সম্প্রতি একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট শিক্ষকদের সঠিক আচারণ এবং যে কোনও বিষয়ে রাজনীতি টেনে না আনার পরামর্শ দিয়েছে। কোন ধরনের আচারণ শিক্ষকদের মেনে চলতে হবে, তাও নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি শম্পা দত্ত (পাল)।
এই আচারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
১. শিক্ষার্থীদের সম্মান: শিক্ষার্থীদের মর্যাদা ও সুবিচার দিন, তাঁদের অংশগ্রহণকারীর ভূমিকায় এনে শিক্ষার সহায়ক পরিবেশকে উৎসাহিত করুন।
২. যোগ্যতা: তাদের বিষয় এবং শিক্ষণ পদ্ধতিতে নিজের দক্ষতা প্রদর্শন করুন।
৩. সততা: সমস্ত শিক্ষা সংক্রান্ত এবং প্রশাসনিক লেনদেনে সৎ এবং স্বচ্ছ হন।
৪. পেশাদারিত্ব: শিক্ষার্থী, সহকর্মী এবং কর্মীদের সঙ্গে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনায় যথাযথ সীমানা এবং আচরণ বজায় রাখুন।
৫. ন্যায্যতা এবং নিরপেক্ষতা: শিক্ষার্থীদের কাজ নিরপেক্ষ ভাবে মূল্যায়ন করুন এবং গঠনমূলক সমালোচনা করুন
৬. ক্রমাগত উন্নতি: শিক্ষার দক্ষতা বাড়াতে এবং আপটুডেট থাকার জন্য পেশাদারিত্ব বিকাশের লক্ষ্যে কর্মসূচিতে নিযুক্ত হন।
৭. পারস্পরিক সহযোগিতা: সহকর্মীদের সঙ্গে সহযোগিতা করুন এবং একাডেমিক ক্ষেত্রে ইতিবাচক অবদান রাখুন।
8. প্রাতিষ্ঠানিক নীতিগুলি মেনে চলুন: শিক্ষাদান, গবেষণা এবং শিক্ষার্থী সহায়তা সম্পর্কিত কলেজের নীতি এবং পদ্ধতিমেনে চলুন।
আরও পড়ুন। প্রাথমিকেও দেদার দুর্নীতি, রিপোর্ট দিল CBI, খাঁড়া ঝুলছে ৩২ হাজার চাকরির ওপর
হুগলি উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে দায়ের করা মানহানির মামলা খারিজ করে আদালত এই পরামর্শ দিয়েছে।
২ মে’র নির্দেশে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ,’রাজনৈতিক প্রভাবে শিক্ষা প্রদানের প্রাথমিক উদ্দেশ্যকে পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়। এই বিষয়টি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের প্রতিকূল পরিবেশ শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়ার পরিপন্থী।
মামলার শুনানিতে আদালত বলে, ২০১৫ সালে হুগলি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হওয়ার পর থেকে আদেনকারী ওই শিক্ষিকার নামে কিছু কাল্পনিক ষড়যন্ত্র নিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ।
আরও অভিযোগ যে, ২০১৮ সালের ৯ অগস্ট হুগলি মহিলা কলেজে আবেদনকারী এক প্রকাশ্য সাক্ষাৎকারে হুগলি মহিলা কলেজের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনা করেন।
অধ্যক্ষের দাবি, ওই সাক্ষাৎকারটি ২০১৮ সালের ১০ অগস্ট এবিপি আনন্দ প্রচার করে, যেখানে আবেদনকারী হুগলি মহিলা কলেজের চলমান রাজনৈতিক ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সমালোচনা করেন এবং বেশ কয়েকবার অভিযোগকারী শিক্ষক এবং জনৈক প্রিয়াঙ্কা অধিকারীর নাম উল্লেখ করেন, যিনি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) জেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক এবং হুগলি মহিলা কলেজের টিএমসিপি ছাত্র সংসদের সম্পাদক। কলেজের বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তাঁর নাম উল্লেখ করেন।
উচ্চমাধ্যমিক রেজাল্ট বেরোলেই ফোনে জানাবে HT বাংলা! এখনই রেজিস্টার করে রাখুন
মামলার যাবতীয় তথ্য খতিয়ে দেখে আদালত বলে, আবেদনকারীর করা অভিযোগগুলি ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ৪৯৯ ধারা (মানহানি) এর ‘ব্যতিক্রম’ এর আওতায় পড়বে।
আদালত বলেছে,’এই মামলায় লিখিত অভিযোগে বর্ণিত তথ্যগুলি ধারা ৪৯৯ এর অধীনে নির্ধারিত নবম ব্যতিক্রমের আওতায় আসে এবং এইভাবে ৫০০ ধারার অধীনে অভিযুক্ত অপরাধ গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলি বর্তমান মামলায় স্পষ্টভাবে অনুপস্থিত।’
সমস্ত নথি পরীক্ষা করে আদালত বলেছে, অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বা জ্ঞান বা বিশ্বাস নিয়ে অভিযোগকারীর সুনাম ক্ষুণ্ন হতে পারে এমন কোনও কাজের প্রমাণ নেই। মামলাটি খারিজ করে দিয়েছে আদালত।