‘‌পশ্চিমবঙ্গ মডেল’ সারা দেশে চালু করা সম্ভব নয়, রেশন নিয়ে জানিয়ে দিল কেন্দ্র

বাংলার মানুষ বিনামূল্যে রেশনের মাধ্যমে চাল–গম পান। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কাজটি করে নজির সৃষ্টি করেছেন। দেশের মধ্যে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গে এই ব্যবস্থা চালু রয়েছে। করোনাভাইরাস যখন গোটা বিশ্বে মারাত্মক থাবা বসিয়েছিল তখন থেকে এই ব্যবস্থা চালু করেছিলেন তিনি। কারণ করোনাভাইরাসের জন্য গোটা দেশে লকডাউন পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাতে মানুষের জীবন–জীবিকার উপর সরাসরি আঘাত নেমে আসে। তখন বাংলার মানুষের মুখে এভাবেই খাবার জুগিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তবে তার পর মহামারি কাটিয়ে উঠলেও এই পরিষেবা থেকে বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করেননি তিনি। খাদ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় এই পরিষেবা দিয়ে আসছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেখানে বাকি রাজ্যগুলিতে শুধু জাতীয় খাদ্য সুরক্ষার আওতাধীন নাগরিকরাই রেশনের খাদ্য পান। এই পরিস্থিতিতে সবাইকে খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে ‘পশ্চিমবঙ্গ মডেল’ গোটা দেশে চালু করার দাবি উঠেছে। একাধিক রেশন ডিলার সংগঠনের পক্ষ থেকে এই মর্মে কেন্দ্রকে আবেদন করা হয়। কিন্তু সেই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার লিখিতভাবে জানিয়ে দিল, পশ্চিমবঙ্গের মতো ব্যবস্থা তারা সারা দেশে চালু করতে চাইছে না।

কেন চালু করতে চাইছে না? কেন্দ্রীয় সরকার সারা দেশে পশ্চিমবঙ্গ মডেল চালু করতে চাইছে না তার‌ কারণ তারা জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনকেই ঢাল করছে। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য, আইনে বলা আছে শহর এলাকায় ৫০ শতাংশ এবং গ্রামে ৭৫ শতাংশ মানুষ খাদ্য সুরক্ষার আওতায় থাকবে। তাই দেশের ৮০ কোটি মানুষ এখন জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধা পান। কিন্তু দেশের জনসংখ্যা এখন প্রায় ১৪০ কোটি স্পর্শ করেছে। জনসংখ্যা বাড়লেও ২০১৩ সালে এই প্রকল্পের জন্য রাজ্যগুলির যে কোটা নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেটা এখনও অপরিবর্তিত আছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোটা বাড়ানোর আবেদন জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে খবর।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ কেন্দ্রীয় সরকার এই রেশন নিয়ে একটি ইঙ্গিত দিয়েছে বলে সূত্রের খবর। তাতে জানা যাচ্ছে, আগামী দিনে খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের কোটা কমানো হবে। কেন্দ্রের ‌এই নীতির জেরে বহু গরিব মানুষ রেশনে বিনা পয়সার খাদ্য থেকে বঞ্চিত হবেন। অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের পক্ষ থেকে একাধিকবার খাদ্যমন্ত্রককে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু। এমনকী প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়ও। তার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের মতামত জানিয়ে ফেডারেশনকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। সেখানেই স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, ‘পশ্চিমবঙ্গ মডেল’ সারা দেশে চালু করা সম্ভব নয়।