RSS on Manipur Violence: মণিপুরে স্থায়ী শান্তির পক্ষে সওয়াল RSS-এর, পদক্ষেপের আর্জি মোদী সরকারের কাছে

গত মে মাস থেকেই জাতিগত হিংসার আগুনে পুড়ছে উত্তরপূর্বের মণিপুর। এই নিয়ে বারংবার বিরোধীরা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তোপ দেগেছেন। এই ইস্যুতে সর্বদল বৈঠকও হয়েছে দিল্লিতে। তবে তা হিংসা শুরুর প্রায় দু’মাস পরে। উত্তরপূর্বের এই রাজ্যে মোতায়েন রয়েছে সেনা। তবে এখনও ধারাবাহিক ভাবে হিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে সেখানে। সঙ্গে ঘটছে প্রাণহানী। এই হিংসা নিয়ে মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালতে মণিপুর সরকার জানিয়েছে, শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে হিংসায়। ঘরছাড়া হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ হাজার। এই আবহে এবার মণিপুরে শান্তি ফেরানোর বার্তা দিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। মণিপুরের পরস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আরএসএস-এর তরফে সরকারের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে, পুনরায় শান্তি ফেরাতে এবং ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে যথা সম্ভব পদক্ষেপ করা হোক।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ ভারতের উটিতে অনুষ্ঠিত হয় আরএসএস-এর বার্ষিক সভা – ‘অখিল ভারতীয় প্রচারক বৈঠক’। শনিবার সেই সভা শেষ হয়। সেখানেই আরএসএস-এর তরফে মণিপুর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। স্থানীয় মানুষের মধ্যে সরকারের প্রতি আস্থা ফেরানোর বার্তা দেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে আরএসএস-এর মুখপাত্র সুনীল আম্বেকর বলেন, ‘মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় বৈঠকে। মণিপুরে শান্তি ফেরাতে এবং মানুষের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ফেরাতে আরএসএস-এর কর্মীরা যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। মণিপুরে যে সব পরিবার হিংসার শিকার, তাদের সাহায্য করবে আরএসএস।’

সংঘ প্রধান মোহন ভাগবত নিজে এই বৈঠকে মণিপুর নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানা গিয়েছে। কীভাবে মণিপুরে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই নিয়ে সুনীল আম্বেকর বলেন, ‘সমাজের সকল স্তরের মানুষের কাছেই আমরা আহ্বান করছি যাতে সংহতি ফিরিয়ে শান্তি পুনরস্থাপন করা যায়। সরকারের প্রতি আমাদের আবেদন, স্থায়ী ভাবে শান্তি ফেরাতে মণিপুরে যথাসাধ্য পদক্ষেপ করা হোক।’

উল্লেখ্য, উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিতে বিগত কয়েক দশক ধরে তৃণমূল স্তরে কাজ করে চলেছে আরএসএস। উত্তরপূর্বে বিজেপির উত্থানের অন্যতম মূল কারণ আরএসএর-এর নীরব কর্মকাণ্ড। এই আরএসএস বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই উত্তরপূর্বে ধর্মান্তকরণ এবং অনুপ্রবেশের মতো ইস্যু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এসেছে। এসবের মাঝেই মণিপুরে মৈতৈ এবং কুকিদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী এই সংঘর্ষ শুরু হয়। গত ১৮ জুন মণিপুর হিংসা নিয়ে আরএসএস সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবলেও মুখ খুলেছিলেন। এই হিংসাকে ‘বেদনাদায়ক’ আখ্যা দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। ‘আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের’ পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।

উল্লেখ্য, মণিপুরের জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ হল মৈতৈ। তবে সেই রাজ্যের মাত্র ১০ শতাংশ এলাকায় তাদের বাস। মূলত ইম্ফল উপত্যকাতেই মৈতৈরা থাকে। এদিকে সম্প্রতি মৈতৈরা দাবি তোলে যে তাদেরও তপশিলি উপজাতিভুক্ত করতে হবে। এই নিয়ে মামলা হয় আদালতে। এদিকে মৈতৈদের এই দাবির বিরোধিতায় রাস্তায় নামে কুকি জনজাতির ছাত্র সংগঠন। তাদের দাবি, রাজ্যের সংখ্যাগুরুরা যদি সংরক্ষণের আওতায় চলে আসে, তাহলে এই ধরনের সংরক্ষণের কোনও অর্থ নেই। এই সবের মাঝেই আরএসএস-এর সংগঠন ‘বনবাসী কল্যাণ আশ্রম’ দাবি জানিয়েছিল, রাজনৈতিক কারণে কোনও জনজাতিকে যেন তপশিলি উপজাতিভুক্ত না করা হয়। আবার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগু করা হলে, তার থেকে উপজাতিগুলিকে বাদ দেওয়ারও পরামর্শ দেয় এই সংগঠন।