পূর্ব মেদিনীপুরের এক বিজেপি নেতার দায়ের করা মামলায় পুলিশি রিপোর্টে ভূপতিনগর থানার ওসিকে ব্যাপক ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার ওই মামলার শুনানিতে, আদালতে রিপোর্ট দিয়ে ওসি দাবি করেন, তপন মিদ্দা নামে ওই বিজেপি নেতাকে রক্ষাকবচ দিলে নির্বাচনে অশান্তি হতে পারে। এই রিপোর্ট দেখে ক্ষুব্ধ বিচারপতি বলেন, ওসিকে জানাতে হবে, আদালতের রক্ষাকবচের জেরে কবে কোথায় নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রভাবিত হয়েছে।
২০২২ সালে ভূপতিনগরে তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্নার বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় ২০ জন বিজেপি নেতার নামে মামলা করেছিল পুলিশ। ভুয়ো মামলায় তাদের ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই বিজেপি নেতারা। সেই মামলায় ভূপতিনগর থানার ওসির রিপোর্ট তলব করেছিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। আদালতে রিপোর্ট দিয়ে ওসি জানান, অভিযুক্তদের রক্ষাকবচ দিলে লোকসভা নির্বাচনে তার প্রভাব পড়তে পারে।
সোমবারের শুনানিতে এই রিপোর্ট দেখে প্রবল ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘কবে কোথায় আদালতের রক্ষাকবচের জন্য নির্বাচন বানচাল হয়েছে তা ভূপতিনগর থানার ওসিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে। সঙ্গে তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে হবে তাঁকে। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে ওসিকে সশরীরে হাজির হতে হবে বলে জানান তিনি।’
মঙ্গলবার মামলাটির ফের শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি। তখন ওসির রিপোর্ট ও ব্যাখ্যা নিয়ে সরকারি আইনজীবীকে হাজির হতে বলেছেন বিচারপতি। ততক্ষণ পর্যন্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
২০২২ সালের ২ ডিসেম্বর রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্নার বাড়িতে প্রবল বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণে রাজকুমারের বাড়ির অ্যাসবেসটাসের চাল উড়ে যায়। দেহ উড়ে গিয়ে পড়ে কয়েক শ মিটার দূরে ধান ক্ষেতে। ওই ঘটনায় দেহ লোপাট করে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। বিজেপির দাবি, কেউ কোনও FIR না করলেও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশে বিজেপি কর্মীদের ভুয়ো মামলা দিয়েছেন জেলা পুলিশের আধিকারিকরা।
ভূপতিনগর বিস্ফোরণ মামলার তদন্তে তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করতে গিয়ে গত শনিবার হামলার মুখে পড়েন NIA আধিকারিকরা। সেই ঘটনাতেও পালটা NIA আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করেছে রাজ্য পুলিশ।