পরিবহন খাতে ছাত্রলীগ সভাপতির চাঁদা দাবির অভিযোগ, প্রতিবাদে ৫২টি বাস বন্ধ

প্রকাশিত: ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম রকি ও তার বড় ভাই রাকিব পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে ‘যমুনা বাস’ থেকে মাসে দুই লাখ টাকা চাঁদ দাবি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চাঁদা না দেওয়ায় যমুনা বাসের দুই শ্রমিকে মারধর করার ও অভিযোগ রয়েছে রকির অনুসারীদের বিরুদ্ধে। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর বাস টার্মিনালে ‘যমুনা বাস’ ৫২টি বাস বন্ধ রেখে বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ও একাংশ মালিক পক্ষ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত চালক, শ্রমিক ও মালিক পক্ষ কেউ রকি ও রাকিব পাটোয়ারীর ভয়ে বিরুদ্ধে বক্তব্যে দেয়নি। তবে তাদের মধ্যেই একধরনের চাপা ক্ষোভ দেখা গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ফেনী-চৌমুহনী-লক্ষ্মীপুর (যমুনা হাই রিলাক্স ট্রান্সপোর্ট লিমিটেড) যমুনা বাস ২০ বছর ধরে যাত্রী সেবা দিয়ে যাচ্ছে সুনামের সঙ্গে। দুই মাস পূর্ব থেকে সাইফুল ইসলাম রকি ও তার ভাই রাকিব পাটোয়ারী ২ লাখ টাকা চাঁদা দিতে চাপপ্রয়োগ করে কতৃপক্ষকে। যমুনা কতৃপক্ষ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে, গেল বছর ৬ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর বাস টার্মিনাল ‘যমুনা বাস’ প্রধান কাউন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়। জকসিন, মান্দারি ও চন্দ্রগঞ্জ কাউন্টার গুলো খোলা থাকলেও, সেইগুলোর দায়িত্বরত লোকজনকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। সর্বশেষ ৪ ফেব্রুয়ারি এসব কাউন্টারও বন্ধ করে দেয় রকির অনুসারীরা। এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বাস পরিবহন দায়িত্বশীল নেতাদের জানানো হয়েছে। তবুও তারা সুবিচার পাননি বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।

জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম রকি সাংবাদিকদের জানান, আমার চাচার ৩টি যমুনা (বাস) গাড়ি রয়েছে। সেই গাড়িগুলো আমি ও আমার বাবা দেখবাল করি। যমুনা হাই রিলাক্স এর ভুয়া চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিলন প্রতিমাসে ৩টি গাড়ি থেকে ৬’শ টাকা করে মাসে ১৮’শ টাকা চাঁদা নেয়। এ বিষয়টি আমাদের মূল দ্বন্দ্ব। আমি চাঁদাবাজি করবো কি জন্য? তারা আমাদের গাড়ি থেকে চাঁদা নেয়। আমরাও লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করছি চাঁদা বন্ধের দাবিতে।

যমুনা হাই রিলাক্স চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিলন সাংবাদিকদের জানান, লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম রকি প্রথমে লোক মারফতে আমার কাছে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ার কারণে আমাদের কাউন্টার গুলো বন্ধ করে দেয় এবং আমাদের শ্রমিকদের মারধর করে। এ বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানিয়েছি। সঠিক সমাধান পায়নি। এজন্য শ্রমিকরা তাদের নিরাপত্তার জন্য কর্মসূচি পালন করছে বাস বন্ধ রেখে।

লক্ষ্মীপুর জেলা বাস পরিবহনের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ.কে.এম সালাহ্ উদ্দিন টিপু মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি আমরা মৌখিকভাবে শুনছি। কেউ লিখিত ভাবে জানাননি। আবুও আমাদের পরিবহনের সভাপতির সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমাধান করা হবে।

লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনে সাথে-সাথেই সদর ওসি ও পুলিশ বিশেষ শাখার প্রধানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। বাস বন্ধ থাকার কারণে সাধারণ জনগণ ভোগান্তিতে পড়বে এটা কিছুইতে কাম্য নয়।

শাকিল/সাএ