‘‌ভারত মাতা কি জয় মুসলিমদের তৈরি’‌, বিজেপি–আরএসএসকে তুলোধনা পিনারাই বিজয়নের

এবার বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি তোপ দাগলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। এখন লোকসভা নির্বাচন দুয়ারে। তার আগেই দেশজুড়ে সিএএ কার্যকর করেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। তাতে মুসলিমদের এই দেশে অচ্ছুৎ করে রাখার কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে তোপ দাগেন পিনারাই বিজয়ন। সংঘ পরিবার মুসলিমদের নাগরিকত্ব দিতে চায় না এবং চেষ্টা করছে দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য মুছে ফেলতে। তাঁদের এটা বোঝা উচিত আজিমুল্লা খান একজন মুসলিম—যিনি স্লোগান তৈরি করেছেন ‘‌ভারত মাতা কি জয়’‌।

এদিকে এই স্লোগানটি প্রধানমন্ত্রী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সকলেই নির্বাচনী প্রচারে তুলে থাকেন। বিজেপির নেতা–মন্ত্রীরা এই স্লোগান দেন। তাহলে মুসলিমরা এই দেশে ব্রাত্য থাকবে কেন?‌ উঠছে প্রশ্ন। কেরলের মালাপ্পুরামে সিএএ বিরোধী মিছিলের উদ্বোধন করেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি জানান, সংঘ পরিবার শুধু মুসলিমদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকই করতে চাইছে না, বরং এই দেশ থেকে তাড়াতে চাইছে। এই বিষয়টিই সংখ্যালঘুদের এভাবে দেখাতে চাইছে তারা। সিএএ বিরোধী আওয়াজ এখন গোটা দেশ থেকে উঠতে শুরু করেছে। এই আইনের মাধ্যমে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে বলে মনে করছেন সংখ্যালঘু মানুষজনও।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌আমাকে বাঁচান’‌, বাংলার বাসিন্দাকে চাকরির টোপ, রাশিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে উরজেন তামাং

অন্যদিকে বাংলা, তামিলনাড়ু, কর্নাটক, তেলাঙ্গানা–সহ নানা রাজ্যে সিএএ নিয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা যাচ্ছে। এবার তাতে যোগ দিল কেরলও। ফলে লোকসভা নির্বাচনের পর এই আইন নিয়ে দেশজুড়ে আন্দোলন আছড়ে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, ‘‌আমরা দেখেছি সংঘ পরিবারের নেতা আসেন আর সামনে বসে থাকা মানুষজনকে ভারত মাতা কি জয় স্লোগান দিতে বলেন। এই স্লোগান কি সংঘ পরিবারের কেউ তৈরি করেছে?‌ এই স্লোগান তৈরি করেন আজিমুল্লা খান। ১৯ শতকে যিনি মারাটা পেশওয়া নানা সাহেবের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আমি জানি না আগামীকাল তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন কিনা যে, মুসলিমদের তৈরি স্লোগান দেওয়া যাবে না।’‌

এছাড়া কংগ্রেসকেও আক্রমণ করেছেন পিনারাই বিজয়ন। কারণ ২০১৯ সালে যখন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে আসা হল তখন কংগ্রেস নীরব ছিল। এই রাজ্য সবার আগে থাকবে সংঘ পরিবারের এমন আইনকে রোখার জন্য বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‌জয় হিন্দ স্লোগানও মুসলিমদের অবদান। প্রাক্তন কূটনীতিবিদ আবিদ হাসান সাফরানি তা করেছিলেন। সংঘ পরিবারের সদস্য যাঁরা বলে থাকেন, মুসলিমদের পাকিস্তানে পাঠাবেন বা দেশ ছাড়া করবেন তাঁদের এই ইতিহাসটা জানা উচিত। সারে যাহা সে আচ্ছা হিন্দুস্তান হামারা—দেশাত্মবোধক গানটি মহম্মদ ইকবালের গাওয়া। মুসলিমদের একটা বড় অংশ দেশের স্বাধীনতায় অংশ নিয়েছিল।’‌