স্বামীকে স্ত্রীর চেয়েও উচ্চ আসনে বসিয়ে রাখা অনুচিত, সংসারে উভয়ই সমান, বলল HC

সংসারে স্বামী-স্ত্রীর আসন সমান। কেই কারও চেয়ে উচ্চ আসনে বসার অধিকারী নয়। দাম্পত্য কলহ সংক্রান্ত মামলায় এমনই মন্তব্য করল কলকাতা হাইকোর্ট। এই মামলায় স্বামী-স্ত্রী উভয়ই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। হাইকোর্ট স্বামীর আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন।

স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে প্রাপ্য সম্মান দেন না। উল্টে তাঁকে মানসিক নির্যাতন করা হয়। এই অভিযোগ এনে আদালতের দ্বারস্থ হন স্ত্রী। পাল্টা স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন স্বামী। তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে শারীরিক হেনস্থা ও নির্যাতনের অভিযোগ আনেন। আদালতে যুবক দাবি করেন, শুধু তাঁকেই নয়, তাঁর মাকেও শারীরিক নির্যাতন করত স্ত্রী। তাঁর স্ত্রী আদালতে মিথ্যা মামলাও করেছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে ওই যুবক। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি মধুরেশ প্রসাদের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। শুনানিতে সব পক্ষের বক্তব্য শোনেন বিচারপতি।

আরও পড়ুন। টাকা দিয়েও মেলেনি ফ্ল্যাট, প্রোমোটারের বিরুদ্ধে FIR, CID তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘সংসারে স্ত্রীর চেয়ে স্বামীর উচ্চাসন প্রাপ্য নয়। সবাই সমান। সুখী দাম্পত্য গঠনের অনুকুল পরিবেশ গঠনে উভয়ের ভূমিকা সমান। স্ত্রী সংসারের মেজাজ ধরে রাখেন, স্বামী সেই অনুযায়ী একের পর এর দৃশ্য তৈরি করে সংসার চালান। এঁদের কেউ অবহেলার পাত্র নন।’

আদালত আরও বলে, ‘সমাজের রীতি ছিল স্বামীকে স্ত্রীর চেয়ে উচ্চ আসনে বসিয়ে রাখা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বিলোপ পেয়েছে। ভিন্ন পরিবেশে বেড়ে ওঠা দুজন মানুষের সমান দায়িত্ব দাম্পত্য সুখ বজায় রাখা। এটি কখনও এক মুখী হতে পারে না।’

আরও পড়ুন। কৌস্তভের বাড়ি থেকে চুরি! হাওয়া লাখ টাকার নির্মাণ সামগ্রী ও পুরনো মামলার নথি

আদালত মনে করে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে রোজকার জীবনে ঝগড়া হতে পারে। তবে সেই ছোটখাট বিষয় মিটিয়ে নেওয়া দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। বিচারপতি বলেন,’লিঙ্গসাম্য সংবিধান স্বীকৃত। তাই স্বামীকে উচ্চ আসনে বসিয়ে রাখা যাবে না।’

দাম্পত্য পুনরুদ্ধারের জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন স্ত্রী। সেই আবেদন গৃহীত হয়েছে। স্বামীর আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছে আদালত।

আরও পড়ুন। ‘কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে’, এক লহমায় ফিরে দেখা কলকাতার ট্রামের ইতিহাস-ভূগোল