্য়াট এমনই যেখানে একটা রান আউট, একটা বোল্ড, একটা বাউন্ডার অথবা একটা ছক্কা ম্য়াচের হিসেব নিকেষ বদলে দিতে পারে। এই রাজস্থান দলটা কাপ পাবে কি না আমি এখনই তা বলতে পারব না। আর এই ধরনের টুর্নামেন্টে সবাই কম বেশি ফেভারিট থাকে। তবে এটুকু বলতে পারি সেমিফাইনালে উঠতে লাকি।

আরও দেখুন