মাজার-কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে গাজীপুরে প্রচারণা শুরু

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর মাজার-কবর জিয়ারত ও গণসংযোগের মধ্য দিয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন প্রার্থীরা। মঙ্গলবার (০৯ মে) সকালে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুপুরের পর থেকে প্রচারণা শুরু করেছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ভোটারদের নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। বিভিন্ন এলাকায় চলছে মাইকিং।

মেয়র পদে মনোনয়ন বাতিল হওয়া ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে সঙ্গে নিয়ে দুপুরে স্বামীর কবর জিয়ারত করে প্রচারণা শুরু করেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। এরপর স্বামীর পূর্বনিবাস মহানগরের কানাইয়া এলাকার বাসিন্দাদের কাছে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ভোট চান।

জায়েদা খাতুন বলেন, এই শহর রক্ষার স্বার্থে, মানুষের কল্যাণের জন্য ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে প্রার্থী হয়েছি। জণগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমি নগরীর অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে চাই। ইতোমধ্যে আমার ছেলে নগরীতে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছে, রাস্তাঘাট উন্নয়ন-সংস্কার করেছে। আরও কাজ অসমাপ্ত আছে, সেগুলো সমাপ্ত করার পাশাপাশি নগরীর উন্নয়নে কাজ করতে চাই। নগরবাসীর কাছে দোয়া ও ভোট চাই। আপনারা আমার পাশে থাকেন।

বিকালে মাকে নিয়ে টঙ্গী এলাকায় প্রচারণা চালিয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় তিনি বলেন, আমি এই সিটিকে গ্রাম থেকে শহরে রূপান্তর করতে চেয়েছিলাম। সেই কাজে হাতও দিয়েছিলাম। আমার মায়ের নির্দেশে ৮০০ কিলোমিটার রাস্তা করেছিলাম। এখন মা যখন দেখেছেন কাজগুলো থেমে গেছে, তখন তিনি মাঠে নেমেছেন। এ জন্য এই শহরকে সুন্দর রাখতে মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছি। আপনারাও তার পাশে দাঁড়ান।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রতীক বরাদ্দ নেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান। প্রতীক বরাদ্দের পর সদর এলাকায় গণসংযোগ করেন। পরে তেলিপাড়ায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর যুবলীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে মতবিনিময় করেন। দুপুরে বাসন এলাকায় গণসংযোগ করেছেন।

আজমত উল্লা খান বলেন, নাগরিক সুবিধা সংবলিত আধুনিক সিটিতে গড়তে নৌকায় ভোট চাই।

প্রতীক পাওয়ার পর বিএনপি পরিবারের সদস্য সরকার শাহনুর ইসলাম রনি ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ সাব মাজার জিয়ারত করে প্রচারণা শুরু করেন। পরে টঙ্গী বাজার, মিলগেট ও দেওড়া এলাকায় গণসংযোগ করেন।

গণসংযোগকালে তিনি বলেন, ভোটারদের দারুণ সাড়া পাচ্ছি। নির্বাচিত হলে নগরীকে দূষণ ও ধুলামুক্ত করবো। পর্যায়ক্রমে ড্রেনেজ, রাস্তা, পয়োনিষ্কাশন কার্যক্রম জোরদার করবো।

বিকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান সদর থানা, বাসন থানা ও কোনাবাড়ী থানা এলাকায় গণসংযোগ করেন।

তিনি বলেন, গণসংযোগ শুরু করেছি। ভোটারদের ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছি। অনেকে ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন আট জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান (নৌকা), জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন (লাঙল), স্বতন্ত্র জায়েদা খাতুন (টেবিল ঘড়ি), গণফ্রন্ট আতিকুল ইসলাম (মাছ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান (হাতপাখা), শাহানুর ইসলাম রনি (হাতি), জাকের পার্টির রাজু আহম্মেদ (গোলাপ ফুল) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হারুন-অর রশিদ (ঘোড়া)।

সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি। ৫৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৩৯, সংরক্ষিত ১৯টি নারী কাউন্সিলর পদে ৭৭ জন লড়ছেন।

সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রার্থীরা নির্বাচনি আরচণবিধি মেনে প্রচারণাসহ সব ধরনের নির্বাচনি কাজ করতে পারবেন। প্রার্থীরা আচরণবিধি মানছেন কিনা, তা দেখার জন্য আজ থেকে মাঠে দায়িত্ব পালন করছেন ২০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। আগামী ২৫ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।