Galiff Street Pet Market: গাছ লাগিয়ে লঙ্কা খাবে মধ্যবিত্ত, গ্যালিফ স্ট্রিটের হাটে তুঙ্গে ছিল চারার চাহিদা

তখন ঘড়িতে দুপুর বারোটা। অনেক খোঁজাখুজি করার পর কলকাতার গ্যালিফ স্ট্রিটের হাটে মাত্র বা দু’জনের কাছে মিলল লঙ্কার চারা। তাও আবার পড়ে আছে মাত্র ১-২ বান্ডিল করে। একজনের কাছে চারাগুলি খুবই ছোট। অন্য জনের চারাগুলি তুলনামূলক ভাবে বড়। কেন এমন অবস্থা? তবে দামের নাগাড়ে ছ্যাঁকায় বিধ্বস্ত মধ্যবিত্ত কী লঙ্কা গাছ লাগিয়ে খাওয়ার পরিকল্পনা করেছে?

উত্তর হ্যাঁ-ই এল। গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে লঙ্কার চারার চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা অবাক বিক্রেতারাও। ডায়মন্ড হারবারের মগরাহাট থেকে আসা এক চারা বিক্রেতা জানালেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এবার লঙ্কার চারা তাড়াতাড়ি বিক্রি হয়ে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘ এ সপ্তাহের মধ্যে দেখলাম হুহু করে লঙ্কার চারা বিক্রি হয়ে গেল। সকাল বারোটার মধ্যে সব শেষ। এমনটা হবে জানালে আরও বেশি চারা আনতাম।’

(পড়ুন: সেদ্ধভাত হোক বা কষা মাংস, পাতে রাখেন কাঁচা লঙ্কা? এর উপকারিতা চমকে দেবে) 

হাটে সাধারণ এই ধরনের শাক-সবজির চারা সবাই বিক্রি করে না। গুটি কয়েক বিক্রেতার কাছেই মেলে লঙ্কা, বেগুন, লাউ, পুঁই-এর চারা। তাই তারাও বাজার বুঝে চারা আনেন।

এক ডজন চারার দামও খুব একটা কম নয়। ছোট সাইজের লঙ্কার এক ডজন চারার দাম ৪০টাকা। একটু বড় সাইজের চারা বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা ডজন হিসাবে।

এক বান্ডিল লঙ্কার চারা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৭০ টাকা দরে

(নিজস্ব চিত্র)

এত দাম কেন? জিজ্ঞাসা করতেই এক দোকানি গলার স্বর চড়া করে বললেন,’বাজারে লঙ্কার কত দর জানেন না। তখন তো কই কিছু বলেন না। চারার দাম শুনেই চিৎকার করছেন।’

লঙ্কার দাম গত সোমবারেরও কলকাতা ও শহরতলীর বাজারে ছিল ৪০০ টাকা। কাঁচা সবজির বাজারে এই হঠাৎ মূল্যবদ্ধি রুখতে শহরের বেশ কয়েকটি বাজারে টাস্ক ফোর্স ঘুরে বেড়িয়েছে। তার পর কিছুটা কমছে। সবজি ব্যবসায়ীরা মনে করছেন দাম এবার ধাপে ধাপে বেশ খানিকটা কমবে।

শিয়ালদহ কোলে মার্কেট ভেন্ডারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কমল দে বললেন, ‘রাজ্যে লঙ্কা আসে কাটিহার থেকে। অনেকদিন ধরে ওই এলাকা থেকে লঙ্কা আসছিল না। কিন্তু আবার লঙ্কা আসতে শুরু করেছে। তাই আশা করা যায় ধাপে ধাপে লঙ্কার দাম কমবে।’

তবে সেই ভরসায় আর থাকতে নারাজ মধ্যবিত্ত। বাড়িতে লঙ্কার চারা লাগিয়ে লঙ্কা খাওয়ার পরিকল্পনা সারা। বরানগর থেকে আসা এক ক্রেতা বললেন (এরমধ্যই তিনি দুটি জবা এবং একটি লেবুর চারা কিনেছেন) , ‘ছাদেই গুটি কয়েক গাছ বসিয়েছি। দুটো টব পড়ে আছে। লঙ্কা চারা লাগব। আগে লাগিয়ে ছিলাম। প্রচুর ঝাড় হল, লঙ্কা তেমন হল না। এবার দেখা। বাজারে যা দাম লঙ্কার। হলে তরকারির দরকারটা মিটে যাবে।’ তাঁর কথা কথা শেষ করার আগে চারা বিক্রেতা কথা ধরে নিয়ে বললেন,’আরে এই চারা নিয়ে যান। চার ইঞ্চি বাড়ালেই গাছে লঙ্কা ধরবে। খুব ঝাল!’

জিনিসের দাম বাড়ায় বেশ কয়েক দশক আগে শহরের বুকে ট্রাম পুড়ত, বাস পুড়ত। আজ সে সব অতীত। ট্রাম তো বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি। সংরক্ষণ করে রাখা চেষ্টা করছে সরকার। তবে কী মধ্যবিত্ত কৌশল পাল্টেছে? দাম বাড়লেও ঘরের কোণে গাছ লাগিয়ে সুরাহা খুঁজছে তারা?