বিকাশ মিশ্রকে হাসপাতালে পাঠিয়ে জেল খাটার জোগাড় হল প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের

কয়লাপাচারকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত বিকাশ মিশ্রকে আড়াল করতে গিয়ে জেল খাটার জোগাড় হল জেলের সুপারেরই। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছেন, বিকাশ মিশ্রকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অপরাধে জেলের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তীকে যদি জরিমানা জমা করে না থাকেন তাহলে তাঁকে ৭ দিনের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

গত বছর ১৫ অগাস্ট সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন বিকাশ মিশ্র। সিবিআই হেফাজত শেষে বিকাশ জেলে গেলে সিবিআই আদালতে আবেদন করে যে বিকাশ মিশ্র বারবার শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে জেরা এড়াচ্ছেন। নিয়মিত তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করতে চায় সিবিআই। আবেদনের প্রেক্ষিতে সিবিআইয়ে ৪৮ ঘণ্টা অন্ত বিকাশের স্বাস্থ্য পরীক্ষার অনুমতি দেয় আদালত। সেই নির্দেশ অনুসারে ৩১ অগাস্ট প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে বিকাশের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন সিবিআইয়ের চিকিৎসক। ৩ সেপ্টেম্বর ফের সিবিআই জেলে বিকাশের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গেলে সুপার বাধা দেন বলে অভিযোগ। সিবিআই জানায়, সুপার বলেন, বিকাশের স্বাস্থ্য পরীক্ষা আগেই হয়ে গিয়েছে। এর জেরে সুপারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করে সিবিআই।

সেই মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ বলেন, জেলে সমস্ত বন্দির প্রতি সমান আচরণ করতে হবে। সুপার বিনয় মিশ্রকে যে বাড়তি সুবিধা দিয়েছেন তা উদ্বেগের। এই ধরণের পক্ষপাতিত্ব দেখে আদালত চুপ করে বসে থাকতে পারে না। এটা অবিচার। এই মামলায় গত ২২ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির হয়ে ক্ষমা চেয়েছিলেন জেল সুপার। কিন্তু আদালত তাঁকে ক্ষমা করবে না। রাজ্যের সব থেকে বড় জেলের সুপারের এই আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। বিকাশ সুস্থ হওয়ার পরেও কেন তাঁকে হাসপাতালে রাখা হল? জেনে বুঝে বিকাশকে হাসপাতালে রেখে তদন্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন জেলের সুপার। তাকে বার বার হাসপাতালে পাঠিয়ে আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছেন সুপার। একজন সরকারি কর্মচারীর এত সাহস হয় কী করে? বিকাশ মিশ্রকে জেলে ফেরাতেই হবে।

এর পর বিচারপতি বলেন, জেল সুপারকে ১০০০০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে বলা হয়েছিল। সেই টাকা তিনি যদি আদালতে জমা করে না থাকেন তাহলে তাঁকে ৭ দিনের কারাদণ্ডের সাজা ভোগ করতে হবে।