Viral Post: ‘দাউদ আমার কাকু’- স্ক্যামারদেরই প্র্যাঙ্ক করলেন সাংবাদিক, সবটা শুনলে হাসবেন

মুম্বই পুলিশ সেজে প্রতারণা করতে এসেছিলেন স্ক্যামাররা। উল্টে তাঁদের সঙ্গে এক সাংবাদিক এমনই এক মজার প্র্যাঙ্ক করে বসেছিলেন যে পালানোর পথ খুঁজে পাননি তাঁরা। সেই মজার অভিজ্ঞতাই এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে নিয়েছেন ওই ব্যক্তি। তাঁর দাবি, দাউদ ইব্রাহিমকে নিজের কাকু বলে দাবি করে তিনি প্রতারকদের গোটা টিমেরই হুঁশ উড়িয়ে দিয়েছিলেন।

আসল ঘটনাটি কী

বুদ্ধিমান ওই সাংবাদিকের নাম সৌরভ দাস। স্ক্যামার গ্যাংয়ের সঙ্গে তাঁর মুখোমুখি হওয়ার বিশদ বিবরণ দিয়েছেন এদিন। সৌরভের দাবি, ওই টিমের একজন মুম্বই পুলিশের ডিসিপি প্রদীপ সাওয়ান্ত নামে নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন, যিনি বর্তমানে নিরাপত্তা শাখায় কাজ করছেন। স্ক্যামারের সঙ্গে ফোনে কথা হচ্ছিল তাঁর। এক ঘণ্টা ধরে চলা স্ক্যাম কলের কথা বলতে গিয়ে দাস লিখেছেন, স্ক্যামাররা প্রথমে আমাকে একটি ভয়েস কল (+91 8112-178017) এর মাধ্যমে ফোন করেছিল যে এটি টিআরএআই (@TRAI) থেকে এসেছে। আর আমার নম্বরটি দুই ঘন্টার মধ্যে ব্লক হয়ে যাবে এবং আরও তথ্যের জন্য নয় প্রেস করতে হবে। তিনি যথারিতি নয় প্রেস করলে এটি তাঁকে টেলিকম বিভাগের নামে ফাঁদ পেতে বসা স্ক্যামারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিল।

এরপর স্ক্যামাররা সৌরভকে বলেছিলেন যে কেউ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। দাসের কথায়, ‘তিনি আমাকে বলেছিলেন যে বম্বে আন্ধেরি পূর্বে কেউ আমার আধারের মাধ্যমে নিবন্ধিত একটি নম্বরের বিরুদ্ধে অবৈধ বিজ্ঞাপন এবং হয়রানিমূলক পাঠ্যের জন্য অভিযোগ দায়ের করেছে। স্পষ্টতই, @Mumbai Police তারপর নম্বর ব্লক করার অনুরোধ পাঠিয়েছে এবং তাই টিআরএআই ওই নম্বর ব্লক করতে বাধ্য। স্ক্যামাররা দাসকে আরও বলেছিলেন যে কলটি থানায় পাঠানো হবে। তিনি তাঁকে এফআইআর ইত্যাদির বিশদ বিবরণ দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে তিনি পূর্ব আন্ধেরি থানায় কলটি ফরোয়ার্ড করছেন। সৌরভের দাবি, নম্বরটি আমারই এবং আমি মামলার সঙ্গে যুক্ত নই, এমনটা লিখে তিনি পুলিশকে একটি স্পষ্টীকরণ পত্র পাঠাতে বলেছিলেন।

এর পরে দাস আরও একজন প্রতারকের সঙ্গে চ্যাট করেছিলেন, যিনি মুম্বই পুলিশের এসআই হিসাবে নিজেকে জাহির করেছিলেন। পরবর্তীকালে, সৌরভ পুলিশের ইউনিফর্ম পরা একজন ব্যক্তির কাছ থেকে একটি ভিডিয়ো কলও পেয়েছিলেন। সৌরভের কথায়, তারপর আমি তৃতীয় একজন ব্যক্তির কাছ থেকে একটি ভিডিয়ো কল পেয়েছিলাম (+91 90324 07612)। তিনি পুলিশের ইউনিফর্মে ছিলেন এবং ইংরেজিতে কথা বলছিলেন। আর এখানেই মনে সন্দেহ জাগে সৌরভের। কারণ, নিজেকে পুলিশ জাহির করা ওই ব্যক্তির মরাঠি উচ্চারণ ছিল না।

ভিডিয়ো চ্যাটের পরে, সৌরভকে হেড কনস্টেবল হিসাবে জাহির করা অন্য একজনের সাথে কথা বলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তখনই সাংবাদিক নিজের বুদ্ধি খাঁটিয়ে প্রতারকদের সঙ্গে ঠাট্টা শুরু করেছিলেন। দাস বলেছিলেন, চতুর্থ জন হাইকোর্টের নাম নিয়ে, তখন আমার ‘বিবৃতি’ রেকর্ড করছিল এবং আমার আধার নম্বরও চেয়েছিল, যা আমি ভুলভাবে উল্লেখ করেছি। আমি দেখতে চেয়েছিলাম তারা এটা দিয়ে ঠিক কী করে। লোকটি ওয়াকি-টকিতে কথা বলছিল। লোকটি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে আমি কি তাঁদের থেকে কিছু লুকোচ্ছি। তখন আমি তাঁকে বলেছিলাম দাউদ আমার কাকু। কে দাউদ? তিনি বিস্ময়ের সঙ্গে প্রশ্ন করেন। আমি তখন বলেছিলাম, দাউদ ইব্রাহিম আমার কাকু। খুব স্বাভাবিকভাবেই সৌরভের এই উত্তরে রীতিমত হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন স্ক্যামাররা।

সাংবাদিক সৌরভ দাসের, এই অভিজ্ঞতাটি শেয়ার করার একটাই উদ্দেশ্য ছিল যে নেটিজেনদের এই প্রতারকদের বিষয়ে সাবধান করা, এবং মুম্বই পুলিশকে সবটা জানিয়ে দেওয়া। সৌরভের পোস্ট পড়ে একই ঘটনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন নেটিজেনরাও। একজন বলেছেন, একই কল এবং একই স্ক্যামার প্রদীপ সাওয়ান্ত প্রায় দুই সপ্তাহ আগে আমাকে প্রতারণা করেছিল। আমিও নিশ্চিত ছিলাম। অন্য একজন বলেছেন, সচেতনতাই মূল চাবিকাঠি।