আজ থেকে ৪০০ বছর আগে হরিয়ানায় পূজিত হতেন ভগবান বিষ্ণু ও মাতা লক্ষ্মী। তারই প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। হরিয়ানার সাইবার সিটি গুরুগ্রাম থেকে সামনে এসেছে চমকপ্রদ এই খবর। এখানে, মানেসারের বাঘনাকি গ্রামের নির্মাণ কাজের জন্য জমি খনন করার সময়, যোগ নিদ্রায় শায়িত ভগবান বিষ্ণু, সুদর্শন চক্র হাতে ভগবান বিষ্ণু এবং মাতা লক্ষ্মীর মূর্তি পাওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে মোট তিনটি মূর্তির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে এদিন। বর্তমানে তিনটি মূর্তিই চণ্ডীগড়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মূর্তিগুলো খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই তিন প্রতিমা প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো।
- মালিক মূর্তিগুলো লুকানোর চেষ্টা করেছিলেন
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গিয়েছে, বাঘানকি গ্রামে এক ব্যক্তির জমি জেসিবি দিয়ে খনন করা হচ্ছিল, খনন করার সময় শ্রমিকরা তিন মূর্তি দেখতে পেয়ে মালিককে সত্যটা জানায়। সবটা জেনে বুঝে, এই মূর্তিগুলো লোক চক্ষুর আড়ালে রাখতে চেয়েছিলেন মালিক। তাই এই মূর্তি সম্পর্কে যাতে কেউ না জানতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে প্রথমে প্লট মালিক জেসিবি চালককে টাকা দিয়ে প্রলোভন দিয়েছিলেন। আসলে মালিক নিজের বাড়িতে এই প্রতিমাগুলি স্থাপন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওই চালককে প্রলোভন দেওয়ার পর দু’দিন ধরে টাকা না পেলে জেসিবি চালক বিলাসপুর থানায় ঘটনাটি জানিয়ে দিয়েছিলেন।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মূর্তিগুলো নিজেদের হেফাজতে নিয়ে, এ ব্যাপারে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরকেও জানিয়ে দিয়েছিল। এ বিষয়ে খবর পেয়ে সোমবার প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের উপ-পরিচালক বনানী ভট্টাচার্য ও ডা. কুশ ধেবর থানায় গিয়ে তিনটি মূর্তি নিয়ে এসেছিলেন। তবে কিছু গ্রামবাসী জানিয়েছেন, এই মূর্তিগুলো তাঁদের গ্রামের ঐতিহ্য এবং যেখানে মূর্তিগুলো পাওয়া গিয়েছে সেখানে একটি মন্দির নির্মাণ করতে চান তাঁরা, যাতে সেখানে এই প্রতিমা স্থাপন করা যায়। কিন্তু পুলিশ প্রত্যাখ্যান করেছে গ্রামবাসীদের ইচ্ছা। পুলিশের দাবি, জমিতে খনন করার সময় পাওয়া বস্তুটি ভারত সরকারের সম্পত্তি এবং এর উপর প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধিকার রয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের উপ-পরিচালক বনানী ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, তিনটি মূর্তিই ব্রোঞ্জ ধাতুর এবং দামের দিক থেকে অমূল্য। একই সঙ্গে গ্রামবাসীর দাবিতে প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে প্লটটি আরও খনন করা হয়েছে। প্রথম নজরে, তিনটি মূর্তিই যেহেতু প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো বলে মনে হয়েছে, তাই এবার থেকে এই সমস্ত অমূল্য মূর্তি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের জাদুঘরে রাখা হবে।