Coochbehar Incident: ‌অভিষেকের তাঁবুতে এলেন বিএসএফের গুলিতে নিহতের পরিবার, কী দাবি করলেন?

একদা বামদুর্গ। পরে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে গিয়েছিল। কিন্তু সেখানে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে পদ্ম ফোটানো হয়েছিল। পর পর দুটি নির্বাচনে গেরুয়া শিবির বাজিমাত করেছে এই জেলায়। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এবং একুশের বিধানসভা নির্বাচনে। দুটি নির্বাচনেই জেলায় ভাল ফল করেছে বিজেপি। কিন্তু সেই ছবিটাই এবার যেন বদলে যেতে চলেছে। তৃণমূলে নব জোয়ার কর্মসূচি নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহার এসেছেন। আর তাঁকে ঘিরে জনস্রোত দেখা দিয়েছে। যা ভাবাচ্ছে বিজেপিকে। আর আজ, মঙ্গলবার প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের নেতৃত্ব। কারণ বামনহাটের অস্থায়ী তাঁবুতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন গিতালদহের বিএসএফ–এর গুলিতে নিহত প্রেম কুমার বর্মণ এবং মোফাজ্জল হোসেনের পরিবার।

এদিকে অভিষেককে ঘিরে যে ভিড় তা স্বতঃস্ফূর্ত ভিড়। এটা বিজেপিকে তো ভাবাচ্ছেই বরং আজকের ঘটনা আরও বেশি করে ভাবিয়ে তুলেছে। কারণ এদিন প্রেম কুমার বর্মণের পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর বাবা ও মা এবং মোফাজ্জল হোসেনের পরিবারের থেকে তাঁর স্ত্রী ও কন্যা আসেন। তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর তাঁবুতে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। কোচবিহার জেলায় যাঁরা বসবাস করেন তাঁদের একটা বড় অংশই রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ। একুশের নির্বাচনে শীতলকুচিতে চারজন নিরীহ সংখ্যালঘু ভোটারকে গুলি করে মেরেছিল অমিত শাহের কেন্দ্রীয় বাহিনী। সেটা ভালভাবে নেননি জেলার মানুষজন। এখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। তিনি মন্ত্রী থাকতেই প্রেম কুমার বর্মণ এবং মোফাজ্জল হোসেন বিএসএফের গুলিতে মারা যান। তারপর এই সাক্ষাৎ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।

ঠিক কী দাবি প্রেম কুমারের পরিবারের?‌ অন্যদিকে প্রেম কুমারের বাবা–মা আজ এসে দেখা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তাঁবুতে। সেখানে চোখের জল ফেলে তাঁরা অভিষেককে বলেন, ‘‌আপনার কাছে আমাদের কোনও বাড়তি দাবি নেই। তবে শুধু একটাই দাবি করব, আমরা চাই আমাদের ছেলের মৃত্যুর যেন বিচার হয়।’‌ অভিষেক তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন। বিএসএফের গুলিতে এখানে অনেকেই মারা গিয়েছেন। যাঁরা সংখ্যালঘু নন, হিন্দু। এমনকী রাজবংশীও। নিশীথ প্রামাণিক একদিনের জন্যও ওই সব মানুষদের পরিবারের পাশে দাঁড়াননি। বিএসএফের গুলি চালানোর বিন্দুমাত্র প্রতিবাদ করেননি। একটিও প্রশ্ন তোলেননি। তাঁর এই নীরবতা জেলার মানুষজন বিশেষ করে রাজবংশীরা ভালভাবে নেননি বলে খবর।

ঠিক কী দাবি মোফাজ্জলের পরিবারের?‌ এই পরিবারটিও আজ তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করেন। মোফাজ্জল হোসেনের স্ত্রী অভিষেককে বলেন, ‘‌আমার স্বামী পরিবারের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম ছিল। তাই আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর আমাদের পরিবার একেবারে চলছে না। তাই একটা নির্দিষ্ট কাজের দাবি আপনাকে জানাচ্ছি।’‌ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেটাও দেখবেন বলে কথা দিয়েছেন। নিশীথ প্রামাণিককে সামনে রেখে অমিত শাহ আসলে কোচবিহারে বিএসএফের মাধ্যমে বন্দুকের রাজত্ব কায়েম করতে চাইছেন বলে মনে করছেন মানুষজন। তাই এবার রুখে দিতে উঠে পড়ে লেগেছেন কোচবিহারের মানুষ। সেই কারণেই এই সাক্ষাৎ এবং জনস্রোত দেখা দিয়েছে।