Kerala High Court on animal sacrifice: পশু বলির মতো অবৈজ্ঞানিক ধর্মীয় রীতি রুখতে হবে, পর্যবেক্ষণ কেরল হাই কোর্টের

ধর্মে বিশ্বাসও আছে আবাহ ‘অন্ধবিশ্বাস’ আছে। এই আবহে এবার ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান নিয়ে বড় পর্যবেক্ষণ কেরল হাই কোর্টের। কেরল হাই কোর্টের তরফে পর্যবেক্ষণে বলা হল, অস্বাস্থ্যকর এবং অবৈজ্ঞানিক সকল রীতি বন্ধ হওয়া উচিত। ধর্মীয় ভাবাবেগের কারণেও যদি সেই রীতি পালন হয়ে থাকে, তাও তা বন্ধ হওয়া উচিত বলে মত উচ্চ আদালতের বিচারপতির। হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি ভিজি অরুণ এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে ডঃ বিআর আম্বেডকরকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘ডঃ আম্বেডকর বলেছিলেন, সত্যিকারের ধর্মী রীতি যুক্তির ভিত্তিতে পালন করা উচিত। মানবিকতার স্বার্থে ধর্মীয় রীতি পালন করা উচিত। ধর্মের প্রতি অন্ধবিশ্বাস থেকে কোনও রীতি পালন করা ঠিক নয়।’

আদালত আরও বলে, ধর্মের নামে পশু বলি একটি অন্ধ বিশ্বাসের থেকে জন্ম নেওয়া রীতি। এই রীতি বন্ধ করা উচিত। তিনি বলেন, সংবিধানের ২১ এবং ২৫ নং ধারা অনুযায়ী অনুযায়ী ধর্ম পালনের স্বাধীনতা রয়েছে। তবে এই ক্ষেত্রে পশু বলি ধর্মীয় রীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও এটা ঠিক নয়। এরপর বিচারপতি পর্যবেক্ষণ করেন, বিগত সময়ে ভারত অনেক ধর্মীয় রীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। সতি দাহ, নরবলি এবং বাল্যবিবাহের মতো রীতিকে আইনত নিষিদ্ধ করা হয়েছে দেশে।

বিচারপতি বলেন, সংবিধানের ২৫ নং ধারায় বলা হয়েছে যে একজন মানুষ নিজের ধর্মী বিশ্বাস নিয়ে স্বাধীন ভাবে বাঁচতে পারে এই দেশে। তবে তাতে এও বলা হয়েছে যে সেই বিশ্বাসের কারণে জনসাধারণের সমস্যা যাতে না হয় এবং সমাজে যাতে শান্তি বজায় থাকে। পাশাপাশি সেই ধর্মীয় বিশ্বাসের থেকে জন্ম নেওয়া রীতি অমানবিক হলেও তা পালন করতে দেওয়া চলে না। সংবিধানের ২১ নং ধারা অনুযায়ী কোনও ব্যক্তি স্বাধীন ভাবে নিজের ধর্ম পালন করতে পারেন, পুজো, প্রার্থনা করতে পারেন। তবে তার সেই রীতির জন্য কোনও জীব হত্যা করা যায় না।

উল্লেখ্য, ধর্মীয় রীতির নামে পাখি বা অন্যান্য পশুর বলি রোধ করার আবেদন জানিয়ে একজন হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই শুনানি চলাকালীন বিচারপতি এই পর্যবেক্ষণ করেন। আবেদনকারীর অভিযোগ, শ্রীভ্রমরম্বিকা বিষ্ণুমায়াস্বাম দেবস্থানম্ প্রার্থনার নামে পশু বলি দিচ্ছে। এবং সেই বলির রক্ত রাস্তায় ভেসে আসছে। সেই মৃত পশুগুলির দেহাংশ এখানে সেখানে ফেলে রাখা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আদালতের কাছে দ্বারস্থ হয়ে আবেদনকারী দাবি জানান, স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং পুলিশকে যেন এর প্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।