Footballer Tulsidas Balaram Deserved Padmashree And Was Betrayed Feels Satyajit Chatterjee

কলকাতা: দীর্ঘদিন অসুস্থতায় ভোগার পর, ১৬ ফেব্রুয়ারি না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন কিংবদন্তু ফুটবলার তুলসীদাস বলরাম (Tulsidas Balaram)। রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর উদ্দেশেই এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছিল উত্তরপাড়ার তরুণ সংঘ ক্লাবের তরফে। সেখানে প্রাক্তন ফুটবলার সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের (Satyajit Chatterjee) এক মন্তব্য ফের একবার বিতর্কও উস্কে দিল।

কিংবদন্তির স্মরণসভা

রবিবার সকালে উত্তরপাড়া পৌরসভার নেতাজি অডিটোরিয়ামে তুলসীদাস বলরামের শ্রাদ্ধবাসর অনুষ্ঠিত হয়। তারপর একইদিনে বিকেলে উত্তরপাড়া জয়কৃষ্ণ গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে বলরামের স্মরণসভায় একগুচ্ছ প্রাক্তনীরা কিংবদন্তি তুলসীদাসকে সম্মান জানাতে হাজির হয়েছিলেন। স্মরণসভায় হাজির ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তরপাড়া পুরসভা পুরপ্রধান দিলীপ যাদব, প্রাক্তন সাংসদ শান্তশ্রী চট্টোপাধ্যায় সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। ছিল তরুণ সংঘ ফুটবল ক্যাম্পের খুদে শিক্ষার্থীরাও।

তাঁর জন্য আয়োজিত স্মরণসভাতেই কিংবদন্তি তুলসীদাসের পদ্মশ্রী না পাওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে বিতর্ক উস্কে দেন সত্যজিৎ। তিনি বলেন, ‘(ওঁর) পদ্মশ্রী পাওয়া উচিত ছিল। শেষদিন পর্যন্ত ওঁ বঞ্চিত রয়ে গেলেন।’ তবে পদ্মশ্রী পাওয়া না হলেও, তাঁকে সম্মান জানিয়ে চিরস্মরণীয় করে রাখতে উদ্যোগী উত্তরপাড়া পুরসভার পুরপ্রধান। দিলীপ যাদব জানান, খুব শীঘ্রই তুলসীদাস বলরামকে সম্মান জানাতে তাঁর নামে উত্তরপাড়ায় একটি মাঠের নামকরণ করা হবে।

বলরামের কীর্তি

বাইপাসের ধারে এক নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন তুলসীদাস। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। ১৬ তারিখ দুপুরেই শেষমেশ প্রয়াত হন কিংবদন্তি। চুনী, পিকে, বলরাম। ভারতীয় ফুটবলের অপ্রতিরোধ্য ‘থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’। ময়দানে যাঁরা পরিচিত ছিলেন ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর নামে। কিছুদিন আগেই প্রয়াত হয়েছিলেন পিকে বন্দ্যোপাধ্যায় ও চুনী গোস্বামী। এবার চলে গেলেন তাঁদের এক অভিন্নহৃদয় বন্ধু তুলসীদাস বলরামও। প্রাক্তন ফুটবলারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু অরুণ ঘোষের কথায় ধুরন্ধর ফরোয়ার্ড বলরামের শুধু সামনে নয়, তাঁর মাথার পিছনেও যেন দু’টো চোখ ছিল।

১৯৫৭-তে নিজামের শহর থেকে পাকাপাকিভাবে কলকাতায় আসেন বলরাম। সই করেন ইস্টবেঙ্গলের হয়ে। লাল হলুদের হয়ে ১৯৫৭ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত মাঠ কাঁপিয়েছেন তিনি। ১৯৬১-তে বলরামের নেতৃত্বেই কলকাতা লিগ ও আইএফএ শিল্ড জেতে লাল হলুদ। ২৩ টি গোল করে সেই বছর বলরামই হন সর্বোচ্চ স্কোরার। শুধু ক্লাবের জার্সিই নয়, দেশের জার্সিতেও কিন্তু ফুল ফুটিয়েছেন তারকা ফরোয়ার্ড। ১৯৫৮ সালের এশিয়ান গেমসে হংকংয়ের বিরুদ্ধে বিধ্বংসী ফুটবল খেলেন বলরাম। তাঁর গোল ও অ্যাসিস্টেই ৫-২-এ হংকংকে হারায় ভারত।

চার বছর পর জাকার্তা এশিয়ান গেমসে সোনাজয়েও তাঁর অবদান ছিল অপরিসীম। ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়াকে ২-১ হারায় ভারতীয় দল। এর আগে ১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিক্সেও বলরাম ভারতের হয়ে অনবদ্য পারফর্ম করেন। ‘গ্রুপ অফ ডেথে’ ফ্রান্স, হাঙ্গেরি, ও পেরুর সঙ্গে ছিল ভারতীয় দল। প্রথম ম্যাচে ভারতীয় দল হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে ২-১ পরাজিত হলেও, গোল করেন বলরাম। দ্বিতীয় ম্যাচে ফ্রান্সকে হারানোর সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও তা হাতছাড়া করে ভারত। সেই ম্যাচেও বলরামে পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো। দুর্ভাগ্যবশত শারীরিক অসুস্থতার কারণে ১৯৬৭-তে অবসর নেন বলরাম। ময়দান ছাড়লেও পিকে, চুনী ও বলরাম, ত্রিমূর্তির বন্ধুত্ব কিন্তু অটুটই ছিল।

আরও পড়ুন: ইডেনে সৌরভের সঙ্গে ক্রিকেট খেললেন রণবীর, বায়োপিকে তিনিই কি নামভূমিকায়?